মো,মনজু হোসেন, ব্যুরো প্রধান পঞ্চগড় :

পঞ্চগড়ে ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন ছফিলা বেগম (৬০)। যুগ যুগ ধরে ঝুপড়ি ঘরে ছোট্র শিশু নাতি নাতনীদের নিয়ে অতি কষ্টে বসবাস করে আসছেন।

তিনি সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের কমলা পাড়া এলাকার জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।
ছফিলা বেগম বলেন, দুই সন্তানের জন্মের পর প্রায় চল্লিশ বছর আগে স্বামী অন্য মহিলাকে বিয়ে করে সংসার করছে।

অতিকষ্টে ছেলে-মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিছি। মেয়ের স্বামী মারা যাওয়ায়, ওর দুই সন্তানকে নিয়ে আমি (জুয়েল ১২ ও জুঁই ৮) বসবাস করছি।
এলাকার লোকজনের আর্থিক সহায়তায় কয়েকখানা টিন কিনে অন্যের জমিতে ঝুপড়ি ঘর তৈরী করা হয়। ভাঙ্গা বেড়া দিয়ে তীব্র শীতের ঠান্ডা বাতাস আর শীত-বৃষ্টিতে সমানে অর্ধাহারে অনাহারে কষ্ট করতে হচ্ছে ওই ঝুপড়ি ঘরে। ওই জমিটুকুও ছাড়ে দিতে মালিক পক্ষের বিভিন্নরকম অত্যাচার চা বাগান করবেন সেখানে।

সাইদুল ইসলাম নামে এক মাত্র ছেলে আছে।তার পরিবারে ৫ জন সদস্য সেও অন্যের জমিতে কোনমতে ঝুপড়ি ঘর বেধে আছে। নাপিতের কাজ করেই চলছে তার সংসার।

ছফিলা আরোও বলেন, এ বয়সে অন্যের ঘরে কাজ করতাম। এবার ৪০ দিন কর্মসূচির কাজ করছি। পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে যাওয়ায় কাজ করতে পারছিনা। তাই নাতীর (১২) আয়ে চলে সংসার।সে স্থানীয় একটি সেলুনে কাজ শিখে, দিন শেষে যা পায় তা-দিয়ে কোনমতে দিন পার হয়ে যায়। সরকারের দেয়া উপহার ঘরের জন্য ছুটে চলেছেন ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছেন ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি। কিন্তু ভাগ্যে জুটেনি ছফিলার ঘর, পাননা কোন সরকারি সহায়তাও। আয়ের কোন উৎস নেই তাদের। তাই অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটে তাদের। শিশু নাতি-নাতনীকে নিয়ে শীত বর্ষায় শান্তিতে বসবাসের জন্য একটি ঘরের দাবি তাদের।

ইউপি সদস্য হাইদুন নবী জানান, আমি ঘরের তালিকা করিনাই। কে ঘর পাবে, না পাবে সে বিষয়ে চেয়ারম্যান সাহেব ভাল জানেন।

পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন জানান, আশ্রয়ন প্রকল্পে যদি তিনি থাকতে চান তাহলে একটা আবেদন করতে বলেন। আমাদের যেখানে খাসজমি আছে সেখানে ঘর করে দিব। আমরা দেখেছি অনেকে খাসজমিতে যাইতে চায়না এটা একটা সমস্যা। আর ওদের পছন্দের জমিতে খাস জমি নাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে