চাঁদের বুকে চীনের রকেট অবতরণের পর সেটি সেখান থেকে প্রথম রঙিন ছবি পাঠিয়েছে। ল্যান্ডারটি যে প্যানোরামিক ছবি পাঠিয়েছে তাতে মহাকাশযানটির পা দেখা যাচ্ছে। সেই সাথে দেখা যাচ্ছে আদিগন্ত বিস্তৃত চাঁদের মাটি।
এই ল্যান্ডারটি গত মঙ্গলবার চাঁদে অবতরণ করে। এর পরপরই পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য সেটি চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে পাথর আর মাটির নমুনা সংগ্রহ শুরু করে।
এসব নমুনা প্রথমে পাঠানো হবে চাঁদকে প্রদক্ষিণকারী একটি মহাকাশযানে। এই যানটি সেগুলো নিয়ে পৃথিবীতে ফেরত আসবে। বৃহস্পতিবার থেকে এই কাজ শুরু হবে। খবর বিবিসির
চীন গত সাত বছরে তিনবার চাঁদে চ্যাঙই-৫ মহাকাশযান পাঠিয়েছে। এর আগে চ্যাঙই-৩ এবং চ্যাঙই-৪ চাঁদে স্ট্যাটিক ল্যান্ডার এবং ছোট রোভার নামিয়েছে। তবে এই সর্বশেষ অভিযানটি আগের দুটোর তুলনায় অনেক বেশি জটিল।
এক সপ্তাহের কিছু আগে ৮.২ টন ওজনের চীনা রকেটটি পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। এরপর মাল্টি মডিউল প্রোবটি চাঁদের কক্ষ পথে ঘুরতে থাকে। এরপর সেটা দু’ভাগে ভাগ হয়। একটি ভাগে ছিল একটি ল্যান্ডার এবং আরেকটি অ্যাসেন্ডার রকেট। সেটি চাঁদের অবতরণ করে।
অন্য ভাগটি ব্যবহার করা হবে পৃথিবীতে ফিরে আসার কাজে। ল্যান্ডারটি এখন চামচের মতো একটি যন্ত্র এবং ড্রিল ব্যবহার করে চাঁদের ভূপৃষ্ঠের নমুনা সংগ্রহ করছে। নমুনা সংগ্রহের কাজ শেষ হলে অ্যাসেন্ডারের মাধ্যমে সেটি চাঁদ প্রদক্ষিণকারী রকেটে নিয়ে যাওয়া হবে। শুরু হবে পৃথিবীতে ফিরে আসার মিশন।
চাঁদের পৃষ্ঠ থেকে শেষবারের মতো পাথর ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ৪৪ বছর আগে। আমেরিকান অ্যাপোলো মিশনের নভোচারীরা এবং সোভিয়েত আমলের রবোটিক ল্যান্ডার প্রায় ৪০০ কেজি নমুনা নিয়ে এসেছিলেন। এসব নমুনা ছিল খুবই প্রাচীন – প্রায় ৩০০ কোটি বছর আগের। কিন্তু চ্যাঙই-৫ যেসব নমুনা আনবে সেগুলো একেবারেই ভিন্ন।
চীনা মিশন চাঁদের যে জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে তার নাম মন্স রুকমার। এই জায়গার নমুনা ১২০০ থেকে ১৩০০ কোটি বছর পুরনো। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, চ্যাঙই-৫ মিশনে সংগ্রহ করা দুই কিলোগ্রাম নমুনা চাঁদের সৃষ্টি, গঠন এবং সেখানে আগ্নেয়িগিরির সক্রিয়তা সম্পর্কে জানতে সাহায্য করবে। একটি ক্যাপসুলে করে এই নমুনা পৃথিবীতে ফেরত পাঠানো হবে, যেটি অবতরণ করবে উত্তর চীনের মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে।