Dhaka ১২:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জুন ২০২৫, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাঙ্গা প্রবাসী আয়, সর্বোচ্চ অবদান রাখছে সৌদি আরব

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৫৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫
  • 28

অর্থনীতিতে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা, বিশেষ করে কোরবানির ঈদের প্রাক্কালে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশিরা।

যদিও ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়কালে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষস্থান বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে। কখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনো যুক্তরাষ্ট্র, আবার কখনো যুক্তরাজ্য হয়ে উঠেছে রেমিট্যান্স প্রেরণে শীর্ষ দেশ। তবে গত দুই মাস এই প্রবাহে সৌদি আরবের অবস্থান আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে মোট ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার; যা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার বা ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এছাড়া ৩৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। চতুর্থ অবস্থানে মালয়েশিয়া ৩৪ কোটি ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। পর্যায়ক্রমে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় অন্য দেশগুলো হলো ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

দেশের বাজারে ডলার এখন ১২০ টাকা

সংশ্লিষ্টদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স মূলত দুটি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে—ব্যাংক এবং এক্সচেঞ্জ হাউস। এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে সংগৃহীত রেমিট্যান্স স্থানীয় ব্যাংকগুলো কিনে নেয় এবং সুবিধাভোগীদের কাছে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিট্যান্সের বড় অংশই আসে এই এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে।

যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউস নিবন্ধিত, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সবচেয়ে এগিয়ে। ফলে প্রবাসীরা পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই টাকা পাঠান না কেন, অনেক সময় সেই অর্থ ক্লিয়ার হয় ওই নিবন্ধিত দেশ থেকেই। উদাহরণস্বরূপ, কেউ সৌদি আরব থেকে অর্থ পাঠালেও, যদি তা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে পাঠানো হয়, তাহলে তা রেকর্ড হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্স হিসেবে।

এই প্রক্রিয়ার কারণে বেশ কিছু বছর ধরে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে প্রকৃত উৎস নয়, বরং এক্সচেঞ্জ হাউস নিবন্ধনের দেশগুলোর নাম উঠে আসছে। কারণ, বেশির ভাগ ব্যাংক ক্লিয়ারিং-এর দেশকেই রেমিট্যান্সের উৎস দেশ হিসেবে দেখিয়ে রিপোর্ট করত, প্রকৃত উৎস নয়। এই ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ হিসেবে অনেক সময় প্রকৃত দেশ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম প্রকাশ পেয়েছে।

এ পরিস্থিতির পরিবর্তনে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে প্রতিটি ব্যাংক প্রকৃত উৎস দেশ অনুযায়ী রেমিট্যান্স হিসাব করে রিপোর্ট প্রদান করে। এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় এখন রেমিট্যান্সের সঠিক উৎস দেশ চিহ্নিত হচ্ছে এবং তথ্য উপস্থাপনেও স্বচ্ছতা ফিরেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থ এসেছে সৌদি আরব থেকে—৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার, যা মাসিক মোট রেমিট্যান্সের ১৭.৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে—৩৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১২.০২ শতাংশ; এতে দেশটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। চতুর্থ স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যেখান থেকে এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার। পঞ্চম স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া, যেখান থেকে এসেছে ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার। এছাড়া শীর্ষ ১০ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশের তালিকায় এরপর রয়েছে কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর এবং কাতার।

বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা, ‘ভয় নেই’ বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এদিকে দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড গড়েছে ২০২৪ সালের মার্চ মাস। ওই মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার, যা এক মাসে রেমিট্যান্স আহরণের সর্বোচ্চ পরিমাণ। মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রেরণে শীর্ষস্থান অধিকার করে যুক্তরাষ্ট্র, যেখান থেকে এসেছে ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, যেখান থেকে এসেছে ৫০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে—৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এছাড়া চতুর্থ স্থানে ছিল যুক্তরাজ্য এবং পঞ্চম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া। আগের অর্থবছরের সামগ্রিক হিসাবেও একই রকম প্রবণতা দেখা গেছে। সেসময় রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় যুক্তরাজ্য, চতুর্থ সৌদি আরব এবং পঞ্চম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার এবং মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১৩৭ কোটি মার্কিন ডলার।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

চাঙ্গা প্রবাসী আয়, সর্বোচ্চ অবদান রাখছে সৌদি আরব

Update Time : ১২:৫৫:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫

অর্থনীতিতে স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারা, বিশেষ করে কোরবানির ঈদের প্রাক্কালে। সদ্য সমাপ্ত মে মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২৯৭ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩১ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এই উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশিরা।

যদিও ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়কালে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষস্থান বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে। কখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত, কখনো যুক্তরাষ্ট্র, আবার কখনো যুক্তরাজ্য হয়ে উঠেছে রেমিট্যান্স প্রেরণে শীর্ষ দেশ। তবে গত দুই মাস এই প্রবাহে সৌদি আরবের অবস্থান আবারও শীর্ষে উঠে এসেছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে মোট ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্সের মধ্যে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার; যা মোট রেমিট্যান্সের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার বা ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এছাড়া ৩৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাজ্য। চতুর্থ অবস্থানে মালয়েশিয়া ৩৪ কোটি ডলার এবং পঞ্চম অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। পর্যায়ক্রমে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় অন্য দেশগুলো হলো ওমান, ইতালি, কুয়েত, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

দেশের বাজারে ডলার এখন ১২০ টাকা

সংশ্লিষ্টদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স মূলত দুটি আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে আসে—ব্যাংক এবং এক্সচেঞ্জ হাউস। এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে সংগৃহীত রেমিট্যান্স স্থানীয় ব্যাংকগুলো কিনে নেয় এবং সুবিধাভোগীদের কাছে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিট্যান্সের বড় অংশই আসে এই এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে।

যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউস নিবন্ধিত, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সবচেয়ে এগিয়ে। ফলে প্রবাসীরা পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই টাকা পাঠান না কেন, অনেক সময় সেই অর্থ ক্লিয়ার হয় ওই নিবন্ধিত দেশ থেকেই। উদাহরণস্বরূপ, কেউ সৌদি আরব থেকে অর্থ পাঠালেও, যদি তা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে পাঠানো হয়, তাহলে তা রেকর্ড হয় যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রেরিত রেমিট্যান্স হিসেবে।

এই প্রক্রিয়ার কারণে বেশ কিছু বছর ধরে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষ দেশ হিসেবে প্রকৃত উৎস নয়, বরং এক্সচেঞ্জ হাউস নিবন্ধনের দেশগুলোর নাম উঠে আসছে। কারণ, বেশির ভাগ ব্যাংক ক্লিয়ারিং-এর দেশকেই রেমিট্যান্সের উৎস দেশ হিসেবে দেখিয়ে রিপোর্ট করত, প্রকৃত উৎস নয়। এই ভুল রিপোর্টিংয়ের কারণে প্রায় তিন বছর ধরে শীর্ষ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশ হিসেবে অনেক সময় প্রকৃত দেশ নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্র বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাম প্রকাশ পেয়েছে।

এ পরিস্থিতির পরিবর্তনে বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে প্রতিটি ব্যাংক প্রকৃত উৎস দেশ অনুযায়ী রেমিট্যান্স হিসাব করে রিপোর্ট প্রদান করে। এই নির্দেশনা কার্যকর হওয়ায় এখন রেমিট্যান্সের সঠিক উৎস দেশ চিহ্নিত হচ্ছে এবং তথ্য উপস্থাপনেও স্বচ্ছতা ফিরেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ২৭৫ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থ এসেছে সৌদি আরব থেকে—৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার, যা মাসিক মোট রেমিট্যান্সের ১৭.৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে—৩৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ১২.০২ শতাংশ; এতে দেশটি তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। চতুর্থ স্থানে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যেখান থেকে এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার। পঞ্চম স্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া, যেখান থেকে এসেছে ২১ কোটি ৯ লাখ ডলার। এছাড়া শীর্ষ ১০ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী দেশের তালিকায় এরপর রয়েছে কুয়েত, ইতালি, ওমান, সিঙ্গাপুর এবং কাতার।

বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা, ‘ভয় নেই’ বলছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

এদিকে দেশের ইতিহাসে একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড গড়েছে ২০২৪ সালের মার্চ মাস। ওই মাসে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৩৩০ কোটি মার্কিন ডলার, যা এক মাসে রেমিট্যান্স আহরণের সর্বোচ্চ পরিমাণ। মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রেরণে শীর্ষস্থান অধিকার করে যুক্তরাষ্ট্র, যেখান থেকে এসেছে ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, যেখান থেকে এসেছে ৫০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। তৃতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সৌদি আরব থেকে—৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এছাড়া চতুর্থ স্থানে ছিল যুক্তরাজ্য এবং পঞ্চম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া। আগের অর্থবছরের সামগ্রিক হিসাবেও একই রকম প্রবণতা দেখা গেছে। সেসময় রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত, দ্বিতীয় যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় যুক্তরাজ্য, চতুর্থ সৌদি আরব এবং পঞ্চম স্থানে ছিল মালয়েশিয়া।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি ডলার এবং মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৮ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। আগের অর্থবছরে একই সময় রেমিট্যান্স এসেছিল দুই হাজার ১৩৭ কোটি মার্কিন ডলার।