আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়োগো ম্যারাডোনা আর নেই। বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে নিজ বাসায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি।
নভেম্বরের প্রথম দিকে মস্তিস্কে রক্তজমাট বাঁধার কারণে অস্ত্রোপচার হয়েছিল ম্যারাডোনার। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার দুই সপ্তাহ পর তার মৃত্যু হলো।
গত কয়েক বছর ধরে স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন ম্যারাডোনা। পাকস্থলীর ভিতরে রক্তক্ষরণের কারণে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়ার ম্যাচে অসুস্থবোধ করায় শেষ পর্যন্ত খেলা দেখতে পারেননি তিনি।
সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার খ্যাত ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতান ১৯৮৬ সালে। পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনা জুনিয়র্স, বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া এবং নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেছেন।
ম্যারাডোনা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনার হয়ে ৯১ খেলায় ৩৪টি গোল করেন। তিনি চারটি ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছিলেন। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণপদক জেতেন।
১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে তিনি তার বিখ্যাত ‘হাত দিয়ে গোল’টি করেন, যেটি ‘হ্যান্ড অফ গড’ নামে কিংবদন্তি গোল হিসাবে পরিচিতি লাভ করে।
১৯৯০ সালে আর্জেন্টিনা যখন ফাইনালে ওঠে তখন দলকে নেতৃত্ব দেন ম্যারাডোনা। ইতালিতে ওই খেলায় তাদের হারিয়ে দেয় পশ্চিম জার্মানি। এরপর ১৯৯৪ সালে তিনি আবার আমেরিকায় আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কত্ব করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অবৈধ মাদক পরীক্ষায় ফেল করার কারণে তাকে আর্জেন্টিনা ফিরে যেতে হয়।
তার জীবনের পরের দিকে ম্যারাডোনা কোকেন আসক্তি নিয়ে সমস্যায় ছিলেন এবং ১৯৯১ সালে তার শরীরের মাদকের উপস্থিতি ধরা পড়লে তাকে ১৫ মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়।
তার ৩৭তম জন্মদিনে ১৯৯৭ সালে তিনি পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নেন। সেসময় তিনি আর্জেন্টিনার বড় দল বোকা জুনিয়ার্সে খেলছিলেন।
ম্যারাডোনা ২০০৮ সালে জাতীয় দলের কোচ নিযুক্ত হন। এবং ২০১০ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা জার্মানির কাছে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাবার পরে তিনি কোচের পদ থেকে অবসর নেন।