Dhaka ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৪৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ ২০২১
  • ২৯০ Time View

মো.আবুল কালাম আজাদ (রাজ কালাম) :

আজ ১৭ মার্চ, বাংলাদেশে আজকের দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শিশু দিবস নিয়ে আমি পরে কথা বলবো, তার আগে আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করবো।

আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। তবে আজকের জন্মদিনটি অন্যান্য বছরের জন্মদিনের থেকে একটু আলাদা। গতবছর ১৭ মার্চ ছিল ১০০তম জন্মবার্ষিকী। এখন চলছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন।

‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙ্গিন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

আজ সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

ছাত্র বয়সেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে যোগ দেন। যার কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।

পশ্চিম পাকিস্তানিরা যখন একের পর এক অন্যায় অবিচার করে আমাদের সাথে প্রতারণা করে সবকিছু আমাদের দেশ থেকে তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছিল তখন আর চুপ করে থেকে সকল অন্যায়, অবিচার মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেই সময় বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন যেভাবেই হোক বাংলার মানুষকে এই পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর জন্মের মাসেই ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ১৮/১৯ মিনিটের এক ঐতিহাসিক ভাষন দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে ভাষণ বাংলার মানুষকে একত্রিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছিলেন, দিয়েছিলেন দিকনির্দেশনা। তিনি সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে তিনি যদি নাও থাকেন তবুও যেন শত্রুর মোকাবিলা করা হয়। তিনি পাকবাহিনীর হাতে বন্দী ছিলেন কিন্তু বাংলার দামাল ছেলেরা,বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার ভাষণকে ধারণ করে, তার নির্দেশনা মেনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই অবিসংবাদিত নেতা ও তার পরিবারের সবাইকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে কিছু কতিপয় খুনি। শুধু তার দুই কন্যা, একজন বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যজন শেখ রেহানা বেঁচে যান সেদিন তারা বিদেশে থাকার জন্য।

জাতি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস উদযাপন করবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

শিশু দিবস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় পালিত হয়। শিশু দিবস পালনকারী প্রথম দেশ তুরস্ক।

তুরস্কের অধিবাসীরা শিশু দিবস প্রথম পালন করেন ২৩শে এপ্রিল, ১৯২০ সালে।

সারা বিশ্বে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালন করা হয় ২০শে নভেম্বর এবং ‘আন্তর্জাতিক শিশু দিবস’ পালিত হয় ১ জুন।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৭ মার্চ পালিত হয় ‘জাতীয় শিশু দিবস’।

১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়।

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দরদ ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়। এদিনে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতে হবে সবার।

শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য গৌরবের। তাঁর এ গৌরবের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশুর মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে উঠুক এটাই জাতীয় শিশু দিবসের মূল প্রতিপাদ্য।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস পালনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তাছাড়া দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

সংবাপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার। পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদে মোনাজাত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনাসভা আয়োজিত হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

জাতীয় শিশু দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী

Update Time : ০৭:৪৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ ২০২১

মো.আবুল কালাম আজাদ (রাজ কালাম) :

আজ ১৭ মার্চ, বাংলাদেশে আজকের দিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। শিশু দিবস নিয়ে আমি পরে কথা বলবো, তার আগে আমি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা করবো।

আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। তবে আজকের জন্মদিনটি অন্যান্য বছরের জন্মদিনের থেকে একটু আলাদা। গতবছর ১৭ মার্চ ছিল ১০০তম জন্মবার্ষিকী। এখন চলছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন।

‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, শিশুর হৃদয় হোক রঙ্গিন’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস সারাদেশে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

আজ সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত এই নেতা ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

ছাত্র বয়সেই তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন এবং ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল আন্দোলনে যোগ দেন। যার কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।

পশ্চিম পাকিস্তানিরা যখন একের পর এক অন্যায় অবিচার করে আমাদের সাথে প্রতারণা করে সবকিছু আমাদের দেশ থেকে তাদের দেশে নিয়ে যাচ্ছিল তখন আর চুপ করে থেকে সকল অন্যায়, অবিচার মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেই সময় বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন যেভাবেই হোক বাংলার মানুষকে এই পরাধীনতা থেকে মুক্ত করতে হবে। ১৯৭১ সালের বঙ্গবন্ধুর জন্মের মাসেই ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ১৮/১৯ মিনিটের এক ঐতিহাসিক ভাষন দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে ভাষণ বাংলার মানুষকে একত্রিত হয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছিলেন, দিয়েছিলেন দিকনির্দেশনা। তিনি সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে তিনি যদি নাও থাকেন তবুও যেন শত্রুর মোকাবিলা করা হয়। তিনি পাকবাহিনীর হাতে বন্দী ছিলেন কিন্তু বাংলার দামাল ছেলেরা,বীর মুক্তিযোদ্ধারা তার ভাষণকে ধারণ করে, তার নির্দেশনা মেনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিল। সেই অবিসংবাদিত নেতা ও তার পরিবারের সবাইকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করে কিছু কতিপয় খুনি। শুধু তার দুই কন্যা, একজন বর্তমান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও অন্যজন শেখ রেহানা বেঁচে যান সেদিন তারা বিদেশে থাকার জন্য।

জাতি যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্ম দিবস উদযাপন করবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে বাংলাদেশি দূতাবাসগুলোতে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

শিশু দিবস পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় পালিত হয়। শিশু দিবস পালনকারী প্রথম দেশ তুরস্ক।

তুরস্কের অধিবাসীরা শিশু দিবস প্রথম পালন করেন ২৩শে এপ্রিল, ১৯২০ সালে।

সারা বিশ্বে ‘বিশ্ব শিশু দিবস’ পালন করা হয় ২০শে নভেম্বর এবং ‘আন্তর্জাতিক শিশু দিবস’ পালিত হয় ১ জুন।

বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৭ মার্চ পালিত হয় ‘জাতীয় শিশু দিবস’।

১৯৯৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়।

শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দরদ ছিল অপরিসীম। তাই তাঁর জন্মদিনকে শিশুদের জন্য উৎসর্গ করে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়। এদিনে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতে হবে সবার।

শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন অসামান্য গৌরবের। তাঁর এ গৌরবের ইতিহাস থেকে প্রতিটি শিশুর মাঝে চারিত্রিক দৃঢ়তার ভিত্তি গড়ে উঠুক এটাই জাতীয় শিশু দিবসের মূল প্রতিপাদ্য।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস পালনে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তাছাড়া দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতারসহ বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা।

সংবাপত্রগুলোতে বিশেষ ক্রোড়পত্র ও নিবন্ধ প্রকাশ করে। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার। পাশাপাশি বিভিন্ন মসজিদে মোনাজাত, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনাসভা আয়োজিত হয়।