২০১৩ সালের ৫ই মে। হেফজতের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ঘিরে দিনভর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ। সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ভাঙচূর ও বিভিন্ন স্থাপনায় আগুনও ধরিয়ে দেয় হেফাজত কর্মীরা। পরে অভিযানের মধ্যদিয়ে দমন হয় নাশকতা। পরবর্তীকালে তদন্তে বেরিয়ে আসে নাশকতার পেছেনে-হাত ছিল জামাত-শিবিরের।
আবারও হেফাজতে সামিল হচ্ছে জামাতের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি রাজধানীতে হেফাজতের ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ঘিরে ছিল জামাতকর্মীদের সরব উপস্থিতি।
খোঁজ নিয়ে দেখাযায়, সম্প্রতি রাজধানীতে ফ্রান্স দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচিতে বহু মানুষ জড়ো হয়। মূলত হেফাজতের মিছিলে এসে মেলে জামাতকর্মীরা। কর্মসূচিতে জামাতের অর্থায়নও ছিল। নেতৃত্বে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন সাইদীর পুত্র শামীম সাইদী।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে শামীম সাইদী বলেন, ‘আমরা তো মুসলমান হিসিবেই অংশগ্রহণ করেছি। সেখানে আমরা যারা ছিলাম, সেখানে হেফাজতের কোন নেতাকর্মী ছিলেন না, বিশেষ করে আমি যে ব্যানারে ছিল। কাজেই হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোন দূরত্ব নেই।’
তবে আলেমরা মনে করেন সমাবেশের গায়ে কালিমা দিতেই সেদিন জামাত এসে মিশে ছিল। এ ব্যাপারে রাজধানীর আম্বর শাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি যে, আমাদের রাসূল (সা.) নিয়ে করা আন্দোলনে অনেকে রাজনৈতিক দাবিও ঢুকিয়েছেন। হেফাজতের অনেকে রয়েছে, যারা জামায়াতের সাথে লেয়াজু কমিটেত তথা ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। অনেক সময় তারাও একমত হয়ে দেখা যায় এ আন্দোলনগুলো করেন।’
জামাতের এই সুক্ষ কৌশল থেকে বাচতে হেফাজতের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার।
তিনি বলেন, ‘শুধু জামায়াতে ইসলাম নয়, যেকোন উগ্র দলই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। হেফাজতের ইসলাম যারা করেন, তাদেরও মৌলিক কথা শান্তি। তারপরও তাদের সাবধান থাকা দরকার যে, এখানে এমন কোন লোক অনুপ্রবেশ না করে যাতে তাদের ভালও কিছুও খারাপে পরিণত হয়।’
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলছেন, ‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সংগঠনটি এখনো বিদেশী শক্তির মদদ পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘হেফাজত যেটি ডাক দিয়েছে, সেটিতে জামায়াতের অংশগ্রহণ আজকের না। এরকম রাজনৈতিক সমাবেশ করে যদি কোন অঘটন ঘটে যায়, সেটি বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি আছে সেটি মারাত্মকভাবে ব্যহত হবে।’
৫ মের ঘটনা থেকে হেফাজতের শিক্ষা উচিত মন্তব্য করে আবদুর রশীদ বলেন, ‘এখানে যে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে, তা মূলত একধরনের পেশার তৈরি জন্য।