Dhaka ০৫:০২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে গরু-মুরগির বাড়তি দাম, ক্রেতা কম মাছের বাজারে

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫
  • ১৬ Time View

পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর দুইদিন। শেষ মুহূর্তে চলছে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি। তবে বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে সবধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের সপ্তাহখানেক আগেই একদফায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে মুরগির দাম। ঈদের আগেরদিন হয়ত আরেক দফায় বাড়ানো হবে দাম। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় মাছের বাজার ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীসহ পার্শ্ববর্তী একাধিক বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১৫ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, যা রোজার মাঝামাঝিতেও ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। আজকের বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা পর্যন্ত, ছিল ২৭০-২৮০ টাকা পর্যন্ত। লাল লেয়ারও বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগির দামেই। এছাড়াও সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।

এদিকে আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগেও ৭৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

বাজারে তুলনামূলক মাছের চাহিদা কম থাকায় ঈদের উত্তাপ লাগেনি দামে। প্রতি কেজি পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, সরপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি বড় আকৃতির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত, মাঝারি আকৃতির রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় এবং কোরাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। আজকের বাজারে প্রতি কেজি পাবদা ৪০০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা ও চিংড়ি ৬৫০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ-মাংস বাজার প্রসঙ্গে জিয়াউল হক নামক এক ক্রেতা বলেন, বাজারে মাছের দাম স্বাভাবিক থাকলেও মুরগি-গরুর দামটা একটু বেশি। যে দোকান থেকে সবসময় ৭৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস নেই, সেখান থেকেই আজকে ৮০০ টাকায় নিয়েছি। ব্রয়লার মুরগি নিয়েছি ২২০ টাকায়।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সাধারণত বাজারে দামের এ চিত্র দেখা যায়। সেই হিসেবে তো আর কিছু বলার নেই। তাই স্বাভাবিক ভেবেই যা যতটুকু কেনার কিনেছি। এবার ঈদের পরপর দামটা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় চল আসলেই হয়। সমস্যাটা হলো আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম বাড়লে সেটি আর কমতে চায় না।

আনিসুজ্জামান নামক আরেক ক্রেতা বলেন, দুই দিন বাদে ঈদ, এখন তো আর দামাদামি করে কেনার সুযোগ নাই। অন্যান্য সময়ের তুলনায় ১০/২০ টাকা বেশি হলেও নিতে হবেই। তবে অন্যান্য বছর তুলনায় এই ঈদে সবকিছুর দাম তুলনামূলক কমই আছে। রোজাতেও কেনাকাটায় আমাদের বেশ স্বস্তি মিলেছে।

বনশ্রী এলাকার মুরগি মাংস ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, গত দু-চার দিনে আমর নতুন করে মুরগির দাম বাড়াইনি, যা বেড়েছে আগেই। তবে এই সপ্তাহে পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে, যদিও আমরা আগের দামেই বিক্রি করছি। কাল-পরশু যদি পাইকারি বাজারের দাম আরও বাড়ে, তাহলে আমাদেরও হয়ত কিছু বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ঈদ আসলে আমরা যে দাম বাড়িয়ে আহামরি ব্যবসা করি, এরকম না। একটা মুরগিতে সর্বোচ্চ ১৫-২০ টাকা থাকে। এটা না রাখলে আমরা চলতে পারব না, কারণ আমাদেরও খরচ আছে। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ _এসব শেষে সর্বোচ্চ কেজিপ্রতি ৫/১০ টাকা লাভ থাকে।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়া বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে মাছের বাজারে কোনো পরিবর্তন নেই। বরং অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই সময়টাতে বেচাকেনা খুবই কম থাকে। যে কারণে মাছের বাজারও কিছুটা নিম্নমুখী থাকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

ঈদে গরু-মুরগির বাড়তি দাম, ক্রেতা কম মাছের বাজারে

Update Time : ০৬:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫

পবিত্র ঈদুল ফিতরের বাকি আর দুইদিন। শেষ মুহূর্তে চলছে ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি। তবে বাড়তি চাহিদা বিবেচনায় ঈদকে কেন্দ্র করে বেড়েছে সবধরনের মুরগি ও গরুর মাংসের দাম। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের সপ্তাহখানেক আগেই একদফায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে মুরগির দাম। ঈদের আগেরদিন হয়ত আরেক দফায় বাড়ানো হবে দাম। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় মাছের বাজার ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম দেখা গেছে।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীসহ পার্শ্ববর্তী একাধিক বাজার ঘুরে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১৫ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, যা রোজার মাঝামাঝিতেও ছিল ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। আজকের বাজারে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৩০ টাকা পর্যন্ত, ছিল ২৭০-২৮০ টাকা পর্যন্ত। লাল লেয়ারও বিক্রি হচ্ছে সোনালি মুরগির দামেই। এছাড়াও সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।

এদিকে আজকের বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগেও ৭৫০ থেকে সর্বোচ্চ ৭৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতিকেজি খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

বাজারে তুলনামূলক মাছের চাহিদা কম থাকায় ঈদের উত্তাপ লাগেনি দামে। প্রতি কেজি পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, সরপুঁটি মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজিতে। প্রতি কেজি বড় আকৃতির রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত, মাঝারি আকৃতির রুই বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় এবং কোরাল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা। আজকের বাজারে প্রতি কেজি পাবদা ৪০০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা ও চিংড়ি ৬৫০-৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১২০০ টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, টেংরা ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, দেশি কৈ ৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা ও দেশি শিং ১০০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছ-মাংস বাজার প্রসঙ্গে জিয়াউল হক নামক এক ক্রেতা বলেন, বাজারে মাছের দাম স্বাভাবিক থাকলেও মুরগি-গরুর দামটা একটু বেশি। যে দোকান থেকে সবসময় ৭৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস নেই, সেখান থেকেই আজকে ৮০০ টাকায় নিয়েছি। ব্রয়লার মুরগি নিয়েছি ২২০ টাকায়।

তিনি বলেন, প্রতিদিন সাধারণত বাজারে দামের এ চিত্র দেখা যায়। সেই হিসেবে তো আর কিছু বলার নেই। তাই স্বাভাবিক ভেবেই যা যতটুকু কেনার কিনেছি। এবার ঈদের পরপর দামটা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় চল আসলেই হয়। সমস্যাটা হলো আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম বাড়লে সেটি আর কমতে চায় না।

আনিসুজ্জামান নামক আরেক ক্রেতা বলেন, দুই দিন বাদে ঈদ, এখন তো আর দামাদামি করে কেনার সুযোগ নাই। অন্যান্য সময়ের তুলনায় ১০/২০ টাকা বেশি হলেও নিতে হবেই। তবে অন্যান্য বছর তুলনায় এই ঈদে সবকিছুর দাম তুলনামূলক কমই আছে। রোজাতেও কেনাকাটায় আমাদের বেশ স্বস্তি মিলেছে।

বনশ্রী এলাকার মুরগি মাংস ব্যবসায়ী ওমর ফারুক বলেন, গত দু-চার দিনে আমর নতুন করে মুরগির দাম বাড়াইনি, যা বেড়েছে আগেই। তবে এই সপ্তাহে পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা বেড়েছে, যদিও আমরা আগের দামেই বিক্রি করছি। কাল-পরশু যদি পাইকারি বাজারের দাম আরও বাড়ে, তাহলে আমাদেরও হয়ত কিছু বাড়াতে হবে।

তিনি বলেন, ঈদ আসলে আমরা যে দাম বাড়িয়ে আহামরি ব্যবসা করি, এরকম না। একটা মুরগিতে সর্বোচ্চ ১৫-২০ টাকা থাকে। এটা না রাখলে আমরা চলতে পারব না, কারণ আমাদেরও খরচ আছে। দোকান ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারী খরচ _এসব শেষে সর্বোচ্চ কেজিপ্রতি ৫/১০ টাকা লাভ থাকে।

রামপুরা বাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ শওকত মিয়া বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে মাছের বাজারে কোনো পরিবর্তন নেই। বরং অন্যান্য সময়ের তুলনায় এই সময়টাতে বেচাকেনা খুবই কম থাকে। যে কারণে মাছের বাজারও কিছুটা নিম্নমুখী থাকে।