চাকরি থেকে একসঙ্গে ৪৮ জন পাইলটকে বরখাস্ত করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। সাম্প্রতিক করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক লোকসান কমানোর প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। তবে বরখাস্তের প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

গত ১৩ আগস্ট চিঠি পাঠিয়ে ওই পাইলটদের জানিয়ে দেওয়া হয়, আর কাজে আসতে হবে না। এর পরের দিনই প্রতিবাদ জানিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার সিএমডি রাজীব বনসলকে চিঠি পাঠিয়েছে পাইলটদের সংগঠন ইন্ডিয়ান কমার্শিয়াল পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (আইসিপিএ)। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

কর্তৃপক্ষের দাবি, এই ৪৮ পাইলট আগেই পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছিলেন। বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জুলাই মাস নাগাদ সংস্থার অবস্থা যখন বেশ খারাপ, নিয়মিত বেতন ও ভাতা পাচ্ছিলেন না কর্মীরা, তখন বেসরকারি সংস্থায় চলে যাবেন বলে এই পাইলটরা পদত্যাগপত্র জমা দেন। কিন্তু সেই সময়ে বেসরকারি সংস্থাগুলিতেও অর্থনৈতিক সমস্যা দেখা দেয়ায় এই পাইলটরা সেখানে সুযোগ না পেয়ে পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নেন।

এয়ার ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ আরও বলেছে, পদত্যাগপত্র একবার জমা দিলে সেটা গ্রহণ করা হবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার একমাত্র সংস্থার। পদত্যাগপত্র দিলে তার একটি নোটিস পিরিয়ড থাকে। সেই নোটিস পিরিয়ড শেষ হওয়ার পরে এবার সেগুলো গ্রহণ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে পাইলটদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সকলে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছিলেন। এমনকি, লকডাউনের সময়েও তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিমান চালিয়েছেন। আগামী দিনের ডিউটি চার্টে তাদের নামও রয়েছে।

পাইলটদের সংগঠনের অভিযোগ, পার্সোনেল বিভাগের কিছু কর্মকর্তার খেয়ালখুশির মতো ছাঁটাই প্রক্রিয়া চলছে। যেটা এয়ার ইন্ডিয়ার চাকরির শর্তের পরিপন্থী।

জানা যায়, এয়ার ইন্ডিয়ায় আগে থেকে লোকসানে চলছিল। তাদের প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে এই অবস্থা আরও জটিল আকার নিয়েছে। ফলে সংস্থাটি খরচ বাঁচানোর বিভিন্ন উপায় গ্রহণ করে। কর্মী সঙ্কোচন তাদের মধ্যে একটি। কর্মদক্ষতা, নিয়মিত হাজিরা, সংস্থার প্রতি দায়বদ্ধতার নিরিখে কাদের ছাঁটাই করা হবে, তার একটি তলিকা পাঠানোর জন্য প্রতিটি আঞ্চলিক প্রধানকে বলা হয়েছে। এরই একটি অঙ্গ হিসেবে এই ৪৮ জন পাইলটকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এর আগে জুলাইয়ের মাঝামাঝি এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, সংস্থাটির বেশ কিছু কর্মীকে ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত বেতনহীন ছুটিতে পাঠানো হবে। সেই ছুটি ৫ বছর পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে