অনুকূল বিশ্বাস,মালদহ জেলা প্রতিনিধি:
‘ আকাশে বাতাসে শিশিরের ঘ্রাণে
শিউলি শরৎ আনমনে ব্যাকুল।
মেঘলা আকাশে হৃদয় মেলায়ে
দিকে দিকে হাসে কাশফুল’।
শরতের প্রারম্ভে শিউলি যখন ফুটতে ব্যাকুল,বাতাসে যখন শিশিরে ঘ্রাণের আভাস,আকাশে তখন পেঁজা তুলোর ন্যায় ভাসমান সাদা মেঘের ঘনঘটা।এমনই এক সন্ধিক্ষণে ১৯শে আগষ্ট ,২০২২এ,মালদা শহরের বিনয় সরকার অতিথি আবাসের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মিটিং হলএ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা প্রসার পরিষদের সাহিত্যানুষ্ঠান।এই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাসহ আসাম থেকে আগত সাহিত্য প্রেমীরা হাজির হয়েছিলেন তাঁদের সাহিত্য সৃষ্টি নিয়ে।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভক্তগোপাল ভট্টাচার্য, সংস্থার সম্পাদক,কেন্দ্রীয় কমিটি এবং কবি (বালুরঘাট);রাহুল ঘোষ ,সম্পাদক,রাজ্য কমিটি ও কবি (বহরমপুর); অরিন্দম ঘোষ ,সভাপতি, রাজ্য কমিটি ও গল্পকার (মালদা); অনুকূল বিশ্বাস ,সহ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় কমিটি ও গল্পকার(মালদা); সমীর চক্রবর্তী, সম্পাদক, আসাম রাজ্য কমিটি ও কবি (আসাম)।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা প্রসার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ও বিশিষ্ট কবি শ্রী ভক্ত গোপাল ভট্টাচার্য মহাশয়ের উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপর মঞ্চ আলোকিত করেন অনুষ্ঠানের বিশিষ্ট অতিথিরা। অতিথিবরণ ও তাদের সম্বর্ধনা দেওয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানে গতি আসে। অতিথিদের মধ্য থেকে ডঃ শিবাশীষ মুখার্জি ও সংস্থার আসাম রাজ্যের সম্পাদক শ্রী সমীর চক্রবর্তীর মহাশয় স্বাগত ভাষণ দেন। সমীরবাবু আসাম রাজ্যের তরফ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা প্রসার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক শ্রী ভক্তগোপাল ভট্টাচার্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সভাপতি শ্রী অরিন্দম ঘোষ মহাশয়কে সম্বর্ধনা দেন।এরপর একে একে উপস্থিত কবি ও গুণীজনেরা তাদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করতে থাকেন।
কবিতা পাঠ থেকে শুরু করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা সমস্ত সুধীদের প্রত্যেককে সংস্থার পক্ষ থেকে মেমেন্টো দিয়ে সম্মানিত করা হয়।অনুষ্ঠানে মালদার বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী কাকলী বিশ্বাস সংগীত পরিবেশন করেন।
“আজ ,এসেছে যাঁরা গুণীজন তাঁরা
দূর হতে সুদূর ধেয়ে।
হে মান্যবর ,স্বজন, কবিবর
প্রণমি তোমায় দু-বাহু বাড়ায়ে”।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও আসাম থেকে বহু কবি ও গুনীজন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে এদিনের সন্ধ্যাকে তাঁদের সৃষ্ট সাহিত্যে আলোকিত করেছিলেন।সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের স্বাগত জানানো হয়।উপস্থিত কবিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কিষ্টু মুর্মু (দক্ষিণ দিনাজপুর);
বিমল কৃষ্ণ রায়(আলিপুরদুয়ার);ড. শিবাসীস মুখার্জী (কলকাতা); পার্থ বসু(মালদা); মহানন্দ সরকার (আসাম );
সঙ্ঘমিত্রা গোস্বামী (মালদা); পথিকৃৎ সাহা(মালদা); অভিষেক দাস(বালুরঘাট );দেবব্রত মুর্মু (দক্ষিণ দিনাজপুর); ইতি দাস(বালুরঘাট ); আলবিনুস হাঁসদা (দক্ষিণ দিনাজপুর);
ডা. বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ (মালদা); শিপ্রা দেবনাথ(উত্তর দিনাজপুর); সুমি সাহা(মালদা); ফিলিমন মার্ডি (দক্ষিণ দিনাজপুর; আকমাল হোসেন(মালদা); অনির্বাণ চক্রবর্তী (বীরভূম); নয়ন কুমার মন্ডল(মালদা); উৎপল দাস (মালদা); জুমেলী সরকার (মালদা); দিলীপ বিশ্বাস(মালদা); সাঞ্চ খেস(দক্ষিণ দিনাজপুর); হরিদাস কর্মকার (মালদা); মহেশ কাছুয়া( )দক্ষিণ দিনাজপুর পাত্রাস কেরকেটা (গঙ্গারামপুর ); সন্তোষ তিরকী( দক্ষিণ দিনাজপুর ; ভাস্বতী ব্যানার্জী (মালদা);রিমা ভৌমিক(বালুরঘাট) ও শিবম দাস(মালদা।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা প্রসার পরিষদের সাহিত্য পত্রিকার শারদ সংখ্যা ‘উড়ান ‘এদিক প্রকাশিত হয়। সেই সঙ্গে উপস্থিত গুণীজনদের হাত দিয়ে গঙ্গারামপুরের বিশিষ্ট কবি দেবব্রত মুর্মুর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ “হ্যারিকেনের আলো”র মোড়ক এদিন উন্মোচিত হয়। কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের পর কবি দেবব্রত মুর্মু তার মানসকন্যা নিয়ে শ্রোতাদের সামনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
সাহিত্য ব্যতীত অনুষ্ঠানের আকর্ষণের অন্যতম বিষয় ছিল মালদার লোকসংস্কৃতির ধারক ও বাহক গম্ভীরা গান। মালদার অন্যতম গম্ভীরা শিল্পী শ্রী অমর মন্ডল ও তার সহযোগীরা গম্ভীরা গান পরিবেশন করেন। সুদূর আলিপুরদুয়ার থেকে আগত বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী শ্রীমতী শিলা রায়ের সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষিত হয়। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শ্রী অনুকূল বিশ্বাস ও রিমা ভৌমিক।