নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুষ্প-বৃক্ষে, পত্রপল্লবে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে, নতুন সুরের বার্তা নিয়ে সবুজের সমারোহে এসেছে বর্ষা।
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ বুধবার (১৫ই জুন)। বর্ষা, বাংলা সনের তৃতীয় মাস। এটি বর্ষা মৌসুমে অন্তর্ভুক্ত দুই মাসের প্রথম মাস।
আর নামটি এসেছে পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে।
আষাঢ় ও শ্রাবণ নিয়ে বর্ষাকাল। আর বর্ষা মানেই মেঘ, বৃষ্টি, প্রেম, নতুন প্রাণ, জেগে ওঠার গান। বর্ষায় পুরোনো জঞ্জাল ধুয়েমুছে আমরাও জেগে উঠি প্রাণচাঞ্চল্যে। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষ যখন পুড়ে তখন বর্ষার ঝুম ঝুম বৃষ্টির বরণডালা প্রশান্তি এনে দেয় মানুষের মনে। বর্ষার সতেজ বাতাসে কদম, জুঁই, কামিনি, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরো কত ফুলের সুবাস। উপচে পড়া পদ্মপুকুর রঙিন হয়ে ফোঁটে বর্ষাকে পাওয়ার জন্য। কেয়ার বনেও কেতকীর মাতামাতি।
বর্ষা যেমন আনন্দের, তেমনি হঠাৎ বিষাদে ভরিয়ে তোলে জীবন। তবুও বর্ষা বাঙালির জীবনে নতুনের আবাহন। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলীর আস্তরণে আনে জীবনেরই বারতা। সুজলা, সুফলা, শস্য শ্যামলা বাঙলা মায়ের নবজন্ম এই বর্ষাতেই। আষাঢ় বর্ষার যে সুর নিয়ে এলো সেই সুন্দর আনন্দময় হয়ে থাক, জানাই স্বাগত।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘বর্ষা-মঙ্গল’ কাব্যে লাবণ্যস্নিগ্ধ রূপবতী বর্ষাকালকে নিয়ে লিখেছেন, ‘ওগো সন্ন্যাসী, কী গান ঘনাল মনে।/গুরু গুরু গুরু নাচের ডমরু/বাজিল ক্ষণে ক্ষণে।/তোমার ললাটে জটিল জটার ভার/নেমে নেমে আজি পড়িছে বারম্বার/বাদল আঁধার মাতাল তোমার হিয়া,/বাঁকা বিদ্যুৎ চোখে উঠে চমকিয়া।’
বর্ষার বন্দনায় কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন, ‘গ্রীষ্ম চলিল, বর্ষা আসিল, আষাঢ়ে নামিল ঢল;/বুনো পাখি সব ডাকে অবিরল : ‘বাওয়া ক্ষেত কর তল।’/এই তো কখন নেমেছে বৃষ্টি, অবিরাম তবু ঝরছে;/না পেয়ে উপায় রাখালের দল ভিজে ভিজে বাড়ি ফিরছে।’