স্পোর্টস ডেস্ক :

৩৩ বলে ৩৮ রান, হাতে ৮ উইকেট। সবচেয়ে বড় কথা উইকেটে দুই সেট ব্যাটার, এমন ম্যাচের ফল অনুমান করা কঠিন কিছু নয়। ফল দিল্লির পক্ষেই এসেছে, তবে যতটা সহজে আসার কথা ছিল সেটা হয়নি।

শেষ দিকে মুম্বাই বোলারদের নো বলের হিড়িকে ৫ বল হাতে রেখে জয় পেলেও রোমাঞ্চের আভাস ছিল ম্যাচে।

১৩৮ রানের লক্ষ্যটা সহজ মনে হলেও চেন্নাইয়ের রহস্যময় উইকেটে সেটা যে মোটেও সহজ হবে না তা অজানা ছিল না দিল্লি ক্যাপিটালসেরও। সেটা আরও ভালো ভাবে উপলব্ধি করতে পারে শুরুতেই পৃথ্বী শ ফিরে গেলে, ১১ রান প্রথম উইকেট হারালেও দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার শেখর ধাওয়ান ও স্টিভেন স্মিথ পরিস্থিতি সামলে নেন।

দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৫৩ রান, পরিস্থিতি দাবী মেটানো দারুণ ব্যাটিং করা স্মিথ ফিরেন কাইরন পোলার্ডের মিডিয়াম পেসে লেগ-বিফোর হয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৩৩ রানের ইনিংস, ললিত যাদবকে নিয়ে আরও ৩৬ রান যোগ করেন শেখর ধাওয়ান।

ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ যখন দিল্লি ক্যাপিটালসের দিকেই সে সময় অপ্রয়োজনীয় আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে আউট হন ধাওয়ান, তার ব্যাট হতে আসে ৪২ বলে ৪৫ রানের ইনিংস। ধাওয়ানের আউটে কিছুটা চাপে পড়ে দিল্লি, পরপর ৬ বল ডট দেন রিশাভ পান্ত ও ললিত যাদব। ট্রেন্ট বোল্টকে ৪ মেরে দলকে চাপ মুক্ত করার দায়িত্ব নেন রিশাভ পান্ত, ওই ওভারে আসে ৬ রান।

শেষ ৪ ওভারে ৩১ রানের সমীকরণ, মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় অস্ত্র জাসপ্রিত বুমরাহকে বোলিং আক্রমণে নিয়ে আসেন রোহিত শর্মা। বুমরাহর ওভারে ৯ রান এলেও আউট হন অধিনায়ক রিশাভ পান্ত, তার ব্যাট থেকে আসে ৭ রান। ট্রেন্ট বোল্টের ওভার থেকে আসে ৭ রান, সমীকরণ নেমে আসে ১২ বলে ১৫ রানে।

মুম্বাইয়ের আশার প্রদীপ হয়ে জ্বলছিলো বর্তমানে বিশ্বের সেরা ডেথ বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ, তবে আজ আর তার নায়ক হয়ে ওঠা হয়নি। বরং চাইলে ভিলেনও বলা যায়, ২ নো বলে দিল্লিকে সহজ জয়ের পথেই পৌঁছে দেন বুমরাহ। শেষ ওভারে ৫ রান প্রয়োজন হলেও কাইরন পোলার্ডের প্রথম বলেই চার মেরে দলের জয় নিশ্চিত করেন শিমরন হেটমায়ার।

পরের বল নো করলে ৫ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটের জয় পায় দিল্লি ক্যাপিটালস, এটি তাদের টুর্নামেন্টে চতুর্থ ম্যাচে তৃতীয় জয়। ললিত যাদব ২৩ ও শিমরন হেটমায়ার ১৪ রানে অপরাজিত থাকেন, মুম্বাইয়ের হয়ে ১ টি করে উইকেট নেন জায়ান্ত যাদব, জাসপ্রিত বুমরাহ, রাহুল চাহার ও কাইরন পোলার্ড।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ৩ বিদেশি নিয়ে মাঠে নামে দলটি। বাদ পড়েন অ্যাডাম মিলনে, কন্ডিশনের কারণে সুযোগ পান অফ-স্পিনার জায়ান্ত যাদব। ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ রানেই আউট হন ৪ বলে ১ রান করা কুইন্টন ডি কক, তবে দ্বিতীয় উইকেটে সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে ৫৮ রান যোগ করেন রোহিত।

১৫ বলে ৪ চারে ২৪ রান করে ফিরেন দারুণ ছন্দে থাকা সূর্যকুমার যাদব, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের ক্রিকেটাররা তখনও বুঝতে পারেনি কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। ৩০ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৪৪ রান করা রোহিতের আউটে বিপত্তির শুরু, অমিত মিশ্রর ঘূর্ণিতে মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ের পড়ে মুম্বাই।

একে একে ফিরে যান হার্দিক পান্ডিয়া, ক্রুনাল পান্ডিয়া ও কাইরন পোলার্ড, তাদের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ০, ১ ও ২ রান। ঈশান কিষাণ ও জায়ান্ত যাদব ৩৯ রানের জুটি গড়ে মুম্বাইকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেন, ঈশান কিষাণ ২৬ ও জায়ান্ত যাদব ২৩ রান করেন। মুম্বাই ৯ উইকেটে ১৩৭ রানের সংগ্রহ পায়।

দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে মুম্বাইয়ের মিডল অর্ডার ধ্বসিয়ে দেন অমিত মিশ্র, ২ ওভারে ১৫ রান খরচায় ২ উইকেট পেয়েছেন আভিস খান; ১ টি করে উইকেট পেয়েছেন মারকুস স্টয়নিস, কাগিসো রাবাদা ও ললিত যাদব।

সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ

মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ১৩৭/৯ (রোহিত শর্মা ৪৪, সূর্যকুমার যাদব ২৪, ঈশান কিষাণ ২৬, জায়ান্ত যাদব ২৩, রাহুল চাহার ৬, অমিত মিশ্র ৪/২৪, আভিস খান ২/১৫, ললিত যাদব ১/১৭)।

দিল্লি ক্যাপিটালস ১৩৮/৪ (১৯.১ ওভার; শেখর ধাওয়ান ৪৫, স্টিভেন স্মিথ ৩৩, ললিত যাদব ২৩*, রিশাভ পান্ত ৭, শিমরন হেটমায়ার ১৪*, কাইরন পোলার্ড ১/৯, জায়ান্ত যাদব ১/২৫)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে