জেনেভায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছে বাংলাদেশ। সভাপতির বক্তব্যে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা সংরক্ষণে সাধারণ ও পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের প্রতি প্রতিশ্রুতি পূনর্ব্যক্ত করেন জাতিসংঘ সদরদপ্তরে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান।
বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো জানিয়েছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস।
সম্মেলনটি সদস্যদেশসমূহের সরাসরি এবং ভার্চুয়াল অংশগ্রহণের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। অংশগ্রহণকারীরা নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের কার্যক্রমে যে সকল বিষয় অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে সেগুলোর পাশাপাশি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ ও নিরস্ত্রীকরণের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলায় সকলের সমন্বিত প্রয়াসের উপর জোর দেন।
সভাপতির বক্তব্যে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মো. শামীম আহসান নিরস্ত্রীকরণের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে বহুপাক্ষিক আলোচনাকে পুনর্জীবিত করতে সদস্য দেশের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ঘটনা বৈশ্বিক নিরস্ত্রীকরণ কাঠামোকে সমর্থন ও শক্তিশালী করতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করবে।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই হামলায় নিহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রদূত শামীম আহসান বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে আজ বৈশ্বিক অর্থনীতি যখন তীব্র ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যখন বিরাজ করছে নাজুক পরিস্থিতি, সে সময়েও কিছু দেশ থেকে সামরিক ব্যয় হ্রাসের কোনও আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। বৈশ্বিক এই জরুরি অবস্থায় যাতে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য সামরিক ব্যয় হ্রাস করে উদ্বৃত্ত অর্থ স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিনিয়োগের উপর তিনি জোর দেন।
জাতিসংঘ দপ্তরের মহাপরিচালক ও সম্মেলনের মহাসচিব তাতিয়ানা ভালোভায়া নিরস্ত্রীকরণ ও পারমানবিক অস্ত্রের বিস্তার রোধে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় তার জন্য নতুন বৈশ্বিক আইনি চুক্তির জন্য আপোষ-আলোচনার শুরু করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
জানা যায়, ৬৫ সদস্য বিশিষ্ট এ সম্মেলনটির প্রত্যেক সদস্যই প্রতি প্রায় এগার বছরে একবার সভাপতিত্ব করার সুযোগ পায়।
নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ক সকল আন্তর্জাতিক আপোস-আলোচনার মধ্যে এই সম্মেলনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এটি একমাত্র ফোরাম যেখানে ৯টি পারমানবিক শক্তিধর রাষ্ট্রেরই অংশগ্রহণ রয়েছে।