মহীতোষ গায়েন, মফস্বল সম্পাদক,পশ্চিমবঙ্গ :
বিকাশ ভবনের সামনে ঘটে যাওয়া অপ্রিয় ঘটনার প্রতিবাদে ২৬ আগস্ট বিকেল ৪টেয় ধর্মতলায় কলকাতা প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো WBCUPA -র সাংবাদিক সম্মেলন।
কোভিড বিধি মেনে এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পশ্চিমবঙ্গের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতি ওয়েবকুপার দুই শতাধিক সদস্য অধ্যাপক,বিভিন্ন জেলার নেতৃত্ব।উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য টিভি চ্যানেল ও দৈনিক সংবাদপত্রের অসংখ্য সাংবাদিক।
WBCUPA- র রাজ্য সভাপতি অধ্যাপিকা কৃষ্ণকলি বসু সাংবাদিক সম্মলনের উদ্বোধনী ভাষণে গণমাধ্যমের সবাইকে স্বাগত শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন” আমাদের ওয়েবকুপা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আত্মা আমাদের মাননীয়া নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাকে শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানিয়ে বিকাশভবনের সামনে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত আত্মহত্যার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক তথা এসএসকে ও এমএসকে শিক্ষকরা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। কিন্তু তারা আবেগতাড়িত হয়ে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। ভুললে চলবে না মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যপক উন্নয়ন করেছেন। কলেজ, প্রাথমিক, মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি থেকে শুরু করে, চাইল্ড কেয়ার লীভ সহ নানান সুযোগ সুবিধা ও তাদের অবস্থার উন্নতি করেছেন। কিন্তু বিকাশভবনের সামনে ঘটে যাওয়া ঐ ঘটনা শুধুমাত্র আন্দোলনের কারণে হয়েছে তা আমরা মানতে পারছি না। এটি পরিপূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত,তাদের পেছনে কোন বিরোধী রাজনৈতিক দল বা সংগঠন আছে যাদের কারণে শিক্ষিকারা আত্মহণনের পথ বেছে নিয়েছেন।এর বিরুদ্ধে আজ WBCUPA প্রতিবাদে সোচ্চার।
জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদেরকে বিদ্যালয় শিক্ষার আওতায় এনেছেন, ৬০ বছর চাকরি নিশ্চিত, মাতৃত্বকালীন ছুটি ব্যবস্থা করেছেন,সর্বশিক্ষার আওতা থেকে রাজ্য সরকারের আওতায় এনেছেন তাদের,বাম সরকারের সময় কি পেতেন তারা? এখন তারা কি পাচ্ছেন, আন্দোলন হতেই পারে,কিন্তু ঐ ঘটনা ঘটানো আন্দোলনের সঠিক পথ নয়।শিশুর চরিত্র গঠনে শিক্ষক শিক্ষিকাদের ভূমিকা অনন্য, সেক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটানো শিশুমনে ভয়ার্ত প্রভাব ফেলে,যা কখনোই কাম্য নয়।
আবেগের আশ্রয় নিয়ে সরকারকে বিব্রত করাই সেদিনের আন্দোলনকারীদের একটি চেষ্টা ছিল।কোন শিক্ষক, শিক্ষিকা যদি সুকুমারমতি ছাত্রদের এই শিক্ষা দেন যে, আন্দোলন,প্রতিবাদের পথ হলো আত্মহত্যার পথ; তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে মারাত্মক বার্তা বহন করবে,আর ঠিক সেই কাজটিই করেছেন তারা সেদিন।
এরপর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গতকাল এক ফেসবুক পোস্ট সংক্রান্ত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপিকা বসু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, “যারা এত কিছুর পরও আন্দোলনের পথে,যারা আন্দোলন করছেন তাদের মধ্যে বিষ খাওয়ার প্ররোচনা এলো কোথা থেকে তা আপনারা খতিয়ে দেখবেন না? বাম আমলে বিকাশ ভবনের সামনে এই ধরণের আন্দোলন করতে দেওয়াই হোত না,বর্তমান সরকার অনেক বেশী গণতান্ত্রিক তা প্রমাণিত। আন্দোলনের মধ্যে ঢুকে বিষপান করা কখনোই আন্দোলনের মাত্রা হতে পারে না।”
সবশেষে তিনি আগামী ২৮ আগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অনুষ্ঠানে তরুণ প্রজন্মের জন্য,তাদের চলার পথে, আগামী ভারতবর্ষের প্রকৃত দিশা নিয়ে মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবেন তা শোনার জন্য ও সবাইকে অনুষ্ঠানের শরিক হওয়ার আহ্বান জানান।আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে এছাড়া বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, মনামী মুখার্জী, সায়ন মুখার্জী প্রমুখ অধ্যাপক।