Dhaka ০৪:৫৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদের ছুটিতে জনশূন্য ঢাকার রাজপথ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
  • ১২ Time View

ব্যস্ত সড়ক-মহাসড়কগুলোতে নেই গাড়ির শব্দ, যানজট, পথচারীদের হুড়োহুড়ি এবং কর্মব্যস্ততা। যান্ত্রিক কোলাহলে ভরা শহরটি এখন একেবারেই শান্ত ও নীরব। ঈদের ছুটিতে এমনই ফাঁকা এক রাজধানী দেখছেন ঢাকায় রয়ে যাওয়া মানুষজন। তারা বলছেন, সবসময় এমন ঢাকা হলে পুরো পরিবেশটাই পাল্টে যেতো। ঢাকা হয়ে উঠতো সত্যিকারের বাসযোগ্য শহর।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, বাংলা মোটর, মগবাজার মোড় ঘুরে দেখা গেছে, সড়কগুলো একেবারেই ফাঁকা। চলছে হাতেগোনা কিছু গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি। তবে ব্যাটারি ও প্যাডেল চালিত রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শপিং মল, বাজার ও অফিসপাড়া প্রায় ফাঁকা।

সাইফুল ইসলাম নামের বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সারা বছর ঢাকায় এত যানজট, এত ভিড় থাকে যে বাইরে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু এখনকার এই নিরিবিলি পরিবেশ দেখলে মনটাই ভালো হয়ে যায়। যদি সবসময় এমন থাকতো তবে খুবই ভালো হতো।

রুবিনা আক্তার নামে একজন বলেন, চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতে হয়। সড়কে অন্যান্য সময় এত যানজট থাকে যে তখন মনে হয় অন্য কোথাও সুযোগ থাকলে চলে যাই। কিন্তু ঈদের ছুটিতে একটু শান্তি মেলে। এমন ঢাকা থাকলে আমাদের মতো কর্মজীবী মানুষের জীবন অনেক সহজ হতো।

তানভীর হোসেন নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর এক দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকালও ঈদের নামাজের পর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে করে পুরো শহরটা উপভোগ করেছি। খুব ভালো লেগেছে।

তবে মানুষের সংখ্যা কম থাকায় আয়ে টান পড়েছে বলে জানান রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ। তিনি বলেন, যাত্রী কম, তাই আয়-রোজগারও কমে গেছে। তবে ভালো দিক হলো, কোনো জ্যাম নেই, রাস্তায় রিকশা চালানো সহজ লাগছে।

ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের চালকের সহকারী রবিউল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বিকেল থেকে রাত অবধি প্রচুর যাত্রী হচ্ছে। এই সপ্তাহ পুরোটাই এমন কম যাত্রী পাওয়া যাবে। এরপর সবকিছু খোলা হলে হয়তো আগের মতো যাত্রীর ভিড় থাকবে।

অন্যদিকে, সড়ক ফাঁকা থাকায় ট্রাফিক পুলিশদেরও দায়িত্ব পালনেও চাপ কম পোহাতে হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল দিতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, এবার সবমিলিয়ে টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি ভোগ করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সে অনুযায়ী, ছুটি শেষে আগামী ৬ এপ্রিল খুলবে অফিস-আদালত। তার আগ পর্যন্ত ঢাকা কিছুটা ফাঁকা থাকার সম্ভাবনাই রয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Raj Kalam

ঈদের ছুটিতে জনশূন্য ঢাকার রাজপথ

Update Time : ০৫:১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫

ব্যস্ত সড়ক-মহাসড়কগুলোতে নেই গাড়ির শব্দ, যানজট, পথচারীদের হুড়োহুড়ি এবং কর্মব্যস্ততা। যান্ত্রিক কোলাহলে ভরা শহরটি এখন একেবারেই শান্ত ও নীরব। ঈদের ছুটিতে এমনই ফাঁকা এক রাজধানী দেখছেন ঢাকায় রয়ে যাওয়া মানুষজন। তারা বলছেন, সবসময় এমন ঢাকা হলে পুরো পরিবেশটাই পাল্টে যেতো। ঢাকা হয়ে উঠতো সত্যিকারের বাসযোগ্য শহর।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সকালে সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, বাংলা মোটর, মগবাজার মোড় ঘুরে দেখা গেছে, সড়কগুলো একেবারেই ফাঁকা। চলছে হাতেগোনা কিছু গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি। তবে ব্যাটারি ও প্যাডেল চালিত রিকশা, সিএনজি, মোটরসাইকেলের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শপিং মল, বাজার ও অফিসপাড়া প্রায় ফাঁকা।

সাইফুল ইসলাম নামের বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, সারা বছর ঢাকায় এত যানজট, এত ভিড় থাকে যে বাইরে বের হতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু এখনকার এই নিরিবিলি পরিবেশ দেখলে মনটাই ভালো হয়ে যায়। যদি সবসময় এমন থাকতো তবে খুবই ভালো হতো।

রুবিনা আক্তার নামে একজন বলেন, চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকতে হয়। সড়কে অন্যান্য সময় এত যানজট থাকে যে তখন মনে হয় অন্য কোথাও সুযোগ থাকলে চলে যাই। কিন্তু ঈদের ছুটিতে একটু শান্তি মেলে। এমন ঢাকা থাকলে আমাদের মতো কর্মজীবী মানুষের জীবন অনেক সহজ হতো।

তানভীর হোসেন নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ঈদের সময় ঢাকার ফাঁকা রাস্তাগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর এক দারুণ সুযোগ পাওয়া যায়। গতকালও ঈদের নামাজের পর থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে করে পুরো শহরটা উপভোগ করেছি। খুব ভালো লেগেছে।

তবে মানুষের সংখ্যা কম থাকায় আয়ে টান পড়েছে বলে জানান রিকশাচালক মোহাম্মদ আরিফ। তিনি বলেন, যাত্রী কম, তাই আয়-রোজগারও কমে গেছে। তবে ভালো দিক হলো, কোনো জ্যাম নেই, রাস্তায় রিকশা চালানো সহজ লাগছে।

ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের চালকের সহকারী রবিউল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বিকেল থেকে রাত অবধি প্রচুর যাত্রী হচ্ছে। এই সপ্তাহ পুরোটাই এমন কম যাত্রী পাওয়া যাবে। এরপর সবকিছু খোলা হলে হয়তো আগের মতো যাত্রীর ভিড় থাকবে।

অন্যদিকে, সড়ক ফাঁকা থাকায় ট্রাফিক পুলিশদেরও দায়িত্ব পালনেও চাপ কম পোহাতে হচ্ছে। তবে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন পয়েন্টে টহল দিতে দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, এবার সবমিলিয়ে টানা ৯ দিনের লম্বা ছুটি ভোগ করছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সে অনুযায়ী, ছুটি শেষে আগামী ৬ এপ্রিল খুলবে অফিস-আদালত। তার আগ পর্যন্ত ঢাকা কিছুটা ফাঁকা থাকার সম্ভাবনাই রয়েছে।