আজ শনিবার কাতারের রাজধানী দোহায় আফগান সরকার ও তালেবানদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে এ বৈঠকে যোগ দেবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ কথা জানিয়েছিলেন। ছয় জন তালেবান বন্দিকে নিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আলোচনা হয়েছে তালেবান এবং আফগান প্রতিনিধিদের মধ্যে। তাদের নিয়ে কী করা হবে তা নিয়ে দ্বিমত থাকায় বৈঠকে বসতে পারছিল না দুই পক্ষ। খবর ডয়চে ভেলে’র।
কাতারের প্রশাসন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুই পক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় যে- ঐ ছয় বন্দিকে কাতারে নিয়ে আসা হবে। সে অনুযায়ী শুক্রবার তাদের নিয়েও আসা হয়েছে। আপাতত কাতারের জেলেই বন্দি থাকবেন তারা। বৈঠকের পর তাদের নিয়ে কী করা হবে সেই সিদ্ধান্ত হবে। বস্তুত এই বন্দি বিনিময়ের জন্যই এতদিন ধরে বৈঠক স্থগিত ছিল। গত মার্চ মাসে আফগান সরকারের সঙ্গে তালেবানের বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু পাঁচ হাজার তালেবান এবং এক হাজার আফগান সেনাকে ছাড়ার ব্যাপারে দুই পক্ষ সম্মত হতে পারছিল না। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক চাপও ছিল।
অস্ট্রেলিয়া এবং ফরাসি প্রশাসন কয়েকজন তালেবান বন্দির মুক্তির বিরোধিতা করেছিল। কারণ তাদের হাতে অস্ট্রেলীয় এবং ফরাসি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। জটিলতা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত তার মধ্য থেকেও বেশ কিছু তালেবান জঙ্গিকে ছেড়ে দেয় আফগান প্রসাসন। কিন্তু ছয় বন্দিকে নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
বিশেষজ্ঞদের বলছেন, শনিবার থেকে যে বৈঠক শুরু হবে, তার প্রধান বিষয়বস্তু হবে শান্তি প্রস্তাব। দীর্ঘদিন ধরে তালেবানের সঙ্গে আফগান প্রশাসন এবং মিত্র বাহিনীর যে লড়াই চলছে, তার অবসান বৈঠকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ ছাড়াও ঐক্যবদ্ধভাবে কিভাবে নতুন আফগানিস্তান গড়ে তোলা যায় তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে। তালেবান প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বৈঠক নিয়ে তারা আশাবাদী। ইসলামের নিয়ম নীতি মেনে কী ভাবে নতুন আফগানিস্তান তৈরি করা যায় তা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলতে তারা আগ্রহী।
আফগান প্রশাসনের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারাও আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে আগ্রহী। সে কারণেই তালেবানের সঙ্গে বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে সমস্ত গোষ্ঠীর মানুষকে প্রশাসনে নিয়ে আসা যায় তা নিয়ে আলোচনা হবে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের ঐতিহাসিক বৈঠক হয়েছিল। তারপর ট্রাম্প সরকার ঘোষণা করেছিল আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তবে আফগানিস্তানে শান্তি বজায় থাকাও জরুরি। আফগান প্রশাসনের সঙ্গে তালেবানের বৈঠকের খবর পেয়েই ট্রাম্প জানিয়েছেন, মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। সেনা সরানোর প্রক্রিয়া কী ভাবে হবে সে বিষয়ে অ্যামেরিকার বক্তব্য জানাবেন তিনি।
বিশেষজ্ঞদের বলছেন, এই বৈঠক ফলপ্রসূ হলে তা ঐতিহাসিক ঘটনা হবে। কয়েক দশকের যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ফের শান্তির বাতাবরণ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই।