Dhaka ০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো – ড. মুহাম্মদ ইউনুস

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:০৫:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫
  • 63

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ক্যালেন্ডারের পাতায় ৫ আগস্ট ২০২৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সেদিন পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। এদিকে সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কেমন ছিল তখনকার প্রেক্ষাপট, তা নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

সাক্ষাৎকারটি সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হন জানিয়ে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো।

তিনি আরও বলেন, তবে এতে কোনো ভবন ধ্বংস হয়নি। বরং পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।

ড. ইউনূস কথা বলেন শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও।

তার ভাষ্য, ‘হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল দস্যুদের একটি পরিবার। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন সম্পন্ন করা হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? তাকে উধাও করে দাও। নির্বাচন করতে চান? তারাই নিশ্চিত করতো আপনি যেন সেই আসনে জয়ী হন।’

আবার টাকার দরকার হলেও সে ব্যবস্থা তাদের (হাসিনা সরকার) কাছে ছিল বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে তারা এক মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে দিতো, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।

সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রসঙ্গেও কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভারত হাসিনাকে আতিথ্য দিলে তা সহ্য করা হবে। কিন্তু দেশকে আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রচার চালাতে ভারতকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

বাংলাদেশে হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরাচার, সহিংসতা এবং দুর্নীতির অভিযোগে ভরপুর। যা জুলাই ও আগস্ট মাসের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে বলেও গার্ডিয়ানের প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলা হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

Popular Post

এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো – ড. মুহাম্মদ ইউনুস

Update Time : ০৯:০৫:২১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ক্যালেন্ডারের পাতায় ৫ আগস্ট ২০২৪। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে সেদিন পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। এরপর দেশ ছেড়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। এদিকে সরকার পতনের পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কেমন ছিল তখনকার প্রেক্ষাপট, তা নিয়ে সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

সাক্ষাৎকারটি সোমবার (১০ মার্চ) প্রকাশিত হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হন জানিয়ে সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনা দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো।

তিনি আরও বলেন, তবে এতে কোনো ভবন ধ্বংস হয়নি। বরং পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।

ড. ইউনূস কথা বলেন শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও।

তার ভাষ্য, ‘হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল দস্যুদের একটি পরিবার। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন সম্পন্ন করা হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? তাকে উধাও করে দাও। নির্বাচন করতে চান? তারাই নিশ্চিত করতো আপনি যেন সেই আসনে জয়ী হন।’

আবার টাকার দরকার হলেও সে ব্যবস্থা তাদের (হাসিনা সরকার) কাছে ছিল বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে তারা এক মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে দিতো, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।

সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রসঙ্গেও কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভারত হাসিনাকে আতিথ্য দিলে তা সহ্য করা হবে। কিন্তু দেশকে আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রচার চালাতে ভারতকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে।

বাংলাদেশে হাসিনার শাসনামল ছিল স্বৈরাচার, সহিংসতা এবং দুর্নীতির অভিযোগে ভরপুর। যা জুলাই ও আগস্ট মাসের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে বলেও গার্ডিয়ানের প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বলা হয়।