খুলনা  প্রতিনিধি :
খুলনার রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের শিয়ালি গ্রামে মসজিদের ইমামকে লাঞ্চিত, মসজিদের ভিতরে থাকা মুসাল্লিদের ইট নিক্ষেপ ও হাতা হাতির ঘটনা ঘটে। একদিন পর মন্দির এবং স্থানীয় কিছু দোকান ভাংচুরের ঘটনায় মামলা দায়ের। এঘটনায় পুলিশ ১০জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। ঘটনার পর এলাকায় জেলা পুলিশ সুপার সহ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মসজিদের ইমাম নাজিম সমাদ্দার জানান, গত ৫ আগষ্ট মসজিদের সামনে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ২৫/৩০ জন পুরুষ/ মহিলা ঢোল ও উলু দিয়ে নাম কীর্তন করতে করতে মন্দিরের দিকে যায়। ঢোল ও উলুর উচচ শব্দের কারনে  মসজিদে ইশার নামাজের বিঘœতা সৃষ্টি হয়। গত ৬ আগষ্ট ইশার নামাজের সময় তারা আবারও ঢোল ও উলু দিয়ে মসজিদের সামনে উচ্চ শব্দে কিছু সময় ধরে বাজাতে থাকে। তখন ইমাম তাদের কাছে গিয়ে বলেন, ভাই মসজিদে নামাজ চলছে এখান থেকে একটু সামনে গিয়ে বাজান। এই কথা শুনে শিব ধর নামে এক ব্যক্তি আমাকে গলা ধাক্কা দেয় এবং বলে মসজিদ এখানে রাখা যাবে না। এসময় ৬/৭ জন মুসাল্লিদের সাথে ২৫/৩০ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকের সাথে কথা কাটা কাটি হয় এবং মসজিদে ইট নিক্ষেপ শুরু করে। এর আগে মাসুম নামে এক যুবক মসজিদের কাছে ঢোল না বাজানোর জন্য তাদেরকে অনুরোধ করলে তাকেও  মারতে আসে। পরবর্তীতে ৭ আগষ্ট বিকালে শিয়ালী গোয়াড়া শ্বশান মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এরপর কেবা কারা শিয়ালী পূর্বপাড়া এলাকায় হরি মন্দির, শিয়ালী পূর্বপাড়া দূর্গা মন্দির, শিবপদ ধরের বাড়ি,গোবিন্দ মন্দির ও কিছু দোকান ভাংচুর করেছে বলে স্থানীয়রা জানায়। খবর পেয়ে জেলা পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বাদশা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়া তাছনিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খান মাসুম বিল্লাহ, রূপসা থানা ওসি সরদার মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকায় এলাকায় দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, পশ্চিম পাড়া মসজিদ ও শ্বশান মন্দির থেকে ভাংচুরকৃত দোকান ও বাড়ির দুরুত্ব প্রায় ২ কি:মি:। ভাংচুর কৃত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কারা এঘটনা ঘটিয়েছে তা আমরা দেখি নাই। রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বলেন, এঘটনায় শক্তি বসু বাদী হয়ে ২৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫০/২০০জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারনামীয় ৯ জনসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত। তবুও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রেখেছি।রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া তাছনিম বলেন, ঐ দ্বন্দের সমাধান সেদিনই হয়েছে এবং ঐদিনের ঘটনার সাথে শনিবারের ঘটনার সম্পর্ক পাচ্ছিনা। তিনি আরও বলেন, শুক্রবারের ঘটনার পরপরই প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের নিয়ে স্থানীয় হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে বৈঠক করি। জেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা সাথে সাথে সেখানে যায় এবং স্থানীয়দের সাথে বৈঠক করে দ্বন্দের মিটমাট করি।  বিষয় খুলনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেছেন, ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে এবং এর সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে