প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতার নীতি ও আদর্শ মেনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করে যাবার আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার যে আদর্শ, নীতি-সে নীতি মেনে সবাইকে চলতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সকলকে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আজ রোববার ফেনী জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের শপথ গ্রহণের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তাঁর সরকার ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কারণে আমরা আইন করে এই জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং ইউনিয়ন পরিষদসহ প্রত্যেকটি স্তর সুবিন্যস্ত করেছি।’
তিনি বলেন, যাতে উন্নয়নের গতি গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছতে পারে। অর্থাৎ স্বাধীনতার সুফল যেন একদম তৃণমূলের মানুষ পেতে পারে, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানকে আমি এটাই বলবো জনগণের কল্যাণে এবং ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করতে হবে। দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। কারণ, আওয়ামী লীগ সেই সংগঠন যেটি জাতির পিতা তাঁর নিজ হাতে গড়ে তুলেছিলেন এবং যে সংগঠনের মাধ্যমে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছিল এই বাঙালি জাতি।’
‘যেকোন অর্জনের পেছনেই একটি শক্তি বা সংগঠনের প্রয়োজন হয়,’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সেই লক্ষ্য নিয়েই জাতির পিতা এই আওয়ামী লীগকে তীলে তীলে গড়ে তুলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সংগঠনের মাধ্যমে দেশের মানুষ জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করে। কাজেই আমরা বিজয়ী জাতি। আর এই বিজয়ী জাতি হিসেবেই সমগ্র বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই। জাতির পিতার আকাঙ্খা পূরণ করতে চাই। সে কথা মাথায় রেখেই সকল নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কাজ করবেন যেন আমাদের দেশটায় উন্নয়নের যে গতিধারা আমরা সৃষ্টি করেছি সেটা যেন অব্যাহত থাকে।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে যেন আর মাথা নিচু করে চলতে না হয়। মাথা উঁচু করেই বিশ্বে যেন বাঙালি জাতি আপন স্থান করে নিতে পারে। তিনি সকলকে ইংরেজী নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মানুষ এই কোভিড-১৯ মহামারী থেকে মুক্তি পায়, সে প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার মজুমদারকে শপথ বাক্য পাঠ করান। এ সময় এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো.তাজুল ইসলাম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খায়রুল বাশার মজুমদার গত ১০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ফেনী জেলা পরিষদের উপনির্বাচনে বিজয়ী হন।
তাঁর সরকারের সময়ে দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ ভাগে নামিয়ে আনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস যদি না হতো তাহলে জাতির পিতার কাঙ্খিত ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে বাংলাদেশ আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতো।
তিনি বলেন, ‘চলমান মুজিববর্ষ উদযাপন এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। কিন্তু, করোনাভাইরাস সবকিছু স্থবির করে দিয়েছে। তারপরেও স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে সীমিত আকারে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করে যাচ্ছি।’
সমগ্র বিশ্বে আজ মহামারী আকারে করোনাভাইরাস দেখা দিয়েছে এবং কেবল বাংলাদেশই নয়, বিশ্ব অর্থনীতিই আজ করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। তারপরেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং তাঁর সরকার দেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’