খুলনা প্রতিনিধিঃ
গ্রামীণ পর্যায়ে ব্যবসার পরিবেশ এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে খুলনায় পাঁচ উপজেলায় মডেল গ্রামীণ বাজার নির্মাণের কাজ শুরু করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাজারগুলোতে ইতোমধ্যে চারতলা ফাউন্ডেশনের দুইতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ কাজের শতকরা ২০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যেই এ প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত হবে। তবে সংশ্লি¬ষ্টরা বলছেন, বাজার নির্মাণ হলে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণের সুবিধাও বৃদ্ধি পাবে। এতে গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হবে।
খুলনা এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাতকরণ, কৃষিপণ্য ন্যায্যমূল্যে প্রাপ্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও পরিবহন ব্যয় হ্রাস করে সামগ্রিকভাবে এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য ‘গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প’ ২০১৭ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন দেয়া হয়। যার বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলায় ছাচিয়াদাহ হাট, দাকোপের খেজুরিয়া তালুকদার বাজার, পাইকগাছার কাশিমনগর হাট, বটিয়াঘাটার হাটবাটিয়া হাট ও দিঘলিয়ার কোলা বাজারে চার তলা ফাউন্ডেশনের ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার বর্গফুট আয়তের দুই-তলা বিশিষ্ট ভবণ নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি গ্রামীন বাজারে একক ভাবে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। বাজারের দোতলায় থাকছে আধুনিক মার্কেট। মার্কেটের নীচ তলায় থাকছে কাঁচা বাজার, মাছ-মাংসের দোকান ও মুদির দোকান। মার্কেটের চারিদিকে জনগণ প্রবেশ করতে পারবে এবং বাহির হতে পারবে। মার্কেটে মহিলা ও পুরুষদের জন্য আলাদা আলাদা টয়েলেটের সুবিধাও রাখা হয়েছে। এছাড়া মার্কেটের ছাদে সোলার প্যানেল মাধ্যমে নির্মল সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রা ও অর্থনীতি কৃষির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করতে হলে গ্রামীণ হাট বাজার নির্মাণ জরুরি। কারণ স্থায়ী অবকাঠামো না থাকলে গ্রামীণ বাজারে মালামালের সরবরাহ অপ্রতুল হয়ে পড়ে। ফলে ভোক্তাদের অধিক মূল্যে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কিনতে হয়। অন্যদিকে প্রতিটি গ্রামীণ বাজারে ভৌত অবকাঠামো সুবিধা দেয়া গেলে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের সহজ বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকরা প্রতিযোগিতামূলক দামে তার পণ্য বিক্রি করতে পারবে। এতে গ্রামীণ কৃষক ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের (ব্যবসায়ী) সুযোগ বাড়বে।
তিনি বলেন, বর্তমান বাজার ব্যবস্থায় কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য সংরক্ষণ সুবিধার অভাবে মধ্যস্বত্বভোগীদের নিকট স্বল্প মূল্যে উৎপাদন স্থলেই বিক্রি উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়। তবে এসব বাজার নির্মাণ হলে কৃষি ও অকৃষি পণ্যের বাজারজাতকরণের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। গ্রাাম পর্যায়ে ব্যবসার উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি এবং স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উলে­খ্য উপজেলা হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নবনির্মিত ভবনের বিভিন্ন অংশের ইজারা প্রদান করবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে