বেনাপোল প্রতিনিধি:
ভালো কাজের প্রলোভনে পড়ে সীমান্তের অবৈধ পথে ভারত গিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরল ৩৮ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার সময় তাদের ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। এরা বিভিন্ন মেয়াদে ভারতে কারাভোগ করেছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। পরে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে তিনটি এনজিও সংস্থা তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য যশোর শেল্টার হোমে নিয়ে যায়।
ফেরত আসাদের মধ্যে ১০ জন ছেলে ও ২৮ জন মেয়ে রয়েছে। এদের সকলের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছর এর মধ্যে। এদের বাড়ি ফরিদপুর, বরিশাল, নড়াইল, সাতক্ষীরা, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশি ডেপুটি হাই কমিশনার শামীমা ইয়াসমিন এদের সাথে বাংলাদেশে এসেছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ভালো কাজের আসায় এরা ভারতে যায়। বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা বাড়িতে কাজ করার সময় তারা ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। এরপর সেদেশের পুলিশের কাছে আটক হয়ে আদালতের মাধ্যমে কোলকাতা ও বারাসাতের এনজিও সংস্থার শেল্টার হোমে থাকে। দুই থেকে চার বছর সাজাভোগের পর আজ সোমবার তাদের ফেরত পাঠায় ভারতীয় পুলিশ।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব বলেন, এসব কিশোর কিশোরীরা পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া বিভিন্ন সীমান্ত পথে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কাজ করার সময় সে দেশের পুলিশের হাতে আটক হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তারা জেলহাজতে যায়। পরে ভারতের রেসকিউ, লিলুয়া ও সুকন্যা ফাউন্ডেশন নামে এনজিও সংস্থা তাদের জেল থেকে ছাড়িয়ে নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। সেখানে দুই থেকে চার বছর থাকার পর দেশে ফিরে এসেছে ভারত সরকারের বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে। ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে এদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার নামে এনজিও সংস্থা ১৭ জন, মহিলা আইনজীবী সমিতি ৭ জন এবং মানবাধিকার সংস্থা রাইটস যশোর ১৪ জনকে ি নিয়ে যশোর তাদের নিজস্ব শেল্টার হোমে রাখবে। পরে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবেন।
বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) আজিজুল হক বলেন, থানার আনুষ্ঠানিকতা শেষে পাচার হওয়া শিশু কিশোর কিশোরীদের এনজিও প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর রাইটস এর পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, ফেরত আসা শিশু কিশোর কিশোরীদের যশোর নেওয়া হবে। এরপর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া কেউ আইনি সহায়তা নিলেও তাকে সহায়তা দেওয়া হবে।