Dhaka ১০:৪৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল দেশের মূল্যস্ফীতি কমছে: গভর্নর এবার ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের, দাবি দিল্লির আব্দুল হামিদকে পালাতে দেওয়া হয়েছে : সারজিস সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালের স্ত্রীর প্লট-ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ কর্মীদের সুরক্ষায় পার্ডিয়ান লাইফের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলো রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ঢাকায় নতুন প্রতিনিধি কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করল দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার দেশজুড়ে ব্যাপক সাড়া পেল স্যামসাং গ্যালাক্সি এ০৬ জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না : মাহফুজ আলম ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নিহত ৫

জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না : মাহফুজ আলম

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৪৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫
  • ২০ Time View

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তদের (উপদেষ্টা) মধ্যে ছাত্র মাত্র দু’জন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও এস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোনঠাসা করে রেখেছে। আমরা দু’জন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা তুলে ধরে তথ্য উপদেষ্টা লেখেন, ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। ফলে কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র। জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব নয়, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তও সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের পর সহযোগী ভূমিকায় নেই। কিন্তু, ঠিকই প্রশাসন, বিচারবিভাগ, পুলিশে তারা স্টেইক নিয়ে বসে আছেন। এস্টাবলিশমেন্ট দ্বি-দলীয় বৃত্তে ফিরতে এবং ছাত্রদের মাইনাস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

‘প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্র মাত্র দু’জন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও এস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোনঠাসা করে রেখেছে। আমরা দু’জন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।’

তিনি আরও লেখেন, ছাত্রদের কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বিভক্ত, তদুপরি অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই তারা ট্রিটেড হচ্ছেন। এজন্য নাগরিক কমিটিই ছিল দীর্ঘমেয়াদে অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে টেকসই। যাইহোক! এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম দেশব্যাপী ছাত্রদের গুছিয়ে উঠতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা বিভক্ত ও দ্বিধান্বিত।

‘সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র কম্প্রোম্পাইজড। মিডিয়া ও ব্যবসায়ে লীগের আধিপত্য কমেনি। লীগের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে হাত দেওয়া যায়নি। পুরাতন দ্বি-দলীয় বন্দোবস্ত টিকে গেছে। বিচার বিভাগ এখনো দ্বি-দলীয় বৃত্তে বন্দি।’

বাম-ডানের কালচারাল ক্যাচাল জুলাইকে দুর্বল করেছে জানিয়ে তিনি লেখেন, শাহবাগ-শাপলাকে চিরন্তন করে তুলেছে। ডানপন্থিরা ভুল রাজনীতি করেছেন এবং নতুন বাস্তবতায় আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা রেখেছেন। বামপন্থিরা প্রথম থেকেই সরকারের প্রতি স্কেপটিক্যাল এবং অভ্যুত্থানের পক্ষে জোরদার ভূমিকা রাখতে অসফল হয়েছে।

সবচেয়ে ডেডিকেটেড ছাত্রকর্মীরা ক্রেডিট, দলবাজি আর কোরামবাজির খপ্পরে পড়েছেন। আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ হাতেগোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে, কিন্তু ডিমোরালাইজড হয়েছে সমগ্র ছাত্রজনতা। ছাত্রজনতা অভ্যুত্থানের পক্ষের প্রতিষ্ঠান ও নতুন সিভিল সোসাইটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক এলায়েন্সের ক্ষেত্রে ছাত্রজনতার কোনো হিস্যা নেই।

শহীদ-আহতদের ক্ষেত্রে এবং বিচারের প্রশ্নে সরকারসহ সব অংশীজন অসফল মন্তব্য করে তিনি লেখেন, অভ্যুত্থান শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হয়নি। এস্টাবলিশমেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থবাদী চিন্তা ও কর্মের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদের অনভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাব এজন্য দায়ী। সর্বোপরি ছাত্রদের মাইনাস করে (ছাত্রদের ব্যর্থতা অনস্বীকার্য বটে) দ্বি-দলীয় বন্দোবস্তে ফেরার জন্য এস্টাবলিশমেন্ট অপেক্ষমাণ। ছাত্রদের পরিপূর্ণ অসহযোগিতার মুখে ইতোমধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

‘সমাধান? রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দালালদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আঘাত করা। এগুলো করার পূর্বশর্ত হল, ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা। পুরাতন বন্দোবস্তের সৈনিকদের অকার্যকর করে তোলা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা আরও দুই মাস বাড়ল

জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব না : মাহফুজ আলম

Update Time : ১০:৪৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তদের (উপদেষ্টা) মধ্যে ছাত্র মাত্র দু’জন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও এস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোনঠাসা করে রেখেছে। আমরা দু’জন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এসব কথা বলেন।

কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা তুলে ধরে তথ্য উপদেষ্টা লেখেন, ক্ষমতার ভরকেন্দ্র অনেকগুলো। ফলে কাজের দায় সরকারের, কিন্তু কাজ করে ক্ষমতার অন্যান্য ভরকেন্দ্র। জোড়াতালি দিয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তর সম্ভব নয়, নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তও সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের পর সহযোগী ভূমিকায় নেই। কিন্তু, ঠিকই প্রশাসন, বিচারবিভাগ, পুলিশে তারা স্টেইক নিয়ে বসে আছেন। এস্টাবলিশমেন্ট দ্বি-দলীয় বৃত্তে ফিরতে এবং ছাত্রদের মাইনাস করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

‘প্রায় তিন ডজন নিয়োগপ্রাপ্তের মধ্যে ছাত্র মাত্র দু’জন। ছাত্র প্রতিনিধিদেরও এস্টাবলিশমেন্ট রাষ্ট্রপতি অপসারণের ঘটনার পর থেকে কোনঠাসা করে রেখেছে। আমরা দু’জন সর্বোচ্চ ব্যালেন্সিং অ্যাক্ট করতে পারছি, কিন্তু প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে হলে সরকারে সুষম ছাত্র প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।’

তিনি আরও লেখেন, ছাত্রদের কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে যাওয়ায় তারা এখন বিভক্ত, তদুপরি অন্য রাজনৈতিক দলের মতোই তারা ট্রিটেড হচ্ছেন। এজন্য নাগরিক কমিটিই ছিল দীর্ঘমেয়াদে অভ্যুত্থানের ফোর্স হিসেবে টেকসই। যাইহোক! এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্ম দেশব্যাপী ছাত্রদের গুছিয়ে উঠতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতা বিভক্ত ও দ্বিধান্বিত।

‘সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র কম্প্রোম্পাইজড। মিডিয়া ও ব্যবসায়ে লীগের আধিপত্য কমেনি। লীগের রাজনৈতিক অর্থনীতিতে হাত দেওয়া যায়নি। পুরাতন দ্বি-দলীয় বন্দোবস্ত টিকে গেছে। বিচার বিভাগ এখনো দ্বি-দলীয় বৃত্তে বন্দি।’

বাম-ডানের কালচারাল ক্যাচাল জুলাইকে দুর্বল করেছে জানিয়ে তিনি লেখেন, শাহবাগ-শাপলাকে চিরন্তন করে তুলেছে। ডানপন্থিরা ভুল রাজনীতি করেছেন এবং নতুন বাস্তবতায় আবেগের বশে প্রতিক্রিয়াশীল ভূমিকা রেখেছেন। বামপন্থিরা প্রথম থেকেই সরকারের প্রতি স্কেপটিক্যাল এবং অভ্যুত্থানের পক্ষে জোরদার ভূমিকা রাখতে অসফল হয়েছে।

সবচেয়ে ডেডিকেটেড ছাত্রকর্মীরা ক্রেডিট, দলবাজি আর কোরামবাজির খপ্পরে পড়েছেন। আর্থিক অস্বচ্ছতার অভিযোগ হাতেগোনা কয়েকজনের বিরুদ্ধে, কিন্তু ডিমোরালাইজড হয়েছে সমগ্র ছাত্রজনতা। ছাত্রজনতা অভ্যুত্থানের পক্ষের প্রতিষ্ঠান ও নতুন সিভিল সোসাইটি গড়তে ব্যর্থ হয়েছেন। সামরিক-বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনৈতিক অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক এলায়েন্সের ক্ষেত্রে ছাত্রজনতার কোনো হিস্যা নেই।

শহীদ-আহতদের ক্ষেত্রে এবং বিচারের প্রশ্নে সরকারসহ সব অংশীজন অসফল মন্তব্য করে তিনি লেখেন, অভ্যুত্থান শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে বিস্তৃত হয়নি। এস্টাবলিশমেন্ট ও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থবাদী চিন্তা ও কর্মের সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রদের অনভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতার অভাব এজন্য দায়ী। সর্বোপরি ছাত্রদের মাইনাস করে (ছাত্রদের ব্যর্থতা অনস্বীকার্য বটে) দ্বি-দলীয় বন্দোবস্তে ফেরার জন্য এস্টাবলিশমেন্ট অপেক্ষমাণ। ছাত্রদের পরিপূর্ণ অসহযোগিতার মুখে ইতোমধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

‘সমাধান? রাষ্ট্র ও এস্টাবলিশমেন্টে ছাত্রদের ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তার দালালদের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আঘাত করা। এগুলো করার পূর্বশর্ত হল, ছাত্রদের মধ্যে সততা, আদর্শ, নিষ্ঠা ও ঐক্য ফিরিয়ে আনা। পুরাতন বন্দোবস্তের সৈনিকদের অকার্যকর করে তোলা।