পবিত্র ঈদুল আজহার চতুর্থ দিনেও বন্ধ রয়েছে রাজধানীর বেশিরভাগ গরুর মাংসের দোকান। হাতে গোনা দুই একটি দোকান খোলা থাকলেও গরুর মাংস বিক্রি নেই বললেই চলে। বিক্রি না থাকায় অনেক দোকানি গরু জবাই করছেন না। তবে গরুর মাংসের চাহিদা কম থাকলেও যেসব দোকান খোলা আছে সেসব দোকানে অপেক্ষাকৃত বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর বাড্ডা ও বাসাবো এলাকা ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ঈদ পরবর্তী বাজারে প্রায় ৯০ ভাগ গরুর মাংসের দোকান বন্ধ রয়েছে। দুই একটি দোকান খোলা থাকলেও নেই পর্যাপ্ত বেচা বিক্রি। ফলে একদিকে যেমন অলস সময় কাটছে দোকানিদের তেমনি যাদের প্রয়োজন আছে তাদের ঘুরতে হচ্ছে লম্বা পথ। তবে গরুর মাংসের চাহিদা কম থাকলেও দেশি মুরগির চাহিদা বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারের কক মুরগি ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি ধরনের কক মুরগি কিনতে দাম গুনতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি। মান ও আকারভেদে রোস্টের জন্য সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে। ব্রয়লার মুরগি আকারভেদে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আকারভেদে দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৭৫০ টাকা কেজিতে। এদিকে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়।
ইয়াসিন আলী নামের এক গরুর মাংস বিক্রেতা বলেন, ঈদুল আজহাতে অনেকেই গরু কোরবানি দেন ফলে এই সময়ে অন্তত দুই সপ্তাহ কেউ খুব প্রয়োজন ছাড়া মাংস কেনেন না। যারা কোরবানি দেন না, সাধারণত এমন পরিবারগুলো থেকেই মাংস কিনতে আসেন ক্রেতারা। তবে এখন ক্রেতা নেই বললেই চলে।
মিজান নামের আরেক মাংস বিক্রেতা বলেন, সকাল থেকে মাত্র ৩ কেজি মাংস বিক্রি করছি। সবার ঘরে ঘরে মাংস, কে এখন কিনে খাবে? যারা গরিব তারাও নানা জায়গা থেকে মাংস পেয়েছে। বেচাবিক্রি একদমই নাই। ফলে বাধ্য হয়েই একটু বেশি দামে মাংস বিক্রি করতে হচ্ছে।
মতিউর রহমান নামের এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, সকাল থেকে সবাই দেশি মুরগি চাইতেছে। ব্রয়লারের চাহিদা নেই বললেই চলে। গরুর মাংসের চাহিদা তো নেই। ব্রয়লারও খাচ্ছে না মানুষ এখন।
ফরিদ উদ্দিন নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদে এবার কোরবানি দিতে পারিনি। ঈদের আয়োজনের জন্য মাংস যা কিনেছিলাম তা শেষ। এখন মেয়ে এবং জামাই এসেছে। তাদের জন্য মাংস কিনতে এসেছি। আমার সিদ্ধান্ত নিতে ভুল হয়েছে। ঈদের আগেই মাংস কিনে ফ্রিজে রাখা উচিত ছিল। চারপাশে গরুর মাংসের দোকানের বেশিরভাগই বন্ধ। মুরগির দাম তুলনামূলক একটু বেশি। মুরগির চাহিদাও বেশি মনে হচ্ছে।
ইব্রাহিম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, জরুরি একটু মাংস লাগবে তাই বাজারে আসলাম। বেশিরভাগ দোকানই বন্ধ। দেখি ভালো মাংস পেলে কিনব। মুরগি আছে প্রচুর তবে দামটা একটু বেশি মনে হচ্ছে। একটি দোকান খোলা পেলাম সেখানে গরুর মাংস ৯০০ টাকা কেজি চাইলো। এমনিতেই চাহিদা নেই সেখানে এত দামে কিভাবে সম্ভব।