কঠিন এক সমীকরণ মাথায় নিয়ে দিল্লি ক্যাপিট্যালসের বিপক্ষে খেতে নেমেছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। হারলেই বিদায় কিন্তু জিতলে মিলবে না প্লে অফের নিশ্চয়তা- এ বিষয়টি মাথায় রেখেই খেলতে হয়েছে হায়দরাবাদকে।

সেই মোতাবেক শুধু জেতেনি তারা, রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা দিল্লিকে।

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২১৯ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় হায়দরাবাদ। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ঝড়ো ফিফটি করেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ঋদ্ধিমান সাহা। জবাবে মাত্র ১৩১ রানে অলআউট হয়েছে দিল্লি। কিপটে বোলিংয়ে ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন রশিদ খান।

ঋদ্ধি-ওয়ার্নার ঝড়ের পর রশিদের এমন কিপটেমিতে ৮৮ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে হায়দরাবাদ।

আইপিএলে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জয়। এর ফলে এখনও টিকে রয়েছে রশিদ-ওয়ার্নারদের সেরা চারে খেলার সম্ভাবনা। এখন ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট তাদের। পরের দুই ম্যাচ জেতার পাশাপাশি কিছু সমীকরণ মিললেই প্লে-অফে চলে যাবে হায়দরাবাদ।

২২০ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কখনও মনে হয়নি ম্যাচটি জিততে পারে দিল্লি। শুরু থেকেই তাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে হায়দরাবাদ। প্রথম দুই ওভারেই ফর্মে থাকা শিখর ধাওয়ান (১ বলে ০) ও তিনে নামা মার্কাস স্টয়নিসের (৬ বলে ৫) উইকেট হারায় দিল্লি।

প্রথম পাওয়ার প্লে’র পরের চার ওভারে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন শিমরন হেটমায়ার ও আজিঙ্কা রাহানে। দুজন নিলে ছয় ওভারে দলীয় সংগ্রহ পৌঁছে দেন ৫৪ রানে। কিন্তু সপ্তম ওভারের প্রথম বলেই রশিদের প্রথম শিকারে পরিণত হন ১৩ বলে ১৬ করা হেটমায়ার। একই ওভারে ১৯ বলে ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন রাহানেও।

মাত্র ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে অকূল পাথারে পড়ে যায় দিল্লি। যেখান থেকে আর উঠতে পারেনি তারা। উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান রিশাভ পান্ত ৩৫ বলে ৩৬ রান করে দলীয় সংগ্রহটা কোনোমতে ১০০ পার করান। শেষদিকে তুষার দেশপান্ডের ৯ বলে ২০ রানের ক্যামিও ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধানটাই শুধু কমে।

নির্ধারিত ২০ ওভারের ছয় বল বাকি থাকতেই মাত্র ১৩১ রানে অলআউট হয়ে যায় প্লে-অফের দ্বারপ্রান্তে থাকা দিল্লি। বল হাতে ৪ ওভারে মাত্র ৭ রানে ৩টি উইকেট নেন রশিদ। এছাড়া সন্দ্বীপ শর্মা ও নটরাজন নেন ২টি করে উইকেট। ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা ঋদ্ধিমান।

এর আগে হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর ঋদ্ধিমান সাহা উপহার দেন শতরানের জুটি। যার ওপর দাঁড়িয়ে দুবাইয়ে ২ উইকেটে ২১৯ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় হায়দরাবাদ।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই মারমুখী ছিল হায়দরাবাদ। ওয়ার্নার-ঋদ্ধিমান ৫৮ বলে গড়েন ১০৭ রানের ঝড়ো এক জুটি। দশম ওভারে এসে ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে মারকুটে এই জুটিটি ভাঙেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।

২৫ বলে ফিফটি করা ওয়ার্নার তখন ৬৬ রানে। ৩৪ বলের ইনিংসে হায়দরাবাদ দলপতি ৮টি বাউন্ডারির সঙ্গে হাঁকিয়েছেন ২টি ছক্কা। ওয়ার্নার আউট হওয়ার পরের ওভারেই ২৭ বলে ফিফটি পূরণ করেন ঋদ্ধিমানও।

দ্রুত রান তুলছিলেন ঋদ্ধিমানও, চলে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরির খুব কাছে। শেষ পর্যন্ত ১৫তম ওভারে এসে অ্যানরিচ নর্টজের শিকার হন তিনি। ৪২ বলে ১২ চার আর ২ ছক্কায় উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান করেন ৮৭ রান। দলের রান তখন ২ উইকেটে ১৭০।

পরের দিকে মনিশ পান্ডের ৩১ বলে ৪৪ আর কেন উইলিয়ামসনের ১০ বলে ১১ রানের হার না মানা ইনিংসে ২১৯ রানে থামে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে