Dhaka ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ছাই কারখানায় ভয়াবহ  আগুন,আহত ১

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:২২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৮১ Time View

ইমদাদুল হক ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহে ছাই কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ ও মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণে কাজ শুরু করে। প্রায় চার ঘন্টা চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কারখার ভিতরে থেমে থেমে আগুন জ¦লে উঠছে। আগুন লাগা তাজী এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের এ কারখানাটি সদর উপজেলার অনিন্তানগর গ্রামের মধ্যেখানে বসতি এলাকায় অবস্থিত।

এদিকে আগুনে ঝিনাইদহ ফায়ার স্টেশনের মহব্বত আলী নামে এক ফায়ারম্যান আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।

আগুন লাগা কারখানায় পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরির কাজ করে চীনা নাগরিক ও কিছু বাংলাদেশী। পরে এগুলো বস্তাবন্দী করে জাহাজ যোগে চীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ১০ বছর যাবৎ এ কারখানাটি চলছে। মাঝে মাঝেই আগুন লাগে। ব্যাপক ক্ষতিও হয়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে এই কারখানায় অগ্নিকান্ডে এক চীনা নাগরিকসহ গুরুতর দগ্ধ হয় চারজন। সে সময় দু’দিন চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। সে সময় জেলা প্রশাসন পরিবেশের ছাড়পত্র ও ফায়ার লাইসেন্স না থাকায় কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারো সেটি চালু করে কাজ করে আসছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাই জানান, আমরা বারবার এই কারখানা বন্ধের কথা বলেছি, সবাই মিলে বাধা দিয়েছি। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াই তারা কারখানার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

অপর বাসিন্দা ছবিতা খাতুন জানান, এখানে পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরির কাজ করে চীনা নাগরিক ও কিছু বাংলাদেশী। পরে এগুলো বস্তাবন্দী করে জাহাজ যোগে চীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যখন পাটকাঠিতে আগুন দিয়ে ছাই তৈরি করে তখন পুরো এলাকাটা কালো ধোয়াই ছেয়ে যায়। আমরা খুব ভয়ের মধ্যে বাস করি। তিনি আরো জানান, কারখানার ছায় ময়লা বাচ্চাসহ বৃদ্ধদের হাপানীসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয়।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক নাসিমুর রহমান জানান, এ ধরনের কারখানা সাধারণত জনবসতি স্থানে করা উচিৎ না।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার লিমন পারভেজ জানান, আহত ফায়ারম্যানের মুখমন্ডল আগুনের তাপে ফুলে গেছে।

এসময় চীনা নাগরিকদের সঙ্গে মালিকানায় থাকা নাজমুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কিছু না বলে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শামীমুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পর কয়েকটি টিম নির্বাপনে কাজ শুরু করে। দির্ঘ সময় চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তিনি আরো জানান, এই কারখানার ভিতর নতুন আরো একটি গোডাউন তৈরির কাজ কলছিল। সেসময় ওয়েল্ডিং মেশিন থেকে এ আগুনের সুত্রপাত হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখনি বলা যাচ্ছে না। এই কারখানার ফায়ার লাইসেন্স ছিল কি না সেটিও আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এই পাটকাঠির সঙ্গে দাহ্য কোনো রাসায়নিক মেশানো থাকতে পারে। কেননা ছাইতে পানি দিলেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

ঝিনাইদহে ছাই কারখানায় ভয়াবহ  আগুন,আহত ১

Update Time : ০৮:২২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০২১

ইমদাদুল হক ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহে ছাই কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। রোববার দুপুরে এ আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ ও মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিট অগ্নিনির্বাপণে কাজ শুরু করে। প্রায় চার ঘন্টা চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কারখার ভিতরে থেমে থেমে আগুন জ¦লে উঠছে। আগুন লাগা তাজী এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামের এ কারখানাটি সদর উপজেলার অনিন্তানগর গ্রামের মধ্যেখানে বসতি এলাকায় অবস্থিত।

এদিকে আগুনে ঝিনাইদহ ফায়ার স্টেশনের মহব্বত আলী নামে এক ফায়ারম্যান আহত হয়েছে। তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।

আগুন লাগা কারখানায় পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরির কাজ করে চীনা নাগরিক ও কিছু বাংলাদেশী। পরে এগুলো বস্তাবন্দী করে জাহাজ যোগে চীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় ১০ বছর যাবৎ এ কারখানাটি চলছে। মাঝে মাঝেই আগুন লাগে। ব্যাপক ক্ষতিও হয়। ২০১৫ সালের শেষের দিকে এই কারখানায় অগ্নিকান্ডে এক চীনা নাগরিকসহ গুরুতর দগ্ধ হয় চারজন। সে সময় দু’দিন চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। সে সময় জেলা প্রশাসন পরিবেশের ছাড়পত্র ও ফায়ার লাইসেন্স না থাকায় কারখানাটি বন্ধের নির্দেশ দেন। তবে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবারো সেটি চালু করে কাজ করে আসছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হাই জানান, আমরা বারবার এই কারখানা বন্ধের কথা বলেছি, সবাই মিলে বাধা দিয়েছি। কিন্তু প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াই তারা কারখানার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

অপর বাসিন্দা ছবিতা খাতুন জানান, এখানে পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই তৈরির কাজ করে চীনা নাগরিক ও কিছু বাংলাদেশী। পরে এগুলো বস্তাবন্দী করে জাহাজ যোগে চীনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যখন পাটকাঠিতে আগুন দিয়ে ছাই তৈরি করে তখন পুরো এলাকাটা কালো ধোয়াই ছেয়ে যায়। আমরা খুব ভয়ের মধ্যে বাস করি। তিনি আরো জানান, কারখানার ছায় ময়লা বাচ্চাসহ বৃদ্ধদের হাপানীসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয়।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক নাসিমুর রহমান জানান, এ ধরনের কারখানা সাধারণত জনবসতি স্থানে করা উচিৎ না।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার লিমন পারভেজ জানান, আহত ফায়ারম্যানের মুখমন্ডল আগুনের তাপে ফুলে গেছে।

এসময় চীনা নাগরিকদের সঙ্গে মালিকানায় থাকা নাজমুলের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কিছু না বলে ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সটকে পড়েন।

ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শামীমুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পর কয়েকটি টিম নির্বাপনে কাজ শুরু করে। দির্ঘ সময় চেষ্টার পর বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তিনি আরো জানান, এই কারখানার ভিতর নতুন আরো একটি গোডাউন তৈরির কাজ কলছিল। সেসময় ওয়েল্ডিং মেশিন থেকে এ আগুনের সুত্রপাত হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখনি বলা যাচ্ছে না। এই কারখানার ফায়ার লাইসেন্স ছিল কি না সেটিও আমরা ক্ষতিয়ে দেখছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে এই পাটকাঠির সঙ্গে দাহ্য কোনো রাসায়নিক মেশানো থাকতে পারে। কেননা ছাইতে পানি দিলেই আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করছিল।