Dhaka ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খেলার মাঠের অভাবে শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • 55

খেলার মাঠের অভাবে শিশুরা মোবাইল, ইন্টারনেট আর ফাস্ট ফুডে আসক্ত হচ্ছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

শিশুদের বেড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এখন মাঠ নেই, উঠান নেই। শিশুরা তাই মোবাইল, ইন্টারনেট আর ফাস্ট ফুডে আসক্ত হচ্ছে। খেলাধুলা ও দূষণমুক্ত পরিবেশ ছাড়া এই অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়।

অনেক আন্দোলন দেখি, কিন্তু আজ পর্যন্ত খেলার মাঠ বা দূষণমুক্ত শহরের জন্য কেউ আন্দোলন করেনি।’
বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) মিলনায়তনে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচএন) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘পুষ্টিহীনতা থাকলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে বিকশিত হয় না। এতে মনোযোগ কমে যায়, কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।

সারাদেশকে হাসপাতাল বানালেও লাভ নেই, যদি রোগ প্রতিরোধে মনোযোগ না দেওয়া হয়। পুষ্টিকর তরকারি ভুল প্রক্রিয়ায় রান্না করলে তার গুণাগুণ থাকে না। শুধু তাই নয়, খাদ্যের উৎস কৃষিতেও সচেতনতা জরুরি। সেখানে অতিমাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে, যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, সচেতনতার পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণ শিক্ষার কারিকুলামের পাশাপাশি মেডিক্যাল, নার্সিং ও ম্যাটসের কারিকুলামে পুষ্টি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। দ্রুত কাজ শুরু হবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, জীবের টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন সূত্র থেকে যে শক্তি সংগ্রহ করে থাকে, সেটিই পুষ্টি। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও ২৮ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতিতে ভুগছে।

৯ শতাংশ শিশু ওয়েস্টিং (উচ্চতার তুলনায় ওজন অস্বাভাবিক কম)। এই অবস্থায় রাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রুটিন দায়িত্বে) মো. খোরশেদ আলম বলেন, সরকারের ২৩টি মন্ত্রণালয় পুষ্টি কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। অথচ শহর ও গ্রাম মিলিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। হাটার অভ্যাস কমে যাচ্ছে, শিশু-কিশোররা স্থূলতায় ভুগছে, এমনকি প্রবীণ শিক্ষিতদের মধ্যেও সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘জীবনাচারে পরিবর্তন আনা ছাড়া কোনো পথ নেই। গ্রামে-গঞ্জেও এখন ফাস্ট ফুডের দোকান। তাই সারা বছরব্যাপী পুষ্টি ও সচেতনতার ক্যাম্পেইন চালাতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

খেলার মাঠের অভাবে শিশুরা মোবাইলে আসক্ত হচ্ছে : স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

Update Time : ০৩:০৬:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

খেলার মাঠের অভাবে শিশুরা মোবাইল, ইন্টারনেট আর ফাস্ট ফুডে আসক্ত হচ্ছে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম।

শিশুদের বেড়ে ওঠার অনুকূল পরিবেশ না থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এখন মাঠ নেই, উঠান নেই। শিশুরা তাই মোবাইল, ইন্টারনেট আর ফাস্ট ফুডে আসক্ত হচ্ছে। খেলাধুলা ও দূষণমুক্ত পরিবেশ ছাড়া এই অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়।

অনেক আন্দোলন দেখি, কিন্তু আজ পর্যন্ত খেলার মাঠ বা দূষণমুক্ত শহরের জন্য কেউ আন্দোলন করেনি।’
বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর মহাখালীতে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম) মিলনায়তনে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচএন) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘পুষ্টিহীনতা থাকলে মস্তিষ্ক সঠিকভাবে বিকশিত হয় না। এতে মনোযোগ কমে যায়, কর্মক্ষমতা হ্রাস পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে।

সারাদেশকে হাসপাতাল বানালেও লাভ নেই, যদি রোগ প্রতিরোধে মনোযোগ না দেওয়া হয়। পুষ্টিকর তরকারি ভুল প্রক্রিয়ায় রান্না করলে তার গুণাগুণ থাকে না। শুধু তাই নয়, খাদ্যের উৎস কৃষিতেও সচেতনতা জরুরি। সেখানে অতিমাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার হচ্ছে, যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করে নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী বলেন, সচেতনতার পাশাপাশি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সাধারণ শিক্ষার কারিকুলামের পাশাপাশি মেডিক্যাল, নার্সিং ও ম্যাটসের কারিকুলামে পুষ্টি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। দ্রুত কাজ শুরু হবে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বলেন, জীবের টিকে থাকার জন্য বিভিন্ন সূত্র থেকে যে শক্তি সংগ্রহ করে থাকে, সেটিই পুষ্টি। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও ২৮ শতাংশ শিশু খর্বাকৃতিতে ভুগছে।

৯ শতাংশ শিশু ওয়েস্টিং (উচ্চতার তুলনায় ওজন অস্বাভাবিক কম)। এই অবস্থায় রাষ্ট্রের পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (রুটিন দায়িত্বে) মো. খোরশেদ আলম বলেন, সরকারের ২৩টি মন্ত্রণালয় পুষ্টি কার্যক্রমের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। অথচ শহর ও গ্রাম মিলিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। হাটার অভ্যাস কমে যাচ্ছে, শিশু-কিশোররা স্থূলতায় ভুগছে, এমনকি প্রবীণ শিক্ষিতদের মধ্যেও সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘জীবনাচারে পরিবর্তন আনা ছাড়া কোনো পথ নেই। গ্রামে-গঞ্জেও এখন ফাস্ট ফুডের দোকান। তাই সারা বছরব্যাপী পুষ্টি ও সচেতনতার ক্যাম্পেইন চালাতে হবে।