আগেই দাম নির্ধারণ ও রপ্তানির ঘোষণা দেয়ার পরও রাজধানীসহ সারা দেশে পানির দামে বিক্রি হয়েছে চামড়া, ঠেকানো যায়নি বিপর্যয়। অনেকে চামড়া বেচতে না পেরে শেষ পর্যন্ত এতিমখানায় দিতে বাধ্য হয়েছেন। পথে বসেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীতে গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে প্রকারভেদে ১০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। আর ছাগলের ২ থেকে ১০ টাকা। রাজধানীর বাহিরে আরও ভয়াবহ অবস্থা। অনেক স্থানে গত বছরের চেয়েও নাজুক পরিস্থিতি। যেখানে মৌসুমী ব্যবসায়ী না থাকার পাশাপাশি, সাড়া নেই পাইকারদেরও।
রাজধানীর জিগাতলা, পোস্তগলা, বাড্ডা এলাকা ঘুরে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। অথচ গতবারের চেয়ে এ বছর ২০-২৯ শতাংশ কমে চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়। যাতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরাও। যদিও, চলমান করোনা মহামারির কথা চিন্তা করে আগেই চামড়া বিক্রি কম বলে আশঙ্কা করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
দেশের আড়তদার ও ট্যানারির মালিকরা বলছেন, এ বছর গতবারের চেয়ে ৩০-৩৫ শতাংশ কম চামড়া আসবে। তাই চামড়ার বেশি চাহিদা রয়েছে। তারপরও দাম কমার সেই পুরনো অজুহাতই দেখাচ্ছেন তারা।
এদিকে, ঢাকার বাহিরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত মূল্যের হেরফের করে চামড়া কিনলেও এবার যেন সম্পূর্ণই নিরব ভূমিকায় স্থানীয় মৌসুমী ব্যবসায়ী ও পাইকাররা। তাই কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ বিক্রেতারা।
অনেক স্থানে খুচরা ও মৌসুমী ব্যবসাীয় না থাকায় কোরবানির পশুর চামড়া কেটে ভাগীদারদের মাঝে বন্টন করতেও দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া নির্ধারণ করা হয় প্রতি বর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে, যা গতবার ছিল প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সে হিসেবে দাম কমানো হয়েছে ২৯ শতাংশ। আর ঢাকার বাইরে ধরা হয় প্রতি বর্গফুট ২৮ থেকে ৩২ টাকা, যা গত বছর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক্ষেত্রে গতবছরের চেয়ে দাম কমানো হয় প্রায় ২০ শতাংশ।
এ ছাড়া সারাদেশে খাসির চামড়া গত বছরের প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা থেকে ২৭ শতাংশ কমিয়ে ১৩ থেকে ১৫ টাকা করা হয়। আর বকরির চামড়া গত বছরের ১৩ থেকে ১৫ টাকা বর্গফুটের দর থেকে কমিয়ে এবার ১০ থেকে ১২ টাকা করা হয়।