ইমদাদুল হক, ঝিনাইদহ:
আমন ফসল ঘরে তোলার পর বেশ কিছু সময় ফাঁকা পড়ে থাকে জমি। এ সময়ে কৃষক কর্মহীন হয়ে পড়ে। এ জন্য জীবিকা নির্বাহ করা কষ্টের ব্যাপার দাড়ায় একজন কৃষকের পক্ষে । কারণ ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় তাদের। তাই আমন ঘরে তোলার পরপরই তারা নেমে পড়েন সেই ফাঁকা জমিতে কিছু বাড়তি আয়  করার জন্য।
রবি মৌসুমের বিভিন্ন জাতের ফসল লাগাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। এরমধ্যে অন্যতম একটি ফসল হলো সরিষা।
জমিতে চাষ ছাড়ায় আমন ধান ঘরে তোলার পরে ফাকা জমিতে বারি-১৪ সরিষা ছিটায়ে দিতে হয়।
কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটপাড়া, সুন্দরপুর, আলাইপুর, রঘুনাথপুর,  বারবাজার ষাটবাড়িয়া সহ উপজেলার বিভিন্ন  গ্রামের কৃষকরা এই সরিষা চাষ করে থাকেন। এসব এলাকার বেশির ভাগ কৃষকই এবার তাদের জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা রোপন করেছেন।
সরেজমিনে গিয়েএকাধিক চাষির সঙ্গে আলাপকালে সরিষা আবাদ সম্পর্কে এমনই তথ্য ওঠে আসে।
ষাটবাড়িয়া গ্রামের কৃষক কবিরুল ইসলাম নান্নু, জানান, বর্তমান সময়ে তাদের মতো কৃষকদের অনেক ফসল চাষ করে লোকসান গুণতে হচ্ছে। সেই লোকসান কাটিয়ে উঠতে তাদের সব সময় বাড়তি আয়ের চিন্তা করতে হয়। সেই ভাবনা থেকে এবার তিনি প্রায় ২ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা লাগিয়েছেন, আসা করছেন ফলন ও ভালো পাবেন। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৬ থেকে ৭ মন সরিষা পাবেন বলে তিনি আশা করেন।
 আলাইপুর গ্রামের কৃষক আলিমুল ইসলাম এবার ৩ বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। গড়ে বিঘা প্রতি ফলন হবে প্রায় ৬ মণ হারে। এছাড়া বর্তমানে অন্যান্য ফসলের চেয়ে সরিষার বাজারদর ভাল। এ কারণে সরিষা আবাদ করে তিনি ঠকেন নি। বরং বেশ লাভবান হয়েছেন ।
তাদের মতো কৃষকদের সব সময় বাড়তি আয়ের চিন্তা নিয়ে ফসল ফলাতে হয়। কারণ অনেক ফসল চাষ করে লোকসান গুণতে হয় অনেক সময়। সেই লোকসানের ধকল সামলে নিতে সাথী ফসল নিয়ে ভাবতে হয় তাদের।
এবার শীতের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। এছাড়া সরিষা চাষে খুব একটা ব্যয়ও করতে হয় না। সরিষার জমিতে খুব বেশি চাষ দিতে হয় না। সার, বীজ, চাষ, সেচ, কীটনাশক, শ্রমিক সহ প্রতিবিঘা জমির বিপরীতে বড়জোড় ৬ হাজার টাকার মতো ব্যয় হয়। বর্তমান বাজারে প্রতিমণ সরিষা রকমভেদে ২৩শ থেকে ২৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে গড়ে ৭ মণ হারে সরিষা পেলেও বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী সব খরচ বাদে তাদের ভালই লাভ হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিকদার মোহায়মেন আক্তার  জানান, প্রতিবছর এই সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বারি-১৪ জাতের সরিষাতে লাভ বেশি । এবছর কালীগঞ্জ উপজেলাতে ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে বারি -১৪ জাতের সরিষার চাষ হয়েছে । কৃষি অফিস কতৃক ৬শ জন কৃষককে বীজ ও সার প্রদান করা হয় তত্বমধ্যে ৩৫টি প্রদর্শনী প্লট আছে ৩৫জন কৃষকের ৩৫ বিঘা জমিতে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে