বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিক্ষোভ দমনে পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে জাতিসংঘের প্রাথমিক তথ্যানুসন্ধান দল।
বুধবার মধ্যরাতে ঢাকায় এসে পৌঁছায় জাতিসংঘের হাইকমিশনার দপ্তরের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রোরি মুঙ্গোভেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের দলটি।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, তথ্যানুসন্ধান কারিগরি দলটি বাংলাদেশে প্রায় এক সপ্তাহের সফর করার কথা রয়েছে। প্রয়োজনে এটি বাড়তেও পারে। এ সময় ঢাকায় এসে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে কাজের ধারা, প্রক্রিয়া, শর্তসহ সব বিষয় চূড়ান্ত করবে।
জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এসব নৃশংসতার ঘটনায় উদ্বেগ জানায় জাতিসংঘও। সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার এসব আমলে নিয়ে তদন্ত করার ঘোষণা দেয়। যেখানে যুক্ত হচ্ছে জাতিসংঘও।
গত ১৪ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্কের ফোনে কথা হয়। ওই সময় তাদের মধ্যে এ তদন্তের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আন্দোলনের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)। যেখানে দাবি করা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অপ্রয়োজনীয়’ ও ‘মাত্রাতিরিক্ত’ বলপ্রয়োগের গুরুতর ও বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া আন্দোলনে সহিংসতা, প্রাণহানি, মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ। এসব ঘটনায় জড়িতদের জবাবদিহির মুখোমুখি করা দরকার বলেও মন্তব্য করেছে সংস্থাটির মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।