Dhaka ০১:৪৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ ফিলিস্তিনির

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • 22

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরফলে এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।

রোববার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

এতে বলা হয়, রোববার (৬ জুলাই) দিনব্যাপী ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং একাধিক পরিবারের সদস্য রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন।

এরমধ্যে গাজার শেখ রাদওয়ান ও আল-নাসর এলাকায় দুইটি বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। সেখানে বাস্তুচ্যুত বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত হন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অধিকাংশ মানুষ তখন ঘুমাচ্ছিলেন, যাদের অনেকেই ছিলেন শিশু ও নারী। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকেই আটকা পড়ে আছেন।

আল-আউদা হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াদি গাজার দক্ষিণে এক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী গোলাবর্ষণ করলে ৪ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হন। এ ছাড়া গাজা শহর ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বেসামরিক মানুষদের ওপর হামলায় ৬ জন নিহত হন।

এদিকে উত্তর গাজার আল-সাফতাওয়ি এলাকায় এক বেসামরিক গাড়িতে ড্রোন হামলায় তিন ভাই নিহত ও শেখ রাদওয়ানে এক আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবুতে ড্রোন হামলায় আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন। 

এর বাইরে গাজার পশ্চিমের শাতি শরণার্থী শিবিরে, একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর বিমান হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

মরদেহগুলো খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় ছিল উল্লেখ করে আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মরদেহগুলো হাসপাতালে খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় এসেছে এবং আহতদের সংখ্যাও ছিল অনেক। 

এ ছাড়া খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় দুটি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও এক গর্ভবতী নারী রয়েছেন। পাশাপাশি আল-আলবানী মসজিদের কাছে অপর এক ড্রোন হামলায় ৪টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তাদের তিনজনই শিশু। 

এর বাইরে, গাজার আল-তুফাহ ও আল-দারাজ এলাকায় আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় একাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক পরিবারের ৮ সদস্য ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন ও অন্য একটি হামলায় প্রাণ গেছে আরও ৩ জনের।

এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল আরও ৮১ ফিলিস্তিনির

Update Time : ০৩:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চলছেই। সবশেষ ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে আরও ৮১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এরফলে এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।

রোববার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

এতে বলা হয়, রোববার (৬ জুলাই) দিনব্যাপী ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ৮১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী, শিশু এবং একাধিক পরিবারের সদস্য রয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্র ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন।

এরমধ্যে গাজার শেখ রাদওয়ান ও আল-নাসর এলাকায় দুইটি বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। সেখানে বাস্তুচ্যুত বহু পরিবার আশ্রয় নিয়েছিল। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত হন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অধিকাংশ মানুষ তখন ঘুমাচ্ছিলেন, যাদের অনেকেই ছিলেন শিশু ও নারী। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অনেকেই আটকা পড়ে আছেন।

আল-আউদা হাসপাতালের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ওয়াদি গাজার দক্ষিণে এক ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি বাহিনী গোলাবর্ষণ করলে ৪ জন নিহত এবং ২৫ জন আহত হন। এ ছাড়া গাজা শহর ও মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বেসামরিক মানুষদের ওপর হামলায় ৬ জন নিহত হন।

এদিকে উত্তর গাজার আল-সাফতাওয়ি এলাকায় এক বেসামরিক গাড়িতে ড্রোন হামলায় তিন ভাই নিহত ও শেখ রাদওয়ানে এক আশ্রয়কেন্দ্রের তাঁবুতে ড্রোন হামলায় আরও ৩ জন নিহত হয়েছেন। 

এর বাইরে গাজার পশ্চিমের শাতি শরণার্থী শিবিরে, একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া মানুষের ওপর বিমান হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

মরদেহগুলো খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় ছিল উল্লেখ করে আল-শিফা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মরদেহগুলো হাসপাতালে খণ্ডবিখণ্ড অবস্থায় এসেছে এবং আহতদের সংখ্যাও ছিল অনেক। 

এ ছাড়া খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় দুটি অস্থায়ী ত্রাণশিবিরে বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু ও এক গর্ভবতী নারী রয়েছেন। পাশাপাশি আল-আলবানী মসজিদের কাছে অপর এক ড্রোন হামলায় ৪টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তাদের তিনজনই শিশু। 

এর বাইরে, গাজার আল-তুফাহ ও আল-দারাজ এলাকায় আবাসিক ভবনে বোমা হামলায় একাধিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে এক পরিবারের ৮ সদস্য ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন ও অন্য একটি হামলায় প্রাণ গেছে আরও ৩ জনের।

এর আগে, গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে আগ্রাসনের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার মুখোমুখিও হয়েছে ইসরায়েল। তবুও থেমে নেই তাদের বর্বরতা। এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় বইছে।