নিজস্ব প্রতিবেদক:
উখিয়ার রোহিঙ্গা পল্লীর গিঞ্জি পরিবেশ ছেড়ে তুলনামূলক উন্নত জীবন যাপনের আশায় পঞ্চম ধাপের দ্বিতীয় দিনে আরও ১ হাজার ৭৫৯ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রাম ছেড়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে রোহিঙ্গাদের বহনকারী নৌবাহিনীর ৫টি জাহাজ ভাসানচরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। প্রথম দিনে বুধবার ২ হাজার ২৬০ রোহিঙ্গা ভাসানচরে যান। এ পর্যন্ত এনিয়ে ভাসান চর গেলেন মোট ১৩ হাজার ৫৫৯ জন। এর আগে টেকনাফ ও উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে বাসে করে এনে চট্টগ্রামে বিএএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা হয় রোহিঙ্গাদের। সেখান থেকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ভাসানচরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে তারা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘কয়েক ধাপে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার রোহিঙ্গা ভাসানচরে গেছেন। তারা সেখানে এই শিবিরগুলোর চেয়ে অনেক ভাল পরিবেশে রয়েছে। এটি সরকারের একটি চলমান প্রক্রিয়া। পর্যায়েক্রমে এক লাখ রোহিঙ্গাকে নেওয়া হবে ভাসানচরে।’
রোহিঙ্গা মাঝিরা বলেন, ‘স্বেচ্ছায় রাজি হয়ে রোহিঙ্গারা ভাসানচর গিয়ে সেখানকার পরিবেশ, থাকা খাওয়ার সুবিধা উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জানালে যারা যেতে রাজি হয়েছে, তাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।’
রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ উল্লাহ বলেন, ‘বর্তমান জীবন-যাপনের চেয়ে অনেকটা উন্নত ভাসানচর। আমরা সাধারণ রোহিঙ্গা ভাইদের বুঝাচ্ছি যাতে তারা নিজ ইচ্ছায় ভাসানচর যায়। সেখানে তারা ভাল থাকবেন। যারা ভাসানচরে গেছে তারা অনেক ভাল আছে বলে শুনছি।’
উল্লেখ্য, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও সরকারের দমন-পীড়নে নিপীড়িত ও বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বর্তমানে টেকনাফ ও উখিয়ার ক্যাম্পগুলোতে বসবাস করছে। তাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। তবে এখানকার ঘিঞ্জি পরিবেশ থেকে আপাতত নিরাপদ জীবনযাপনের জন্য অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ১৩ হাজার রোহিঙ্গা চলে গেছে।