দীর্ঘদিন ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের বেহাল দশা। এর মধ্যে করোনা সংকটে বাংলা চলচ্চিত্র আইসিইউতে থাকা রোগীর মতো অবস্থায় রয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে রক্ষা করতে এবং এই শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচাতে বুধবার (১৫ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। তিনি বলেন, আপনারা সকলেই জানেন চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা করোনার কারণে আরো ভয়াবহ। এ অবস্থায়  সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প। চলচ্চিত্র নির্মাণ এবং প্রদর্শন সংক্রান্ত সকল কর্মকাণ্ড গত প্রায় ৫ মাস ধরে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। এর ফলে এই শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দিন পার করছে। তাদের জীবন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ অবস্থা চলচ্চিত্রের চলতে থাকলে এর সাথে জড়িত মানুষেরা টিকতে পারবে না, তাদের সাথে আমাদের ঐতিহ্যবাহী চলচ্চিত্র শিল্পও ধ্বংস হয়ে যাবে!

তিনি আরো বলেন, চলচ্চিত্রের এই দুর্দিনের সময়ে সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই পারেন, জাতির পিতার হাতে গড়া এই চলচ্চিত্র শিল্প এবং এর সাথে জড়িত হাজার হাজার পেশাজীবি এবং তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে। তাই আজ আমরা সাংবাদিক বন্ধুদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫০০ কোটি টাকার প্রণোদনাসহ সুনির্দিষ্টভাবে ৪টি প্রস্তাব পেশ করছি।’
১৮ সংগঠনের ৪টি প্রস্তাব হলো :
প্রস্তাব ১
দেশের অন্যান্য শিল্প এবং শিল্পের সাথে জড়িত কর্মীদের রক্ষার জন্য যেভাবে সরকারি প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে সেভাবে চলচ্চিত্র শিল্প এবং এই শিল্পের সাথে জড়িত কর্মীদের রক্ষা করার জন্য সরকারি প্রণাদোনা দেয়া হোক।
প্রস্তাব ২
চলচ্চিত্র শিল্পকে এই বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে রক্ষা করতে সরকারি বাজেট থেকে কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হোক। এই ৫০০ কোটি টাকা থেকে ১০০ কোটি বিএফডিসির মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য দেয়া হোক। ১০০ কোটি টাকা দেয়া হোক যারা নিয়মিত চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সেসব প্রযােজকদেরকে। বাকি ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হোক নতুন প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ ও পুরানো প্রেক্ষাগৃহগুলি সংস্কার করার জন্য।
প্রস্তাব ৩
প্রধানমন্ত্রী গভীরভাবে এই চলচ্চিত্র শিল্পকে জানেন, বোঝেন, ভালবাসেন। চলচ্চিত্রকে নিয়ে তার করা পরিকল্পনাকে আন্তরিকতা ও দক্ষতার সাথে যিনি বাস্তবায়ন করতে পারবেন এমন কাউকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হোক।
প্রস্তাব ৪
স্বাস্থ্যবিধি মেনে অচিরেই সিনেমা হল খোলার অনুমতি প্রদান করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। তাহলে মুক্তির অপেক্ষায় থাকা প্রযোজকরা নতুন করে চলচ্চিত্র নির্মাণে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে