Dhaka ০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়ার ইন্তেকাল

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
  • ৫২ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়া মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

৭৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৯ মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

সোমবার তাঁর মরদেহ দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়। ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সংসদীয় গণতন্ত্র ও আইন অঙ্গনের সরব ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি টানা সাতবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গাইবান্ধা থেকে। বর্তমান একাদশ সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। আগের সংসদেও তিনি ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য এই রাজনীতিকের জীবন থেমে গেলো ৭৬ বছর বয়সে।

প্রায় দুই বছর ধরে তিনি ক্যন্সারে ভুগছিলেন। ২০২১ সালের জুনে ফজলে রাব্বী মিয়ার অগ্ন্যাশয়ে টিউমার অপারেশন হয়। পওে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগস্টে তাকে ভারতেরএকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হাওয়ায় সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় আমেরিকার নিউইয়র্কে। সেখানে মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ৯ মাস ধরে তার চিকিৎসা চলছিল। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্র ও ডেপুটি স্পিকারের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকালে তাঁর মরদেহ নিউইয়র্ক থেকে দেশে আনা হবে। ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও জানাযার পর দেহ নেয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়। সেখানে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবেফজলে রাব্বী মিয়ার দেহ।

মুক্তিযুদ্ধকালে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধার রাজনৈতিক জীবন শুরু আওয়ামী লীগের হাত ধরে। পরবর্তীতে আশির দশকে তিনি নাম লেখান জাতীয় পার্টিতে। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের তিনি জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আবার ফেরেন আওয়ামী লীগে। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়। দশম সংসদের পর চলতি একাদশ সংসদে টানা দ্বিতীয়বার ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৬ সালের ১৫ই এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটায় জন্মগ্রহণ করা ফজলে রাব্বী মিয়া অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। তার বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া ও রাজনীতির শুরু সবই গাইবান্ধায়। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন ১১ নম্বর সেক্টরে। পেশায় আইনজীবী ছিলেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিকের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়ার ইন্তেকাল

Update Time : ১০:১২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

 জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়া মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

৭৬ বছর বয়সী এই রাজনীতিবিদ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৯ মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

সোমবার তাঁর মরদেহ দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছে সংসদ সচিবালয়। ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমীন চৌধুরী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, সংসদীয় গণতন্ত্র ও আইন অঙ্গনের সরব ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া। ১৯৮৬ সাল থেকে তিনি টানা সাতবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন গাইবান্ধা থেকে। বর্তমান একাদশ সংসদের ডেপুটি স্পিকার ছিলেন। আগের সংসদেও তিনি ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। বর্ণাঢ্য এই রাজনীতিকের জীবন থেমে গেলো ৭৬ বছর বয়সে।

প্রায় দুই বছর ধরে তিনি ক্যন্সারে ভুগছিলেন। ২০২১ সালের জুনে ফজলে রাব্বী মিয়ার অগ্ন্যাশয়ে টিউমার অপারেশন হয়। পওে উন্নত চিকিৎসার জন্য আগস্টে তাকে ভারতেরএকটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হাওয়ায় সেখান থেকে তাকে নেয়া হয় আমেরিকার নিউইয়র্কে। সেখানে মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে ৯ মাস ধরে তার চিকিৎসা চলছিল। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক সূত্র ও ডেপুটি স্পিকারের কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, সোমবার সকালে তাঁর মরদেহ নিউইয়র্ক থেকে দেশে আনা হবে। ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও জানাযার পর দেহ নেয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা গাইবান্ধার সাঘাটায়। সেখানে জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবেফজলে রাব্বী মিয়ার দেহ।

মুক্তিযুদ্ধকালে ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধার রাজনৈতিক জীবন শুরু আওয়ামী লীগের হাত ধরে। পরবর্তীতে আশির দশকে তিনি নাম লেখান জাতীয় পার্টিতে। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৬, ১৯৮৮, ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের তিনি জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর আবার ফেরেন আওয়ামী লীগে। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন। এরপর ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন ফজলে রাব্বী মিয়। দশম সংসদের পর চলতি একাদশ সংসদে টানা দ্বিতীয়বার ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৪৬ সালের ১৫ই এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটায় জন্মগ্রহণ করা ফজলে রাব্বী মিয়া অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের মধ্যদিয়ে রাজনীতিতে যুক্ত হন। তার বেড়ে ওঠা, লেখাপড়া ও রাজনীতির শুরু সবই গাইবান্ধায়। মুক্তিযুদ্ধ করেছেন ১১ নম্বর সেক্টরে। পেশায় আইনজীবী ছিলেন।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বর্ষীয়ান রাজনীতিকের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।