খুনিদেরকে যারা পুরস্কৃত করে, অশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় তারা সমান অপরাধী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যদি খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিতেন, বিদেশি দূতাবাসে খুনিদের চাকরি দিয়ে তাদেরকে পুরস্কৃত না করতেন, মোশতাকের বেনিফিশিয়ারি হিসেবে প্রধান সেনাপতি না হতেন, তাহলে ইতিহাস হয়তো অন্যরকম হতো। খুন যে করে আর খুনিদের যে আশ্রয় দেয় এবং পুরস্কৃত করে তারা একই অপরাধী।’
ওবায়দুল কাদের আজ সোমবার সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী ও আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে বনানী কবরস্থানে তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড হলেন হাওয়া ভবন থেকে তারেক রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একই সূত্রে গাঁথা। একই ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতা। ৭৫-এর ১৫ আগস্ট টার্গেট ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর ২১ আগস্ট টার্গেট ছিল শেখ হাসিনা।
‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাজনীতির সম্পর্ক স্থাপনে শেখ হাসিনা শ্রেষ্ঠ উদাহরণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু-কিছু রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডে বিশেষ করে ৭৫-এর হত্যাকাণ্ড ও ২১ আগস্টের হত্যাকাণ্ড দলগুলোর মধ্যে দেয়াল সৃষ্টি করেছে। তারপরও শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্ক ভালো থাকুক। এটা চেয়েই তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গণভবনে ডেকেছিলেন, তাকে ফোন করেছিলেন গণভবনে আসার জন্য। সেদিন খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী অশ্রাব্য ভাষায় কথাবার্তা বলেছেন, তা আপনারা দেখেছেন এবং শুনেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারাতো অনেকবার ক্ষমতায় এসেছেন কিন্তু আপনারা কি জিয়া হত্যার বিচার করেছেন বা একবারও কি জিয়া হত্যার বিচার দাবি করেছেন?
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নিহত জিয়ার খুনের নিন্দা জানিয়েছিলাম আমরা। আওয়ামী লীগ হত্যা-খুনের রাজনীতি বিশ্বাস করে না এবং প্রশ্রয় দেয় না। এই কারণে জিয়াকে নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও আমরা তার হত্যার জন্য নিন্দা জানিয়েছিলাম।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছারসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী মিছিলপূর্ব এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশে ঘাতকের দল বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলা চালায় ও গুলি বর্ষণ করে। এই ন্যক্কারজনক গ্রেনেড হামলায় বেগম আইভী রহমান গুরুতরভাবে আহত হন। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চারদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে তিনি ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।