প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যে স্বপ্ন বুকে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘাতকের বুলেটে জীবন দিয়েছেন, সেই স্বপ্ন পূরণে সাধ্যের সবটুকু উজাড় করে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো।’
আজ শুক্রবার মুজিববর্ষ উপলক্ষে ৫০ হাজার বার কোরআন খতম এবং জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে সমাজসেবা অধিদপ্তরে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ একটা শোক সইতে পারে না। আর আমরা কি সহ্য করে আছি? আমাদের একটাই চিন্তা, তা হচ্ছে এই দেশটা আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে চেয়েছিলেন। কাজেই আমার যতটুকু সাধ্য, সেইটুকু আমরা করে দিয়ে যাব, যেন তার আত্মাটা শান্তি পায় এবং এই রক্ত যেন বৃথা না যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাকে (বঙ্গবন্ধু) যারা হত্যা করেছে, তারা ঘৃণ্য। তাদের বিচার করেছি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সেই শক্তি দিয়েছেন আমাদের। ইনডেমনিটি আইন বাতিল করে দিয়ে তাদেরকে বিচার করতে পেরেছি। এতে আল্লাহর কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া আদায় করি।’
আওয়ামী লীগকে টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রেখে দেশসেবার সুযোগ করে দেওয়ায় দেশের মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের জনগণকে, যারা আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন এবং আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী সংগঠনকে, যারা সব সময় আমার পাশে থেকে আমাকে শক্তি জুগিয়েছে, একটা পরিবারের মতো আমি পেয়েছি।’
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জাতির পিতার আজীবন সংগ্রামের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। ১৫ অগাস্ট তাকে নির্মমভাবে হত্যা করার ঘটনা স্মরণ করার পাশাপাশি নিজের ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটানোর কথাও তিনি মনে করিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তার মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অপরদিকে, সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রান্তে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ উদ্দিন খান খসরু এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. জয়নুল বারীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার চার বছরের মধ্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার পরিবারের ছয় বছরের শিশু থেকে শুরু করে অন্তঃসত্ত্বা নারীও সেদিন ঘাতকের গুলি থেকে রেহাই পায়নি।
এ বছর জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ এবং আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ পালন করছে মুজিববর্ষ হিসেবে। বড় পরিসরে নানা আয়োজনে মুজিববর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা থাকলেও করোনা ভাইরাসের মহামারির কারণে সরকারকে তা সীমিত করে আনতে হয়েছে।