লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ফের বেড়েছে করোনার তাণ্ডব। টানা তিনদিন নিম্নমুখী সংক্রমণ ও প্রাণহানির পর আবারও তা ঊর্ধ্বমুখী রূপ নিয়েছে। গত একদিনে সেখানে সহস্রাধিক মানুষের প্রাণ কেড়েছে ভাইরাসটি। তবে আক্রান্ত বাড়লেও এদিন অর্ধলক্ষের বেশি রোগী সুস্থতা লাভ করেছে। তবে পরিস্থিতি অপরিবর্তিত এ অঞ্চলের পেরু, কলম্বিয়া, চিলি ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোতে।
ব্রাজিলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যমতে, দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ হাজার ৭৫৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৩ লাখ ৮৪ হাজার ২৯৯ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৯০ জন। এতে করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৩৩ হাজার ২০৭ জনে ঠেকেছে।
অপরদিকে সুস্থতা লাভ করেছেন আরও ৫৭ হাজার ৯৪৪ জন। এতে করে বেঁচে ফেরার সংখ্যা বেড়ে ৩৬ লাখ ৭১ হাজার ১২৮ জনে পৌঁছেছে।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশটির সাও পাওলো শহরে ৬১ বছর বয়সী ইতালি ফেরত এক ব্রাজিলিয়ানের শরীরে ভাইরাসটি প্রথম শনাক্ত হয়। এরপর থেকেই অবস্থা ক্রমেই সংকটাপন্ন হতে থাকে। যেখানে আক্রান্ত ও প্রাণহানির তালিকায় অনেক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।
তবে শুধু ব্রাজিলই নয়, করোনার ভয়াবহতা ছড়িয়ে পড়েছে লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোতেও। যেখানে পূর্বের তুলনায় ভাইরাসটির প্রকোপ অনেকটা বেড়েছে। এমন অবস্থায় করোনাকে বাগে আনতে দেশগুলোর সরকার মানুষকে ঘরে রাখার চেষ্টা করছে। তবে অর্থনীতির চাকা সচল থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ফলে সংকটাবস্থার মধ্য দিয়ে ব্রাজিল, পেরু, চিলি, ইকুয়েডর ও আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলোতে অনেক কিছুই চালু রয়েছে।
ব্রাজিলে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোকে। অপরদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দ্বিতীয় দফায় করোনা আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর ব্রাজিল ভাইরাসটির এখন প্রধানকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। একইসঙ্গে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর মধ্য পেরু, কলম্বিয়ায়, আর্জেন্টিনা ও চিলিতেও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে ভাইরাসটি।
এর মধ্যে পেরুতে আক্রান্ত ৭ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ হাজার ৯২৭ জন।
কলম্বিয়ায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ লাখ সাড়ে ২৮ হাজারের অধিক মানুষের শরীরে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ হাজার ২৮৮ জনের।
আর্জেন্টিনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। প্রাণ হারিয়েছেন ১১ হাজার ৮৫২ জন ভুক্তভোগী।
এছাড়া চিলিতে করোনা হানা দিয়েছে ৪ লাখ প্রায় ৩৮ হাজার মানুষের দেহে। এর মধ্যে ১২ হাজার ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।