নেপিয়ারে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচেও দুর্বল ফিল্ডিং-বোলিংয়ের ফায়দা কাজে লাগিয়ে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

সেইসঙ্গে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে ১৬ ওভারে ১৭১। কঠিন হলেও সৌম্য ও নাইমের ব্যাটে সেই লক্ষ্যেই ছুটছিল বাংলাদেশ। তবে এ দুজন আউট হতেই যেন সব শেষ হয়ে যায়, বাংলাদেশকে ২৮ রানে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতে নেয় নিউজিল্যান্ড।

বৃষ্টি আইনে নির্ধারিত ১৬ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় টাইগাররা। দলের পক্ষে সৌম্য সরকার সর্বোচ্চ ৫১ রান, মোহাম্মদ নাইম ৩৮ রান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ২১ রান ও মেহেদী হাসান ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় মাত্র ২৫ বলেই ফিফটি হাঁকান সৌম্য সরকার। এ সময়ে নাইমের সঙ্গে গড়েন ৫২ বলে ৮১ রানের অনবদ্য জুটি। শেষ পর্যন্ত সাউদির বলে লং অনে মিলনের হাতে ধরা পড়লে থামে সৌম্য ঝড়, ২৭ বলে ৫১ করে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর মোহাম্মদ নাইম ৩৫ বলে ৩৮ রান করে ফিলিপ্সের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

এর আগে দলীয় মাত্র ১৩ রানেই ওপেনার লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। পাঁচ বলে মাত্র ৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন, বেনেটের বলে ফিলিপ্সের হাতে ধরা পড়ে। কিউইদের পক্ষে সাউদি, বেনেট ও মিলনে ২টি করে উইকেট লাভ করেন। তবে ব্যাট হাতে ৩১ বলে ৫৮ করার পর বল হাতে ৩ ওভারে ২০ রানের বিনিময়ে নাইমের উইকেট নেয়া গ্লেন ফিলিপ্সই হন ম্যাচ সেরা।

তার আগে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মুস্তাফিজুর রহমানের বদলে তাসকিন আহমেদকে একাদশে নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা। বোলিংয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো এ ম্যাচেও নতুন বল তুলে দেওয়া নাসুম আহমেদের হাতে। শুরুতে নাসুম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন।

ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তাসকিন আহমেদকে ছক্কা মেরে তাকে স্বাগত জানান ফিন অ্যালেন। পরের বলেই অ্যালেনের সহজ ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। জীবন পেয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি অ্যালেন। ঐ ওভারের শেষ বলেই তাসকিনের দ্রুত গতির এক ডেলিভারিতে টাইমিংয়ে গড়বড় করে অ্যালেন (১০ বলে ১৭) ধরা পড়েন মোহাম্মদ নাঈম শেখের হাতে।

এক ওভার পরেই মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সাইফউদ্দিনের বলে ফাইন লেগে খেলতে গিয়ে তাসকিনকে ক্যাচ দেন গাপটিল (১৮ বলে ২১)। তাসকিন এত অসাধারণ এক ক্যাচ নেন যা রীতিমতো অবাক করে দেয় গাপটিলকে। পরের ওভারের প্রথম বলেই শরিফুল ইসলামের বাড়তি বাউন্স সামাল না দিতে পেরে ডেভন কনওয়ে (৯ বলে ১৫) ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে। ফলে ৫৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় স্বাগতিকরা।

দেখেশুনে ব্যাটিং করে সেই চাপ সামাল দেন উইল ইয়ং আর গ্লেন ফিলিপ্স। তবে একের পর এক বাউন্ডারি মেরে দলের রানের চাকা সচল রাখেন গ্লেন ফিলিপ্স। তাদের ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান। ১৭ বলে ১৪ রান করে মেহেদীর বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে যান ইয়ং।

অপর প্রান্তে অব্যহত থাকে গ্লেন ফিলিপ্সের ঝড়। মাঝে বৃষ্টি এসে বাধা দেয়। এরপর হাত খুলে খেলা শুরু করেন গ্লেন ফিলিপ্স। মাত্র ২৭ বলেই তুলে নেন ফিফটি। অপর প্রান্তে মার্ক চ্যাপম্যান মেহেদীর বলে রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান (৮ বলে ৭)।

এরপর ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে এগিয়ে যান ফিলিপ্স। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে রান দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। বাজে ফিল্ডিং আর ফুলটস ও হাফ-ভলি লেংথের বল করে সেই রান বাড়ানোর কাজটা নিউজিল্যান্ডের সহজ করে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথমবার বৃষ্টির বাধার পর ৩৩ বল খেলে ৭১ রান যোগ করে নিউজিল্যান্ড।

১৮ তম ওভারে ফের বৃষ্টি আসে। এরপর বৃষ্টি না থামায় নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের সমাপ্তি টানা হয় ও বাংলাদেশের ইনিংস থেকে চার ওভার কমিয়ে ১৭১ রানের নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে