পূর্বের ছবি

কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উজানের ঢলে উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি জেলায় আবারও বেড়েছে নদ-নদীর পানি। প্লাবিত হয়েছে নদীপাড়ের নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে আমনের ক্ষেত। কয়েক দফা বন্যার পর আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দুশ্চিন্তায় নদী পাড়ের মানুষ। 

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণায় নদ-নদীর পানি বেড়েছে। জেলার সদর, বারহাট্টা, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর ও মোহনগঞ্জ উপজেলায় রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ডুবে গেছে নেত্রকোণা-সিধলী-কলমাকান্দা সড়কও। এরই মধ্যে পানি উঠতে শুরু করেছে বসতবাড়িতে। কয়েক দফা বন্যায় রোপা আমনের বীজতলা ক্ষতির পর আমনের ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় চাষিরা।

জেলায় বানভাসিরা বলেন, ‘৯০ শতাংশ ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় থাকার উপায় নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে কিভাবে চলবো আমরা?’

লালমনিরহাটের শিমুলবাড়ী পয়েন্টে ধরলার পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পঞ্চমবারের মতো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তায় দুর্গতরা।

দুর্ভোগের শিকার কয়েকজন নারী জানান, ‘ঘরে পানি ওঠায় সন্তানদের নিয়ে বিপাকে পড়েছি। এমতবস্থায় কেউই আমাদের খবর নেয় না। জমিতে যা ফসল ছিল সব নষ্ট হয়ে গেছে।’
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে বাঙালি নদীর পানিও। এতে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গাইবান্ধার প্রায় সব নদ-নদীর পানি বেড়েছে। হাতিয়া, সৈয়দপুর, ভাষারপাড়া, কামারজানি, বারবলদিয়া এলাকায় ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। করতোয়া, ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বেড়ে সৈয়দপুর, বালাসীঘাটসহ বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

সিরাজগঞ্জে হার্ড পয়েন্টে পানি সামান্য কমলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। বন্যায় এখনও ৬ উপজেলার নিম্নাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এনায়েতপুরের বাহ্মণগ্রাম থেকে আড়কান্দি, ঘাটাবাড়ি, পাকড়তলা, ভেকা, পাঁচিল পর্যন্ত সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে শুরু হয়েছে নদী ভাঙন।

ভাঙনকবলিতরা বলেন, ‘শত শত বিঘা জমি, ফসল এবং ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে আমাদের যাওয়ার পথ নেই।’

এদিকে, টানা বৃষ্টিতে বিভাগীয় নগরী রংপুরের অন্তত ৬০টি মহল্লা পানিতে তলিয়ে গেছে। বাড়িঘরে পানি ওঠে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের। শ্যামা সুন্দরী খাল তলিয়ে যাওয়ায় নগরীর আশপাশের কয়েক হাজার বাড়িঘর কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী অন্তত ৪০ হাজার মানুষ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে