সুবীর মণ্ডল , বাঁকুুুড়া জেলা প্রতিনিধি:

(খাতড়া ) করোনার আবহে  সমগ্র রাজ্যের  বিভিন্ন জেলার মতো বাঁকুড়া–পুরুলিয়া- ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ভাবে  পালিত  হলো  চিকিৎসক দিবস।

  দীর্ঘদিন ধরেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  ডাক্তার- নার্স-  স্বাস্থ্য কর্মীরা  সেবা প্রদানের মাধ্যমে আমাদের  জীবনকে সুরক্ষিত করার চেষ্টা করে চলেছেন, তাঁদেরকে  শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের  আদর্শ দিন আজ।সেই  সঙ্গে  বাংলার রূপকার ডঃ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন ও মৃত্যুবার্ষিকী আজ।দিনটি শুধুমাত্র বাঙালির কাছে  নয়,ভারতবাসীর কাছে অত্যন্ত পবিত্র দিন। সরকারি বেসরকারি  ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান সমগ্র  রাজ্য জুড়ে নানান ধরনের সেবা কার্যক্রমের কর্মসূচি সাফল্য মণ্ডিত করেছে। ১লা জুলাই  সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।   এই দিনটির সুগভীর ঐতিহাসিক তাৎপর্য আমরা  অস্বীকার করতে পারি না।  ডাক্তার- নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের অমূল্য কাজের  স্বীকৃতিস্বরূপ  প্রতিবছরই  ১লা জুলাই জাতীয় ডাক্তার দিবস পালিত হয়। ২০২০ সালের মতোই,এ- বছর ১লা জুলাই  অতিরিক্ত বিশেষ দিন  হতে যাচ্ছে, কারণ ডাক্তার– নার্সরা  কোভিড-১৯ -এর  ভয়াবহ মহামারির  বিরুদ্ধে  দাঁড়িয়ে  জীবন  বিপন্ন করে রোগীদের সুরক্ষা দিচ্ছেন।  বলা হয়ে থাকে, ডাক্তাররা ঈশ্বরের স্বরূপ। মুমূর্ষুকে বাঁচিয়ে তোলার ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।  মহামারির সময়ে তাঁদের ত্যাগ ও অবদান  অনস্বীকার্য।     খাতড়া মহকুমার হসপিটালের সুপার ডাঃ তাপস মণ্ডল কথা প্রসঙ্গে  বললেন—”  কোন  রোগী পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যখন বাড়ি ফেরে, তখন প্রথম হাসিটা  ডাক্তারই হাসে!”                        

করোনার ভয়াবহ আবহে স্বাস্থ্য বিধি মেনে  সমস্ত কর্মসূচির আয়োজন করেছে জেলার  ২২ টি ব্লকে ও ৩টি মহকুমার  বিভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠান।      
 
আজ মহান চিকিৎসক দিবস উপলক্ষ্যে আঁচুড়ি গ্রামীন হাসপাতাল প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হল করোনা সচেতনতামূলক নাটক “মুক্ত করো ভয়”,সাথে অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত চিকিৎসকদের স্মারক উপহার দিয়ে বরণ করে নিল  প্রকল্পন পরিবার । চিকিৎসক, সেবিকা ও চিকিৎসার সাথে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ ও তাঁদের পরিবারের সবার প্রতি বাঁকুড়া জেলা পুলিশের শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। জেলা পুলিশের আধিকারিক বলেন, ”   করোনা মহামারি  কালে আপনারা আরো একবার প্রতিষ্ঠা করেছেন আপনারা সমাজ ও জাতির নায়ক। ” জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে  আজ চারাগাছ প্রদানের মাধ্যমে চিকিৎসকদের শুভেচ্ছা জানানো হ’ল। 
 
বিষ্ণুপুর মহকুমা পুলিশের পক্ষ থেকেও ডাক্তারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।  বিষ্ণুপুরের জনপ্রিয় ডাক্তার  জয়মাল্য ঘর বলেন, “আমাদের কে সম্বর্ধনা জানালেন মাননীয় বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসক, সিএমওএইচ , এসডিপিও, আইসি ও বিভিন্ন সমাজসেবী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বৃন্দ”। আজকের  ডক্টরস ডে  উপলক্ষে  ওন্দা যুবসমাজের  পক্ষ থেকে  কোভিড যুদ্ধে শহীদ চিকিৎসকদের  একটি  স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়। বাঁকুড়া জেলার 14টি ব্লকে  রক্ত দান শিবিরের একাদশ তম দিন ছিল আজ। রানিবাঁধ হাই স্কুলে রক্তদান কর্মসূচি  অনুষ্ঠিত হল.. উপস্থিত ছিলেন:–     মাননীয়া প্রতিমন্ত্রী  জ্যোৎস্না মান্ডি মহাশয়া,  ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের  স্মৃতি বিজড়িত মুকুটমণিপুরে  পঞ্চায়েত সমিতির লজের গেটের সামনে  ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়ের আবক্ষমূূর্তিতে মালা ও  শ্রদ্ধা প্রদানে  ছিলেন  রানিবাঁধ বিধান সভার এম,এল,এ তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্য ও সরবরাহ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রতি মন্ত্রী  মাননীয়া জ্যোস্নার মাণ্ডি  ও খাতড়া  পঞ্চায়েত সমিতির  কৃষিকর্মাধ্যক্ষ মাননীয় সুব্রত মহাপাত্র।  
 
এছাড়াও বিধান চন্দ্র রায়ের 139 তম জন্ম দিবসে গোড়াবাড়ী অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে , বিনম্র  শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের আয়োজন করা হয়। GIVE BLOOD, GIVELIFE”  বিষ্ণুপুর  মহকুমার  জয়পুর ব্লকের গেলিয়া    অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ,নামছড়া বুথ তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যবস্থাপনায় স্বে্চ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজনে সামিল হয়  বহু  তরুণ- তরুনী । বড়জোড়া,  সোনামুখী, ইন্দাস  ,পাত্রসায়র  ব্লকে নানান ধরনের সেবা কার্যক্রম মধ্যে দিয়ে  দিনটি  পালিত হয়।  বাঁকুড়া  বিশ্ববিদ্যালয়ের  জনপ্রিয়  অধ্যাপক অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় কথা  প্রসঙ্গে জানালেন,   ” ডাক্তার দিবসে পৃথিবীর সকল ডাক্তার বাবুদের জানাই আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা ও প্রণাম। আজ এই অতিমারীর দিনে নিজেদের জীবন বিপন্ন করে ডাক্তারবাবুরা যে সেবা দিয়ে চলেছেন তার জন্য আমরা  বাঁকুুুড়া জেলাবাসী   কৃতজ্ঞ।”    যে দিনটি    প্রতিবছরই  উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে  পালিত হচ্ছে  ,তার একটি  ঐতিহাসিক  প্রেক্ষাপট  আছে—
চিকিৎসক দিবসে —চিকিৎসা, সেবা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তার রোগীর সম্পর্ক হচ্ছে অন্যতম প্রধান বিষয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তে দিবসটি পরিচিতি পায় ৩০ মার্চ ১৯৩৩ সালে। সেই অনুষ্ঠানেই প্রথম দিবসের স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তার রোগীর সম্পর্কের ব্যাপারটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ বুশ (সিনিয়র) ৩০ অক্টোবর ১৯৯০ সালে ৩০ মার্চকে জাতীয় চিকিৎসক দিবস পালনের জন্য আইন পাশ করেন। ভারতে এই দিনটি ১ জুলাই তারিখে কিংবদন্তী চিকিৎসক ও পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের (১ জুলাই, ১৮৮২ – ১ জুলাই, ১৯৬২) সম্মানার্থে পালন করা হয়।কিউবা তে ৩রা ডিসেম্বরে ও ইরানে ২৩এ অগাস্ট।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে