ড. সুবীর মণ্ডল, বাঁকুড়া জেলা প্রতিনিধি :
“মা ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন” একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এই মোহময় দুঃসময়ে অমলিন ভালোবাসার দরজা খুলে দিয়েছে।
এক অসাধারণ মানবিক ভাবনা নিয়ে এর জন্ম। ভবঘুরে , গৃহ থেকে বহিস্কৃত ,পাগল, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ২৬ শে মে ২০২১ থেকে আজ ২৭ এ মে অব্দি। বাংলার বুকের উপর দিয়ে অতিক্রান্ত সাইক্লোন “ইয়স” এর ভ্রুকুটি থেকে বাঁচানোর জন্যই এই পদক্ষেপ গ্রহণ।
গৃহহারা মানুষদের জল ঝড়ে রাস্তায় ফেলে রাখা মুশকিল, তাদের কথা ভেবে এই সংস্থা – এর তরফ থেকে আজ অব্দি এই গৃহহারা অসহায় মানুষদের খাদ্য পানীয় বাসস্থান এর সম্পূর্ণ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তাদের একত্রিত করে গাড়ি ভাড়া করে নিয়ে আসা থেকে শুরু করে খাওয়ানো সবকিছুই করছে এই সংস্থার কর্ণধার শ্রেয়সী হাজরা। এই সংস্থার কর্ণধার শ্রেয়সী বললেন–“সুন্দরবন এবং পূর্ব মেদিনীপুর অঞ্চলের জন্য মন ভীষণভাবে কাঁদছে, তবু এটুকুই বলতে পারি সেই সব মানুষগুলোর উদ্দেশ্যে বুকের জোর রাখুন।
আমি জানি আমার এইটুকু বলাতে তাদের ক্ষতি কোন অংশেই কমবে না, তবুও একজন মানুষ হিসেবে একজন মানুষকে এটুকুই বলতে পারি এই মুহূর্তে।
একা একজন সাধারণ মানুষ হিসাবে অনেকদিন ধরে এই লড়াইটি চালিয়ে যাচ্ছি শুধুমাত্র ভগবান রূপী সাধারণ মানুষের আশীর্বাদ গ্রহণ করে, অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা অতিক্রম করে।
আগের বারের সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কাজ করেছিলাম এবারেও দেখা যাক ঈশ্বর কি চান।
তবে এটুকুই বলবো সুন্দরবনের মানুষের ত্রাণের চেয়েও বেশি দরকার কোন পার্মানেন্ট ব্যবস্থা।
কারণ বাংলার সুন্দরী সুন্দরবনকে প্রতিবছর এভাবে বিধ্বস্ত হতে দেখা যায় না।
আশীর্বাদ দেবেন পাশে থাকবেন এভাবে কাজ করে যেতে চাই”। এইভাবেই বাঁকুুুুড়া জেলার নানান জায়গায় সামাজিক কাজ চলছে একেবারেই নীরবে। একঝাঁক তরুণ প্রজন্মকে দেখা যাচ্ছে মানুষের জন্য নিজেদের উজাড় করে দেওয়ার মানবিক প্রয়াস। এছাড়াও খাতড়া শহরের স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান লাইফ লাইনের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শহরের কয়েকটি স্কুলে আছেন কয়েক হাজার মানুষ, যারা গৃহহীন । শ্রী জয়ন্ত মিত্র মহাশয় একঝাঁক তরুণদের নিয়ে মানব কল্যানে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে চলেছেন। একদম প্রচার বিমুখ মানুষ। বহু দিন ধরে মানুষের জন্য কাজ করে চলেছেন নিরবচ্ছিন্নভাবে। কোন প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ওনার কর্ম পরিধি বহু ব্যাপ্ত। বাঁকুড়ার খাতড়া শহরের বহু মানব হিতৈষি কাজ তার অকাট্য প্রমাণ।
ভয়াবহ ইয়াস ঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষদের সাহায্যার্থে “পাশে আছি খাতড়া” নামক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের মহতী উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে খাতড়া শহরের বুুুকে। সংস্থার পক্ষ থেকে শ্রী অজয় পাত্র জানালেন –” ২৬ এবং ২৭, ২ দিনে শ্যামপুর এবং খাতড়া বাগদী পাড়ায় প্রায় ৮০ টি পরিবারের হাতে কিছু শুকনো খাবার তুলে দিলাম.আমরা যাতে আগামী দিনে এভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি সেই জন্য আপনাদের সাহায্য এবং আশীর্বাদ প্রয়োজন “। লাইফ লাইনের সদস্য মিলাদ্রী মাহাত জানালেন — ” ইয়াসের তাণ্ডবলীলায় এই জেলার ক্ষতির পরিমাণ বেশ কম ,তাই আমরা ছোট ছোট কাজ করে চলেছি।
ভারতীয় সেনা জওয়ান, বিদ্যুৎকর্মী, দমকলকর্মী, পুলিশকর্মী ও বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা শিবির কর্মীদের সেলাম জানিয়ে এই ছোট্ট কর্মকান্ড আপাতভাবে সমাপ্ত করলাম।
“যশ” বা “ইয়াস” ঝড় মোকাবিলায় আমরা ২২ জনের একটি বিশেষ দল করেছিলাম। যদিও এই ঝড় আমাদের এলাকায় সেরকম কিছু ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারেনি তাই আমাদের দায়িত্ব সেরকম আসেনি। তার মধ্যেও একটি ত্রাণ শিবিরে রানার জন্য গ্যাসের যোগান ,শুকনো খাবার হিসেবে মুড়ি দেওয়ার পাশাপাশি একটি পাড়ায় গাছের ডাল পরিষ্কার করতে আমাদের ডাক পড়েছিল এবং আমরা সেটা করেছি। উপকূলবর্তী এলাকায় ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ যথেষ্ট বেশি,সেখানকার দ্রুত ক্ষতিপূরনের মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফিরে আসতে পারার কামনা করছি।প্রয়োজনে মানুষের লাইফলাইন হতে আমরা সদা প্রস্তুত ও তৎপর।
#Be_a_lifeline”।