Dhaka ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:১৬:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫
  • ৮ Time View

চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে রাজধানীর শহিদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী ১২ ও ১৩ মে সিভিল সার্জন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর কিংবা চিকিৎসকদের হুমকির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সহ চিকিৎসার সামগ্রিক পরিবেশকে অনুকূল, নিরাপদ ও জনবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সিভিল সার্জনদের প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।

সিভিল সার্জনদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা সমাজের সবচেয়ে মেধাবী মানুষ। তাই আপনাদের ওপর জনপ্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যখাতের চালিকাশক্তি হিসেবে আপনাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রচেষ্টা ও ত্যাগ সরাসরি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, ছুঁয়ে যায়। তাই, আপনারা হচ্ছেন মানুষের আশার আলো, দুঃসময়ে ভরসার আশ্রয়।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করতে চাই এ অভিযোগগুলো যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। জনগণের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- অনেক সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হন না বা পূর্ণ সময় থাকেন না। অনেক উপজেলা বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পান না। এই অনুপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ও স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

সেবাকে আরও জনমুখী করতে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, পোস্টমর্টেম সেবাকে থানা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া; মহিলাদের পোস্টমর্টেম মহিলা ডাক্তার দিয়ে করানো, ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে মহিলা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করানো, না পাওয়া গেলে মহিলা সেবিকা দিয়ে করিয়ে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে প্রতিস্বাক্ষর করা, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণহীন এবং ভবনকেন্দ্রিক বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করা, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করে মেডিকেল কলেজগুলোর মান উন্নীতকরণ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ৬ মাস শহরে ও ৬ মাস গ্রামে করার ব্যবস্থাকরণ ও গ্রামে থাকাকালীন সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিকরণ, ইত্যাদি।

তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে জনগণ দ্রুত সেবা পাবে ও জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে। তাছাড়া মানহীন চিকিৎসক তৈরির হাত থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এসময় থানা বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে অংশীদার হয়ে মাদক পুনর্বাসন ও কাউন্সেলিং কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সিভিল সার্জনদের আহ্বান জানান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Update Time : ১০:১৬:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

চিকিৎসা সেবার পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে রাজধানীর শহিদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী ১২ ও ১৩ মে সিভিল সার্জন সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর কিংবা চিকিৎসকদের হুমকির মতো দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। সেজন্য সরকার চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সহ চিকিৎসার সামগ্রিক পরিবেশকে অনুকূল, নিরাপদ ও জনবান্ধব করতে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সিভিল সার্জনদের প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে হবে।

সিভিল সার্জনদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা সমাজের সবচেয়ে মেধাবী মানুষ। তাই আপনাদের ওপর জনপ্রত্যাশা সবচেয়ে বেশি। জেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যখাতের চালিকাশক্তি হিসেবে আপনাদের প্রতিটি সিদ্ধান্ত, প্রচেষ্টা ও ত্যাগ সরাসরি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে, ছুঁয়ে যায়। তাই, আপনারা হচ্ছেন মানুষের আশার আলো, দুঃসময়ে ভরসার আশ্রয়।

তিনি বলেন, চিকিৎসকদের প্রতি জনগণের কিছু অভিযোগ রয়েছে। আমি বিশ্বাস করতে চাই এ অভিযোগগুলো যেন মিথ্যা প্রমাণিত হয়। জনগণের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হলো- অনেক সরকারি চিকিৎসক হাসপাতালে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপস্থিত হন না বা পূর্ণ সময় থাকেন না। অনেক উপজেলা বা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসা পান না। এই অনুপস্থিতি স্বাস্থ্যসেবার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ও স্বাস্থ্যখাত সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।

সেবাকে আরও জনমুখী করতে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, পোস্টমর্টেম সেবাকে থানা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া; মহিলাদের পোস্টমর্টেম মহিলা ডাক্তার দিয়ে করানো, ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে মহিলা ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করানো, না পাওয়া গেলে মহিলা সেবিকা দিয়ে করিয়ে পুরুষ ডাক্তার দিয়ে প্রতিস্বাক্ষর করা, শিক্ষক ও শিক্ষা উপকরণহীন এবং ভবনকেন্দ্রিক বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো বন্ধ করা, অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল গঠন করে মেডিকেল কলেজগুলোর মান উন্নীতকরণ, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ৬ মাস শহরে ও ৬ মাস গ্রামে করার ব্যবস্থাকরণ ও গ্রামে থাকাকালীন সম্মানী ভাতা বৃদ্ধিকরণ, ইত্যাদি।

তিনি বলেন, এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করা গেলে জনগণ দ্রুত সেবা পাবে ও জনদুর্ভোগ হ্রাস পাবে। তাছাড়া মানহীন চিকিৎসক তৈরির হাত থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পাবে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান ও মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এসময় থানা বা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে অংশীদার হয়ে মাদক পুনর্বাসন ও কাউন্সেলিং কার্যক্রমকে ফলপ্রসূ করতে সিভিল সার্জনদের আহ্বান জানান।