Dhaka ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:

কিংবদন্তী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২০
  • ১১৪ Time View

সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আব্দুল জব্বারের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের আজকের এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার সংগীত জীবন। রাজকীয় ওই যাত্রার পর ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভিতে শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তার আগেই ১৯৬২ সালে তিনি চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন। তবে ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমাতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি দিয়ে রাতারাতি পরিচিতি লাভ করেন। একই বছর ‘পিচ ঢালা পথ’ সিনেমাতে রবিন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ ও ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ সিনেমাতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো’, আর ‘কিছুক্ষণ থাকো’- এ দুটি গান তাকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা।

আব্দুল জব্বারের ক্যারিয়ারে মাইলফলক একটি গান ‘ওরে নীল দরিয়া’। এটি তিনি ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সারেং বৌ’ সিনেমাতে আলম খানের সুরে গেয়েছিলেন।

এ গানের প্রতি বিশেষভাবে দুর্বল ছিলেন শিল্পী নিজেও। যে বছর মারা যান সেই ২০১৭ সালে এ গানের সিক্যুয়েল হিসেবে ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’ শিরোনামে একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এটিই তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের একমাত্র মৌলিক গানের অ্যালবাম।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

যুদ্ধের সময় তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। তখন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে প্রেরণা জোগাতে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেছেন। ওই সময় গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল জব্বার ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

দুই দেশকেই ভালোভাবে চিনি, এই সংঘাত বন্ধ হোক : ট্রাম্প

কিংবদন্তী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আব্দুল জব্বারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Update Time : ০৪:৫৯:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩০ অগাস্ট ২০২০

সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তী ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী আব্দুল জব্বারের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের আজকের এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি।

আব্দুল জব্বার ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় তার সংগীত জীবন। রাজকীয় ওই যাত্রার পর ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি বিটিভিতে শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তার আগেই ১৯৬২ সালে তিনি চলচ্চিত্রে প্রথম প্লেব্যাক করেন। তবে ১৯৬৮ সালে ‘এতটুকু আশা’ সিনেমাতে সত্য সাহার সুরে তাঁর গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছ কভু’ গানটি দিয়ে রাতারাতি পরিচিতি লাভ করেন। একই বছর ‘পিচ ঢালা পথ’ সিনেমাতে রবিন ঘোষের সুরে ‘পিচ ঢালা এই পথটারে ভালবেসেছি’ ও ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’ সিনেমাতে রাজা হোসেন খানের সুরে ‘সুচরিতা যেওনাকো’, আর ‘কিছুক্ষণ থাকো’- এ দুটি গান তাকে এনে দেয় আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা।

আব্দুল জব্বারের ক্যারিয়ারে মাইলফলক একটি গান ‘ওরে নীল দরিয়া’। এটি তিনি ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘সারেং বৌ’ সিনেমাতে আলম খানের সুরে গেয়েছিলেন।

এ গানের প্রতি বিশেষভাবে দুর্বল ছিলেন শিল্পী নিজেও। যে বছর মারা যান সেই ২০১৭ সালে এ গানের সিক্যুয়েল হিসেবে ‘কোথায় আমার নীল দরিয়া’ শিরোনামে একটি অ্যালবাম প্রকাশ করেন। এটিই তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের একমাত্র মৌলিক গানের অ্যালবাম।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা জোগাতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অসংখ্য গানে কণ্ঠ দেন। তাঁর গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।

যুদ্ধের সময় তিনি প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। তখন কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে প্রেরণা জোগাতে হারমোনিয়াম বাজিয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেছেন। ওই সময় গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আবদুল জব্বার ১৯৮০ সালে একুশে পদক ও ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান।