নিজস্ব প্রতিবেদক :

ফুটবল ভক্তদের কাছে লিওনেল মেসি যেন এক ঈশ্বরের নাম। ডিয়েগো ম্যারাডোনার পর অনেকে তাকেই ফুটবলের জাদুকর বলে ডাকেন। লিওনেল মেসিকে তাই বিশ্বের সেরা ফুটবলার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সেই তারকার আজ ৩৫তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন ফুটবল জাদুকর।

মেসির জন্ম ১৯৮৭ সালের ২৪ জুন রোজারিও শহরে। ছোটখাটো গড়নের বড় জাদুকরের আজকে ৩৫তম জন্মদিন। গত প্রায় ২ দশক ধরে ফুটবল মাঠে একের পর এক অস্বাভাবিক ঘটনার জন্মই দিয়েছেন আর্জেন্টিনার রোজারিও শহরের হোর্হে ও কুচেত্তিনির তৃতীয় সন্তান। নাম তার লিওনেল আন্দ্রেস কুচেত্তিনি। কিন্তু বিশ্ব তাকে চেনে এক নামে সেই নামটি হলো মেসি।

এখন পর্যন্ত রেকর্ড সাতবার ব্যালন ডি অর জিতেছেন মেসি। এর মধ্যে চারটি জিতেছেন টানা চার বছরে। পাশাপাশি রেকর্ড পাঁচবার ইউরোপীয় গোল্ডেন শু ও জিতেছেন। তিনি বর্তমানে আর্জেন্টিনা জাতীয় দল এবং বার্সেলোনার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক ধারাভাষ্যকার, ফুটবল বিশেষজ্ঞ, কোচ এবং খেলোয়াড় মেসিকে বর্তমান সময়ের সেরা এবং সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার হিসেবে গন্য করে থাকেন।

এরই মধ্যে কোপা আমেরিকা দিয়ে জাতীয় দলের শিরোপা খরা কাটিয়েছেন মেসি। জিতেছেন লা ফিনালিসিমা। এবার লক্ষ্য বিশ্বকাপ জেতা। নভেম্বরে কাতারের মঞ্চে যাওয়ার আগের মহড়াও ঠিকঠাকভাবে সেরেছেন।

মেসির ফুটবল ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা ছিলেন প্রেরণা। মেসি যখন প্রথম বার জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন সেই মাঠে উপস্থিত ছিলেন ম্যারাডোনা। কিন্তু এ তারকা হঠাৎ করেই গত বছর মারা যান। তার মৃত্যুতে কষ্ট পেয়েছেন কিং লিও।

২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনালে মারাকানায় জার্মানির কাছে হেরে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এর পর ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে দুই বার কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেও চিলির কাছে হেরে গিয়েছিল মেসির আর্জেন্টিনা। ফিফার দুই টুর্নামেন্টে টানা তিন বার ফাইনাল খেলেও জিততে না পারা মেসি হতাশায় পড়েছিলেন। ২০১৬ সালে মেসি ফুটবল ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু সবার চাপে আবার ফুটবলে ফেরেন। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে ট্রফি জয়ের অভিযানে নেমেও শেষ ষোলোয় ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিদায় নেয় ব্যর্থ মেসির আর্জেন্টিনা। তবে গত বছর আর ভুল করেননি মেসি। ঠিকই দেশকে তিনি এনে দেন কোপা আমেরিকার শিরোপা।

জাতীয় দলের কথা শেষে ক্লাব ফুটবলে ফিরলে মেসির শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আর কারও কোন সন্দেহ থাকার কোন উপায় নেই। লিওনেল মেসি এখানে যেন অদ্বিতীয়। মেসি তার পুরো পেশাদার জীবন পার করেছেন বার্সেলোনায় যেখানে মোট ৩২টি শিরোপা জিতেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৯টি লা লিগা, ৪টি উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লীগ এবং ৬টি কোপা দেল রে। একজন অসাধারণ গোলদাতা হিসেবে মেসির দখলে রয়েছে লা লিগায় সর্বোচ্চ গোল (৪০৮), লা লিগায় এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল (৫০), ইউরোপে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোল (৭৩), এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ গোল (৯১), এল ক্লাসিকোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোল (২৬) এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সর্বোচ্চ হ্যাট্রিকের (৮) রেকর্ড। পাশাপাশি মেসি একজন সৃষ্টিশীল প্লেমেকার হিসেবেও সেরা। তিনি লা লিগা (১৬৩) এবং কোপা আমেরিকার (১১) ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলে সহায়তাকারীর রেকর্ডেরও মালিক।

চলতি বছরেই কাতার বিশ্বকাপ খেলবেন মেসি। আর ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসির বয়স হবে ৩৯। ঐ বয়সে মেসি লম্বা রেসের দৌড়ে কুলিয়ে উঠতে পারবেন, নাকি কাতারেই শেষ হবে মেসির বিশ্বকাপ। এখন এ প্রশ্নই ভক্তদের মনে উঁকি দিচ্ছে। আপাতত কিং লিওয়ের চিন্তায় শুধুই কাতার বিশ্বকাপ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে