ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের শহিদুল ইসলাম সোম একই গ্রামে অবস্থিত রাধা গোবিন্দ মন্দির সংলগ্ন নিজের জমিতে ফসল আবাদ করার স্বার্থে মন্দিরে যাওয়ার পথ রেখে তারের বেড়া দিয়ে বিপাকে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
ভুক্তভোগী অসহায় কৃষক সোম বলেন,আমি বিগত পাঁচ বছর আগে উক্ত মন্দিরের কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে দুই জনের নিকট হতে ১৬ শতক জমি ক্রয় করে সরকারি বিধি মোতাবেক রেজিস্ট্রি করে ভোগ দখল করে আসছি।মন্দিরের পাশেই বসবাসকারীদের মাধ্যমে বিক্রয় কারীদের টাকা পরিশোধ করি।আমার জমিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হলেও আমি কখনও পুজা করতে নিষেধ করিনি বরং প্রতি বছর পুজার সময় বেড়া খুলে দিয়ে পুজা করার সহযোগিতা করি।আমি চুরি করে জমি কিনি নাই।মন্দির কমিটি জমি কিনতে ব্যর্থ হওয়ায় আমি ন্যায্যমুল্যে জমিটি ক্রয় করি।মন্দিরের তিনশতক জায়গায় পুজা করতে সমস্যা হলে প্রয়োজনে পুজার সময় বেড়া খুলে দিবো।এমনকি ন্যায্য মুল্য পাইলে জমি বিক্রিও করে দিবো।গত বছর করোনার কারনে পুজা হয়নি।আমরা কখনও পুজায় বাধা দেয়নি বরং সহযোগিতা করেছি।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অসহায় কৃষক সোম এর ছেলে সাখাওয়াত হোসেন বিদ্যুৎ বলেন,রাধা গোবিন্দ মন্দিরের গা ঘেষে তারের বেড়া পুজা অর্চনা বাধা গ্রস্থ এই শিরোনামে ফেসবুকে ও নিবন্ধনবিহীন অনলাইন পোর্টালে যে সংবাদ প্রচার হয়েছে তাতে আমাদের অনেক বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন গনমাধ্যম কর্মিরা বাড়িতে আসছে এবং বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে আমাদের পরিবারের মানসম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে।আমার আব্বা কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি নয়,সে একজন সাধারন কৃষক। আমি ফেসবুকে প্রচারকৃত সংবাদের সত্যতা যাচাই পূর্বক তীব্র প্রতিবাদ জানাই।আমার পিতা মন্দিরে যাওয়ার পথ রেখে নিজের জমিতে তারের বেড়া দিয়ে কি অন্যায় করেছে?
এ ব্যাপারে রাধা গোবিন্দ মন্দিরের সভাপতি রনজিত কুমারের সাথে সরেজমিনে কথা বললে তিনি বলেন,উক্ত মন্দিরে পুজা করায় কেউ কখনও বাধা দেয়নি বরং আমাদের গ্রামের কৃষক সোম প্রতিবছর পুজার সময় আমাদের জায়গা দিয়ে সহযোগিতা করেন।তিনি মন্দিরে আসা যাওয়ার জন্য পথও দিয়েছেন। সোম ও তার দুই ছেলে ওরা ভালো মানুষ। উনাদের সাথে আমাদের কোন ঝামেলা নাই।গত বছর করোনার কারনে পুজা করিনি। তারপর প্রথম দিকে উনি উনার জমিতে বেড়া দিলে আমরা ইচ্ছে করে একবার পুজা করিনি।জমি বিক্রয় সম্পর্কে জানতে চাইলে উনি বলেন ৬ শতক জমি যিনি বিক্রি করেছে সে আমাদের শরিক ছিল।আমরা বাধা দিলে সে বিক্রি করতে পারতো না।তাই সে তার মতো বিক্রি করে ভারতে চলে গিয়েছে। তারপরও বলা যায় আমরা তিনশতক নেওয়ার জন্য বলেছিলাম কিন্তু দাম দরে না হওয়ার কারনে সে দেয়নি।এখন আমরা কিছু জমি ক্রয় করার জন্য সবার সাথে আলোচনা করছি এবং বিভিন্ন জাযগায় সহযোগিতা চাচ্ছি।
এ ব্যাপারে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জনাব মোঃ খুরশীদ আলম মিয়া বলেন,আমার ইউনিয়নে কোথাও পুজা অর্চনায় বাধাগ্রস্থ হয়েছে এমন কথা কখনও শুনি নাই।আর এ ব্যাপারে নিউজ করার আগেও আমার নিকট কেউ জিজ্ঞাসাও করে নাই।
এলাকাবাসীর বিভিন্ন লোকজন বলেন উক্ত মন্দিরের তিনশতক জমি কিন্তু যাওয়া আসার কোন পথ নাই।ভুক্তভোগী কৃষক সোম একাই ৩/৪ ফুট পথ দিয়েছে এবং পাঁচ বছর ধরে সোমের জায়গা ব্যবহার করে পুজা করে।সে কখনও পুজায় বাধা দেয় না।বরং বেড়া দেওয়ার আগে মন্দির কমিটির সাথে আলাপ করে বেড়া দেয়।