নগরীর ৬৭টি স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় সংশ্লিষ্টদের লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নগরবাসীকে ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষা দিতে তৃতীয় পর্যায়ে বিশেষ পরিছন্নতা অভিযান বা চিরুনি অভিযানের আজ ষষ্ঠ দিনে এ জরিমানা করা হয়।
গত ৬ থেকে ১৫ জুন প্রথম ও ৪ থেকে ১৪ জুলাই দ্বিতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযান শেষে ৮ আগস্ট থেকে তৃতীয় পর্যায়ের ১০ দিনব্যাপী চিরুনি অভিযান শুরু হয়। চিরুনি অভিযান চলাকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত আরও জোরদার করা হয়েছে। যেসব ক্ষেত্রে ভবন বা স্থাপনার মালিক পাওয়া যাবে না, সেসব ক্ষেত্রে প্রয়োাজনে নিয়মিত মামলা করা হবে।
ডিএনসিসি’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ জানানো হয়, আজ ১২ হাজার ৪৯৬টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন ইত্যাদি পরিদর্শন করে মোট ৬৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৭ হাজার ৫১৩টি স্থাপনায় এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ সময়ে ২৭টি মামলায় মোট ১ লক্ষ ৪ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়। ৮ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্যায়ের চিরুনি অভিযানে আজ পর্যন্ত মোট ৭৮ হাজার ৩৬২টি বাড়ি, স্থাপনা, নির্মাণাধীন ভবন ইত্যাদি পরিদর্শন করে মোট ৪২৩টিতে এডিসের লার্ভা এবং ৪৫ হাজার ৭৭৯টিতে এডিস মশা বংশবিস্তার উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এ পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মোট ৫ লক্ষ ৪৮ হাজার ৩০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আজ উত্তরা অঞ্চলে (অঞ্চল-১) মোট ৯৫৫টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৮টিতে এডিস মশার লার্ভা এবং ৮০০টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২টি মামলায় ৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
মিরপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-২) মোট ২ হাজার ৫৩৯টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ২টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৩৪১টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৭টি মামলায় মোট ২ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।
মহাখালী অঞ্চলে (অঞ্চল-৩) মোট ১ হাজার ৪৩৫টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ২৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায় এবং ৮৯৪টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ২টি মামলায় ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মিরপুর-১০ অঞ্চলে (অঞ্চল-৪) মোট ১ হাজার ৩৭৯টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৫টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৮৪২টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
কারওয়ান বাজার অঞ্চলে (অঞ্চল-৫) মোট ২ হাজার ৩০১টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১৪টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ১ হাজার ৭৭৮টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩টি মামলায় ১৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
হরিরামপুর অঞ্চলে (অঞ্চল-৬) মোট ১ হাজার ২০৪টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৭টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৯৩৮টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
দক্ষিণখান অঞ্চলে (অঞ্চল-৭) মোট ৮১৬টি বাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিকদেরকে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৬৩১টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
উত্তরখান অঞ্চলে (অঞ্চল-৮) মোট ৭৬২টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে কোন স্থাপনায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়নি। তবে ৪৪৯টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
ভাটারা অঞ্চলে (অঞ্চল-৯) মোট ৫০৩টি স্থাপনা পরিদর্শন করে ৩টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যায়। এছাড়া ৩৪২টি স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়। এডিসের লার্ভা পাওয়ায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩টি মামলায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সাতারকুল অঞ্চলে (অঞ্চল-১০) মোট ৬০২টি বাড়ি/স্থাপনা পরিদর্শন করে ১টিতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেলে বাড়ির মালিককে সতর্ক করে লার্ভা ধ্বংস করা হয়। এছাড়া ৪৯৮টি বাড়ি/স্থাপনায় এডিস মশার প্রজনন উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায়।
চিরুনি অভিযান চলাকালে সম্ভাব্য সকল এডিস মশার প্রজননস্থলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনার সময় কীটনাশক ছিটানো হয়েছে এবং জনসাধারণকে এবিষয়ে পরবর্তীতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।