বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার এবং তাঁর দল বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলা প্রচেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সহায়তার অংশ হিসাবে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মোস্তফা কামাল পাশার নিকট ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) হস্তান্তর করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ধারাবাহিক পিপিই বিতরণ পরিকল্পনার ষষ্ঠ উদ্যোগ এটি। 

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সরকার যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট, ডিফেন্স অ্যান্ড এগ্রিকালচার; ইউএসএআইডি; এবং সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ৫৬.৫ মিলিয়ন ডলারের অধিক সহায়তা প্রদান করেছে।

আজ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস প্রদত্ত সরঞ্জামাদির মধ্যে রয়েছে কাপড়ের তৈরি ১০,০০০ পুনর্ব্যবহারযোগ্য মাস্ক, বিপজ্জনক পদার্থ ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত ২০০ পূর্ণাঙ্গ হ্যাজার্ডাস ম্যাটেরিয়াল স্যুট, ৫০টি কেএন৯৫ সার্জিক্যাল মাস্ক, ৬৬০ বোতল ২০০-মিলি হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১১,০০০ জোড়া সার্জিক্যাল গ্লাভস, ২৫ কেজি ব্লিচ পাউডার, ২টি জীবাণুনাশক স্প্রেয়ার, ১০০টি মুখমণ্ডল সুরক্ষার শিল্ড, এবং ১০টি ইনফ্রারেড থার্মোমিটার। যার সবই বাংলাদেশী বিভিন্ন কোম্পানির কাছ থেকে স্থানীয়ভাবে ক্রয় করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ থেকে নাজুক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষা এবং বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তর গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার কেননা প্রতিষ্ঠানটি জনসাধারণকে এবং সারাদেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উদ্যোগে সহায়তা দিয়ে আসছে। এই পিপিইগুলো পাবার ফলে সংশোধন কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশের সকল মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা উৎসাহিত করার পাশাপাশি নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবেন।

কোভিড-১৯’র প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে বিভিন্ন দেশের সরকার, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এই মহামারী মোকাবেলায় বিশেষভাবে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুধু যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এবং ইউএসএআইডি’র মাধ্যমেই সারা বিশ্বে জরুরী স্বাস্থ্য, মানবিক, অর্থনৈতিক ও উন্নয়ন সহায়তা হিসাবে ১.৬ বিলিয়ন ডলারের অধিক অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিগত ২০ বছরের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশকে দেয়া ১ বিলিয়ন ডলারের অধিক স্বাস্থ্য সহায়তার ধারাবাহিকতায় ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সারা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সহায়তা প্রদান করছে। এই অর্থায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য মানসম্পন্ন জীবনরক্ষাকারী স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘস্থায়ী অঙ্গীকারের গুরুত্ব উঠে এসেছে।

ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বাংলাদেশ কারা অধিদপ্তরের সংশোধন কর্মকর্তা এবং সারাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে এই অত্যাবশ্যকীয় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) প্রদান করে গর্বিত বোধ করছে। এই অনুদান বাংলাদেশ শুল্ক বিভাগ, কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল, ইউএসএআইডি’র খাদ্য নিরাপত্তা কার্যক্রম, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তর এবং বাংলাদেশের ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাম্প্রতিক অনুদানের ধারাবাহিকতা। বাংলাদেশের কারাগার ও অন্যান্য জননিরাপত্তা কর্মীগণ স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, শুল্ক কর্মকর্তা, মুদি দোকান ও ফার্মেসির কর্মী, সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবক সংস্থাগুলোকে সাথে নিয়ে প্রতিদিন অসাধারণ সেবা কাজ করে থাকেন- তারা প্রকৃত বীর। এই মহামারী মোকাবেলা এবং আমাদের দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে আরো জোরদার করতে বাংলাদেশের পাশে থেকে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে