সোহেল রানা,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও মজিদা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আতাউর রহমান মিন্টুর কবজি কর্তনের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুকে জড়িয়ে বক্তব্য ও মিছিল করার প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১টায় সদর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান, কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান সাজুসহ দলীয় নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে জেলায় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে আমার ঘনিষ্ট ৪ জন নেতা-কর্মীর নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এরা চার জন ঐ দিন ঘটনার সময় ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০কি. মি. দূরে কুড়িগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় মহিলা ভলিবল ফাইনাল খেলা উপভোগ করছিল আমার সাথে। এ অনুষ্ঠানে তখন প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। রাজনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় এ চার নেতাকে এ মামলায় জড়িয়ে নোংরা রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে একটি পক্ষ। তবে তিনি সুষ্পষ্টভাবে কারো নাম উল্লেখ করেননি। মিডিয়ায় তাকে এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জড়িয়ে যেসব কথা আসে তার প্রতিবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত বিষয়কে রাজনৈতিকভাবে নিয়ে এসে তাকে জড়ানো হচ্ছে। এতে মূল অভিযুক্তরা বেঁচে যাবে। আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু জানান, ২০১০ সালে যুবলীগ কর্মী উজ্জ্বলের হাত কাটা হয়েছে। সেই কাটা হাত কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা আপনারা সকলেই জানেন। রোমান নামে এক ছাত্রনেতার হাত কাটা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের নেতা মামুনকে কারা লাঞ্ছিত করেছে তা আপনারা সবাই জানেন। ব্যক্তিগত ঘটনা-দ্বন্দ্ব সামনে নিয়ে এসে আওয়ামী লীগকে খাটো করা হচ্ছে। কোন একটি পক্ষ এই কাজটি করে দলকে খাটো করছে, নেতৃত্বকে খাটো করছে। এতে দলকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। নোংরামো ব্যক্তিস্বার্থে করা হচ্ছে। ভিকটিম নাম বললেও অদৃশ্য কারণে সুস্থ রাজনীতির সাথে জড়িত ছাত্রনেতাদের ভবিষ্যৎ কলুষিত করার জন্য তাদের নাম সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে অপরাধীদের রক্ষা করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
আমান উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বস্তনিষ্ঠ নিউজ করেন। কারা দীর্ঘদিন এসব ঘটনার সাথে জড়িত তা বের করেন। বিগত দিনের রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে আমরা আপনাদের সহযোগিতায় উত্তরণ চাই। এছাড়াও তিনি বলেন, এই ঘটনার পর যারা মিছিল মিটিং করে আমাকে জড়িয়ে উষ্কানীমূলক বক্তব্য দিচ্ছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। এই নোংরামিকে ঘৃণা জানাই।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে রাজারহাটের রামরতন পালপাড়া এলাকায় আতাউর রহমান মিন্টুকে ৬-৭ জনের একটি দল ডান হাতের কব্জি কেটে নেয়। বাম হাত ও ডান পা কেটে নেয়ার চেষ্টা করে। পরে তাকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও পরে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়া হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজারহাট থানায় বাঁধনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চাঁদাবাজী মামলা করেন কলেজ শিক্ষকের বাবা আলতাফ হোসেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় ৫লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পেয়ে তার হাতের কব্জি কর্তন করেছে বাঁধনসহ তার লোকজন।