Dhaka ১১:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাপান সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৩২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • 37

জাপানে ৪ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

শনিবার (৩১ মে) রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

বার্তায় বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী ফ্লাইটটি শনিবার জাপানের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এর আগে জাপান সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা টোকিওতে প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে একটি ছিল জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে বৈঠক। সফরের তৃতীয় দিনে শুক্রবার ড. ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকে দুই নেতা চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। যার মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

জাপানি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১ দশমিক ০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে একইদিন তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হলো– অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীলতা শক্তিশালীকরণে ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ (৪১৮ মিলিয়ন ডলার), জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েল গেজ ডাবল লেন রেলপথ প্রকল্পের জন্য ঋণ (৬৪১ মিলিয়ন ডলার), এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির জন্য অনুদান (৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার)। 

একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’-এ বক্তৃতা দেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও জাপান দুইটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাপানে তাদের কর্মসংস্থান সহজতর করা। এই চুক্তিগুলো টোকিওর হিরাকাওচো চিয়োদা সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত মানবসম্পদ সেমিনারে স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুষ্ঠানে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ লাখ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান, যা দেশটির ক্রমবর্ধমান শ্রম সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

একইদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ‘ফিউচার অব এশিয়া’-তে মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। নিক্কেই ফোরামের পাশাপাশি ড. ইউনূস মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে সমর্থনের আহ্বান জানান। শুক্রবার সোকা বিশ্ববিদ্যালয় ড. ইউনূসকে সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. ইউনূস চার দিনের সফরে গত ২৮ মে টোকিও যান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

জাপান সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : ০৩:৩২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

জাপানে ৪ দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

শনিবার (৩১ মে) রাতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। 

বার্তায় বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এর আগে প্রধান উপদেষ্টাকে বহনকারী ফ্লাইটটি শনিবার জাপানের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে টোকিওর নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

এর আগে জাপান সফরকালে প্রধান উপদেষ্টা টোকিওতে প্রায় ২০টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে একটি ছিল জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে বৈঠক। সফরের তৃতীয় দিনে শুক্রবার ড. ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। বৈঠকে দুই নেতা চলতি বছরের মধ্যে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। যার মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে।

জাপানি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য ১ দশমিক ০৬৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে একইদিন তিনটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এগুলো হলো– অর্থনৈতিক সংস্কার ও জলবায়ু পরিবর্তনের সহনশীলতা শক্তিশালীকরণে ডেভেলপমেন্ট পলিসি ঋণ (৪১৮ মিলিয়ন ডলার), জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী ডুয়েল গেজ ডাবল লেন রেলপথ প্রকল্পের জন্য ঋণ (৬৪১ মিলিয়ন ডলার), এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন বৃত্তির জন্য অনুদান (৪ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার)। 

একই দিন প্রধান উপদেষ্টা ‘বাংলাদেশ বিজনেস সেমিনার’-এ বক্তৃতা দেন, যেখানে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও জাপান দুইটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করে, যার উদ্দেশ্য বাংলাদেশের মানবসম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাপানে তাদের কর্মসংস্থান সহজতর করা। এই চুক্তিগুলো টোকিওর হিরাকাওচো চিয়োদা সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত মানবসম্পদ সেমিনারে স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অনুষ্ঠানে জাপানি কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীরা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে অন্তত ১ লাখ কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান, যা দেশটির ক্রমবর্ধমান শ্রম সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

একইদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৩০তম নিক্কেই ফোরাম: ‘ফিউচার অব এশিয়া’-তে মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন। নিক্কেই ফোরামের পাশাপাশি ড. ইউনূস মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশকে আসিয়ানের সদস্যপদ পেতে সমর্থনের আহ্বান জানান। শুক্রবার সোকা বিশ্ববিদ্যালয় ড. ইউনূসকে সামাজিক উদ্ভাবন ও বৈশ্বিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। ২০০৪ সালে নিক্কেই এশিয়া পুরস্কারপ্রাপ্ত ড. ইউনূস চার দিনের সফরে গত ২৮ মে টোকিও যান।