প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু তাতে হাল না ছেড়ে আজ শনিবার ফের হাথরাসে যাচ্ছেন কংগ্রেসের রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের সরকারের উপর চাপ বজায় রাখতে শনিবার বিকেলে ফের হাথরসে নির্যাতিতার বাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার সেখানে যাওয়ার পথে তাদের আটকে দেয় রাজ্য পুলিশ। এ সময় তাদের গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে সে দিনই উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতিকে ‘গৃহবন্দি’ করা হয়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা’র।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার উত্তর প্রদেশের হাথরসের বুলা গড়হি গ্রামে নির্যাতিতার বাড়ি যাওয়ার পথে দেশের প্রচলিত আইনে একটি ধারা ভাঙ্গার অভিযোগ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। সে দিন কোন সংবাদ মাধ্যমকেই ঐ গ্রামে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ জানিয়েছিল, বিশেষ তদন্তকারী দল’র (সিট) তদন্ত শেষ না-হওয়া পর্যন্ত গ্রামে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশ নিষেধ।
হাথরসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রকাশ কুমার বলেছিলেন, বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাইরের কোনও ব্যক্তি বা রাজনৈতিক প্রতিনিধিকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
এদিকে কংগ্রেস দলের অফিসিয়াল টুইটে বলা হয়, উত্তরপ্রদেশে দলের সভাপতি অজয় কুমার লাল্লুকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। রাহুলের সঙ্গে ৪৫ থেকে ৫০ জন প্রতিনিধি যোগ দিতে পারেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার হাসরথে যাওয়ার পথে আটকে দেওয়া হয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধিদলকেও। পুলিশের ধাক্কায় মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি অভিযোগ করেন, তার সহকর্মী সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলের শ্লীলতাহানি করেছে পুলিশ। ঐ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে কলকাতায় পদযাত্রা করছেন তৃণমূলের সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৃহস্পতিবার রাহুলসহ কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলকে কার্যত গলাধাক্কা দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। ১৪৪ ধারা ভাঙার অভিযোগে প্রাথমিকভাবে রাহুলদের আটকও (প্রথমে বলা হয়েছিল রাহুলদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু পরে জানা য়ায়, তাদের আটক করেছিল পুলিশ) করা হয়। রাহুলের সফর নিয়ে বিজেপিতেও আলোড়ন উঠেছিল। রাহুল-প্রিয়াঙ্কা ‘রাজনৈতিক দ্বিচারিতা’ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা রবি শঙ্কর প্রসাদ।
উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে এক দলিত তরুণীকে চার উচ্চবর্ণের ব্যক্তি ধর্ষণ করে। গত মঙ্গলবার দিল্লির হাসপাতালে ২০ বছরের ঐ তরুণী মারা যান। পুলিশ রাতে তার দেহ সৎকার করে। নিহতের পরিবারের দাবি, তারা দলিত হওয়ার জন্যই পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেরি করেছিল। ধর্ষণের পরে তরুণীর ওপরে বীভৎস অত্যাচার করে অপরাধীরা। পুলিশ জানায়, তরুণীর জিভেও ক্ষত ছিল। চার অপরাধী যখন তাকে গলা টিপে মারার চেষ্টা করছিল, তখন তিনি নিজের জিভ কামড়ে ফেলেন। অভিযোগ রয়েছে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জোর করে তার দেহ আত্মীয়দের থেকে কেড়ে নিয়ে যায়। পরিবারকে বাড়িতে আটকে রাখা হয়। কয়েকজন পুলিশকর্মী মিলে রাত আড়াইটায় তরুণীর দেহ পুড়িয়ে দেন।