ইমদাদুল হক ঝিনাইদহ:

ঝিনাইদহ জেলার সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মহারাজপুর মৌজায় অবস্থিত জামতলার দীঘি।
বর্তমানে জামগাছ না থাকলেও নাম জামতলার দীঘি।এই জামতলার দীঘি ধারনা করা হয় আনুমানিক ২৫০/৩০০ বছরের পুরাতন দীঘি।কিভাবে এই দীঘি কাটা হয়েছে তার ইতিহাস কেউ বলতে পারে না।এর আয়তন জলাকারসহ প্রায় ৫০ বিঘার মতো।এর চারিপাশ দেখতে খুব সুন্দর,পানি কালো চকচকে,খেতেও সুসাদু।বাপ দাদাদের মুখে গল্প শুনেছি যে,জীনেরা এই দীঘি একরাতে কেটেছিল।বয়স্ক লোকজনের কাছ থেকে জানা যায়,অত্র এলাকায় একসময় হিন্দুদের বসবাস ছিল। হিন্দুদের মধ্যে যারা প্রভাবশালী ছিল তারা এই দীঘির পানিতে পরিবারসহ গোসল করতো।কেউ যেন এই দীঘি না আসতে পারে সেজন্য কোন রাস্তা ছিল না।রাস্তা ছিল দীঘি হতে একটু দুরে।আমরা দেখেছি হিন্দু রা দশড়া নামক একটি পুজা করতো এবং অনুষ্ঠান হতো,তারা তাদের পরিবারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য এই দীঘির পানিতে ডাব,মুরগী ফেলে দিতো।এই দীঘির আশেপাশে প্রচুর বাঘ,শিয়াল,বিভিন্ন রকমের বন্যপ্রাণী বসবাস করতো তাদের ভয়ে কেউ এর আশপাশে যেতো না।বর্তমান এই দীঘি যাওয়ার জন্য রাস্তা আছে এবং ছোটখাটো পর্যটনকেন্দ্র বলে মনে হয়।সেই হিন্দুদের অনুষ্ঠান দশড়া এখনো হয়,প্রচুর মাছ চাষ হয়।প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে হরিপুর গ্রামের হারান মন্ডল,জাকের মন্ডল,আলম মালিতা,মোরাদ আলী দফাদার,শামছদ্দিন মাষ্টার এই দীঘির মালিক ছিল।পরবর্তীতে তাদের ওয়ারেশ বরাবর মালিকানা চলে আসছে।জানা যায় হরিপুর গ্রামের মন্ত্রী নামে খ্যাত বুদ্ধিজীবি ইয়াকুব বিশ্বাস, হারান মন্ডলের ছেলে দীঘির সমস্তকিছু দেখাশোনা করতো এমনকি ৬২ সালের রেকর্ড করেছিল।এখন আর বাঘও নাই শিয়াল নাই।আছে কিছু সাপের আড্ডা, কিছু গাছপালা।ভালোভাবে সংস্কার করলে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে উঠতে পারে।মজার ব্যাপার হলো এই দীঘির গভীরতা এতো যে কখনও পানি শুকায় না।এখন আর সেই নামকরনের জামগাছ নেই আছে বড় বটগাছ। কিন্তু সেই জামতলার দীঘি নামে এখনো বহমান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে