Dhaka ০৪:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছিলেন ১ কোটি, ১ দিনে ফিরেছেন ৪ লাখ!!

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১
  • 128

নিজস্ব প্রতিবেদক :

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকলেও থেমে নেই মানুষের বাড়ী যাওয়া ও ঢাকায় ফিরে আসা।

ঈদের আগে ১২ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ। আর ঈদের ছুটি শেষে একদিনই ঢাকায় ফিরেছেন চার লাখের বেশি মানুষ।

ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ঢাকায় ফিরে আসা মোবাইল ফোনের সিমের হিসেবে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ হিসেবে একজন সিম ব্যবহারকারীকে ইউনিক ব্যবহারকারী হিসেবে ধরা হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গত ৪ থেকে ১৫ মে ঢাকা থেকে চলে যাওয়া এবং শুধু ১৫ মে ঢাকায় চলে আসার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, শুধু ১৫ মে অর্থাৎ ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার আগের দিন শনিবার ঢাকায় ফিরেছেন চার লাখ ১২ হাজার ৭৬৩ সিমের মালিক। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৬ জন, রবির ছয় হাজার ১৪৩ জন, বাংলালিংকের এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৯৬ এবং টেলিটকের ৪০ হাজার ৩২৮ সিম ব্যবহারকারী রয়েছেন।

এরআগে ৪ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত নয় লাখ ২১ হাজার ৬৩৫ জন, ১৪ মে সাত লাখ ৯৯ হাজার ৩৮০ জন এবং ১৫ মে ঢাকা ছেড়েছেন আট লাখ ২৪ হাজার ৬৮২ জন সিমের মালিক। মোট ১২ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন এক কোটি ছয় লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৭ জন।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ফেসবুকে এক স্ট্যাটোসে জানান, ‘৪ থেকে ১৫ মে অবধি ঢাকা ছেড়েছে তার পরিমাণ কোটি অতিক্রম করেছে। একইসঙ্গে ১৫ মে কতটা সিম ঢাকা ফেরত এলা তার পরিমাণও দিলাম। আগেও বলেছিলাম এখনও বলছি ঈদের নামে কতজন কী নিয়ে বাড়ি গেছেন আর কতজন কী নিয়ে ফেরত আসছেন তা ভবিষ্যতই বলতে পারবে। আল্লাহ রহম করো। ’

গত ১৪ মে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের আগে এবং পরে শনিবার (১৫ মে) মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ফিরতে দেখা গেছে। ট্রাক, পিকআপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারে গাদাগাদি করে মানুষকে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেছে।

গণপরিবহন বন্ধে মানুষের এরকম গাদাগাদি করে বাড়ি যাওয়া এবং আসা করোনা সংক্রমণের জন্য মারাত্মক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ আশঙ্কায় ‘লকডাউন’ বেড়েছে এক সপ্তাহ। এদিকে, ঈদ উপলক্ষে যারা বাড়ি গেছেন তাদের ১৪ দিন গ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্যবিদ এবং জনস্বাস্থ্যবিদরা ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ফিরে আসায় করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন। এ অবস্থায় সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা বাড়ি গিয়েছেন, তাদের অফিস খোলা না হলে ১৪ দিন পর ঢাকায় ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

রোববার (১৬ মে) স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, যারা বাড়িতে গেছেন, এখনও অফিস খোলেনি, স্কুল-কলেজে দেরি করে ফিরলেও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তারা অন্তত সাত থেকে ১৪ দিন দেরি করে ঢাকায় ফিরবেন।

‘সরকারের পরামর্শ ছিল আমরা যেন এবারের ঈদে নিজ নিজ অবস্থান ছেড়ে বাইরে না যাই। কিন্তু আমরা দেখেছি, বড় সংখ্যক মানুষ এ পরামর্শ উপেক্ষা করেও নানাভাবে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেছেন। সেখানে কিছু মর্মান্তিক দৃশ্যও দেখেছি। ’

ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, যাদের এরই মধ্যে  উপসর্গ দেখা গেছে, তারা কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নেবেন। ফিরে আসার সময় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

ঈদ করতে ঢাকা ছেড়েছিলেন ১ কোটি, ১ দিনে ফিরেছেন ৪ লাখ!!

Update Time : ১২:১৩:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ মে ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক :

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকলেও থেমে নেই মানুষের বাড়ী যাওয়া ও ঢাকায় ফিরে আসা।

ঈদের আগে ১২ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন এক কোটির বেশি মানুষ। আর ঈদের ছুটি শেষে একদিনই ঢাকায় ফিরেছেন চার লাখের বেশি মানুষ।

ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ঢাকায় ফিরে আসা মোবাইল ফোনের সিমের হিসেবে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এ হিসেবে একজন সিম ব্যবহারকারীকে ইউনিক ব্যবহারকারী হিসেবে ধরা হয়েছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গত ৪ থেকে ১৫ মে ঢাকা থেকে চলে যাওয়া এবং শুধু ১৫ মে ঢাকায় চলে আসার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে তার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, শুধু ১৫ মে অর্থাৎ ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার আগের দিন শনিবার ঢাকায় ফিরেছেন চার লাখ ১২ হাজার ৭৬৩ সিমের মালিক। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৬ জন, রবির ছয় হাজার ১৪৩ জন, বাংলালিংকের এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৯৬ এবং টেলিটকের ৪০ হাজার ৩২৮ সিম ব্যবহারকারী রয়েছেন।

এরআগে ৪ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত নয় লাখ ২১ হাজার ৬৩৫ জন, ১৪ মে সাত লাখ ৯৯ হাজার ৩৮০ জন এবং ১৫ মে ঢাকা ছেড়েছেন আট লাখ ২৪ হাজার ৬৮২ জন সিমের মালিক। মোট ১২ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন এক কোটি ছয় লাখ ৪৫ হাজার ৬৯৭ জন।

টেলিযোগাযোগমন্ত্রী ফেসবুকে এক স্ট্যাটোসে জানান, ‘৪ থেকে ১৫ মে অবধি ঢাকা ছেড়েছে তার পরিমাণ কোটি অতিক্রম করেছে। একইসঙ্গে ১৫ মে কতটা সিম ঢাকা ফেরত এলা তার পরিমাণও দিলাম। আগেও বলেছিলাম এখনও বলছি ঈদের নামে কতজন কী নিয়ে বাড়ি গেছেন আর কতজন কী নিয়ে ফেরত আসছেন তা ভবিষ্যতই বলতে পারবে। আল্লাহ রহম করো। ’

গত ১৪ মে শুক্রবার ঈদুল ফিতর উদযাপনের আগে এবং পরে শনিবার (১৫ মে) মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ফিরতে দেখা গেছে। ট্রাক, পিকআপভ্যান, মাইক্রোবাস এবং প্রাইভেটকারে গাদাগাদি করে মানুষকে যাওয়া-আসা করতে দেখা গেছে।

গণপরিবহন বন্ধে মানুষের এরকম গাদাগাদি করে বাড়ি যাওয়া এবং আসা করোনা সংক্রমণের জন্য মারাত্মক আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ আশঙ্কায় ‘লকডাউন’ বেড়েছে এক সপ্তাহ। এদিকে, ঈদ উপলক্ষে যারা বাড়ি গেছেন তাদের ১৪ দিন গ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

স্বাস্থ্যবিদ এবং জনস্বাস্থ্যবিদরা ঢাকা ছেড়ে যাওয়া এবং ফিরে আসায় করোনা সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন। এ অবস্থায় সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে যারা বাড়ি গিয়েছেন, তাদের অফিস খোলা না হলে ১৪ দিন পর ঢাকায় ফেরার অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

রোববার (১৬ মে) স্বাস্থ্য বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, যারা বাড়িতে গেছেন, এখনও অফিস খোলেনি, স্কুল-কলেজে দেরি করে ফিরলেও কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, তারা অন্তত সাত থেকে ১৪ দিন দেরি করে ঢাকায় ফিরবেন।

‘সরকারের পরামর্শ ছিল আমরা যেন এবারের ঈদে নিজ নিজ অবস্থান ছেড়ে বাইরে না যাই। কিন্তু আমরা দেখেছি, বড় সংখ্যক মানুষ এ পরামর্শ উপেক্ষা করেও নানাভাবে ঘরে ফেরার চেষ্টা করেছেন। সেখানে কিছু মর্মান্তিক দৃশ্যও দেখেছি। ’

ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, যাদের এরই মধ্যে  উপসর্গ দেখা গেছে, তারা কাছের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে আরটি-পিসিআর পরীক্ষা অবশ্যই করিয়ে নেবেন। ফিরে আসার সময় শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।